ফ্রান্সিস পাউরিয়া আর ফুলমনির পরিবার আমাদের উদাহরণ

রাজশাহী থেকে রিনা টুডু
নারী ও পুরুষের সমন্বয় আর সহযোগিতা থাকলে পরিবারের উন্নতি হয়। পরিবারের নারী ও পুরুষের মধ্যে মিল আর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে সেই পরিবারের যে উন্নত হয়, তার দৃষ্টান্ত তানোর উপজেলার মন্ডুমালা পৌরসভার আদিবাসী মাহালি পাড়ার ফ্রান্সিস পাউরিয়া ও ফুলমনি দম্পতির পরিবার।


তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। নিজের বলতে কোন জমি জমা ছিলোনা। তাদের বাড়িটি অন্যের জায়গায় তুলেছেন। কিন্তু ফুল মনি আর ফ্রান্সিস পাউরিয়ার পরিশ্রমের কারণে তাদের সংসার এখন অনেকটায় ভালো চলছে। তাঁরা দুজন মিলে মানুষের জমিতে কাজ করেন, দুজন মিলেই সংসারের ঘানিটা টানেন। পরের জমিতে কাজ করার পর তারা চালা, ডালা ও কুলা তৈরি করেন বাঁশ ও বেত থেকে। পাশাপাশি একটি দেশি গাভী পালন শুরু করেন। একটি গরু থেকে এখন কয়েক বছরের মধ্যে আরো তিনটি গরুর জন্ম হয়েছে।


গরু বড় হলে দুটি গরু বিক্রি করে দিয়ে তিন শতক জায়গা কিনেন নিজের গ্রামে নিজের বাড়ি করার জন্য। তাঁরা এখন নিজের জায়গাতেই বাড়ি করেছেন। তিন শতক জায়গার মধ্যে প্রায় দেড় শতক জায়গায় ঘর তৈরি করেন। বাকি জায়গাটুকুতে শাকসবজির চাষ করে আয় করেন। এ শাকসবজি তারা জৈব পদ্ধতিতে চাষ করেন। ফলশ্রæতিতে কোন রাসায়নিক সার আর কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। জৈব পদ্ধেিততে চাষ করায় তাঁর বাড়ির সবজির চাহিদাও বেশি। প্রতিমাসের এখন নিজের পরিবারের নিরাপদ শাকসবজির যোগান দেবার পর উদ্বৃত্ত¡ বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করছেন। তাদের এ উদ্যোগ দেখে বারসিক তাদের বাড়িটিকে একটি শতবাড়ি হিসেবে নির্বাচন করে। এ শতবাড়ির মাধ্যমে বারসিক’র তরফ থেকে নানা ধরনের সহযোগিতা করা হয় তাদেরকে যাতে করে ভালোমত উৎপাদন করতে পারেন। এভাবে তাদেঁর বাড়িটি নিরাপদ পুষ্টি বাড়ি হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বারসিক তাদেরকে বীজ এবং কাড়িগড়ি সহায়তা দিয়ে তাঁর নিজের অদম্য ইচ্ছাকে আরো এগিয়ে দিচ্ছে।


তাদের পুষ্টি বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের সবজি আছে, যেমন বেগুন চাল কুমড়া, পুই, কলাগাছ, সীম, লালশাক, মরিচ প্রভৃতি। এ সবজি দিয়ে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশিদের মাঝেও বিরতণ করেন। এভাবে প্রতিবেশিদের সাথেও একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয় তাদের।

happy wheels 2

Comments