সাম্প্রতিক পোস্ট

আসুন কৃষকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিই

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে পংকজ পাল

“জলবায়ু বদলাচ্ছে, খাদ্য ও কৃষিকেও বদলাতে হবে” স্লোগানকে সামনে রেখে সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে ঘিওর পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আলোচনা সভা, কৃষকদের কৃতজ্ঞতা স্মারক প্রদান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশ ও প্রকৃতিকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে কৃষকদের অবদানকে স্বীকৃতি জানানোর আহ্বান জানান।

14686632_561601684039487_2107927318_n

বক্তারা জানান, কৃষকরা কষ্ট করে, রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের খাদ্য যোগান দিচ্ছেন। যারা দেশের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের কথা কদাচিৎ স্মরণ করা হয়। অনেক কৃষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অনেকে আবার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ধলে পড়েছেন। দেশের নাগরিক হিসেবে তাদের ন্যুনতম সেবা ও পরিষেবা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি অনেকগুলো সেবা ও পরিষেবা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন রয়েছে কিন্তু সেখানে অনেক কৃষকের প্রবেশাধিকার নেই। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদেরকে রক্ষা করার কোন উদ্যোগ নেই! এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আজহারুল ইসলাম আরজু বলেন- “কৃষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল উৎপাদন করে দেশের মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দেয়, কিন্তু সেই কৃষক শেষ বয়সে এসে অবহেলার শিকার হয়, তাদের মুখে খাদ্যে জোটেনা, তাদের কথা কেউ চিন্তা করে না। তাই আমরা কৃষকের জন্য পেনশনের জোর দাবি জানাচ্ছি।” ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বলেন, “কৃষকেরাই আমাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখেছে। তাই আমাদের উচিত নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য কৃষকদেরকে বাঁচিয়ে রাখা ও তাদের যোগ্য সম্মান দেয়া।” এই কথা জানান, কৃষিবিদ আশরাফউজ্জামান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে খাদ্য দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষুধা ও দারিদ্রকে মোকাবেলা করার অঙ্গীকার করেছে। তাই কৃষকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।” বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন- “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের কৃষি খাতের যে পরিবর্তন হচ্ছে তা আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। এই যুদ্ধের মূল যোদ্ধা হচ্ছেন কৃষক। কৃষকেরাই সুরক্ষিত রাখবে দেশের কৃষি ও খাদ্যের ভবিষ্যৎ।”

উক্ত অনুষ্ঠানে ১০ জন কৃষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। কৃষকদের অবদানকে স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বীকৃতি পেয়ে কৃষকরা আরও নতুন উদ্যমে তাদের কাজগুলো করে যাবেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাবেন। এ ধরনের স্বীকৃতি পেলে এবং সর্বোপরি সরকার থেকে কোন ধরনের স্বীকৃতি পেলে কৃষকরা আনন্দিত হবে। আর কৃষকরা যদি উৎফুল্ল হয়, খুশি থাকে তাহলে দেশের সব শ্রেণীর মানুষের জন্যই যে মঙ্গলজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

happy wheels 2