আমাদের এ জীবন বৃক্ষেরই দান
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
দেশের বায়, দেশের মাটি গাছ লাগিয়ে করবো খাটি। নিজের গাছ লাগিয়ে আমি যত্ন করবো নিজেই।’ এ ধরনের স্লোগানে আলোকে গত ২৩ জূলাই কাস্তা বারোওয়ারি কৃষক কৃষাণি সংগঠনের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছ। বৃক্ষ রোপণ উপলক্ষে আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি ভানু রায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দ্বীনুবন্ধু রায়। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ কৃষক আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা বেগম, কৃষক আব্দুল খালেক, প্রদীপ সরকার, আব্দুল হালিম, কৃষাণী আমেনা বেগম, বারসিক কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এবং শারমিন আক্তার প্রমূখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দ্বীনু বন্ধু রায় বলেন, ‘পরিবেশ ভালো থাকলে ভালো থাকবো আমরা। গাছ কখনোই মানুষের ক্ষতি করে না। আমাদের এ জীবন বৃক্ষেরই দান। আমরা বনজ গাছ থেকে কাঠ, ফলজ গাছ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা এবং ওষুধি গাছ থেকে বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা করে থাকি। কাজেই গাছকে আমাদের সন্তানের তুলনা করা যায়।’
আলোচনায় কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘গাছ যেমন মানুষের জীবন বাচাঁয় তেমনি গাছ কৃষকেরও বন্ধু। গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য আবহাওয়ার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কৃষক সময় মত ফসল চাষ করেও ভালো ফলন পায় না। গাছপালা বেশি থাকলে প্রয়োজনীয় সময় বৃষ্টি হতো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।’ মর্জিনা বেগম বলেন, ‘গাছপালা কমে যাওয়া, তাল, খেজুর দেবদারু এ ধরনের বড় গাছ কেটে ফেলার কারণে ঘন ঘন বজ্রপাত হচ্ছে এবং অনেক মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে।’ আব্দুল হালিম বলেন, ‘গাছ শুধু মানুষের উপকারেই আসে না গাছে পাখি বাসা বাঁধে। ফল খেয়ে পাখি বেঁচে থাকে এবং বিভিন্ন ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে কৃষকের উপকার করে। রাসায়নিক বিষ দিয়ে পোকা মাড়তে হয় না। এতে পরিবেশ ভালো থাকে।’
শুরুতেই বারসিক কর্মকর্তা গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি ঘর নির্মাণ ও বিনা প্রয়োজনে গাছ নিধন করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছি। কিন্তুু আমাদের জীবনের জন্য গাছের প্রয়োজন। গাছ যদি না থাকে আমদের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকি। পরিবেশ ঠিক রাখতে হলে সকলেই নিজ দায়িত্বে গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যেন নতুন প্রজন্ম গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।’
আলোচনা শেষে বরুন্ডি থেকে বাংগালা দুই কিলোমিটার রাস্তায় ১০ কেজি খেজুর বীজ ও কাস্তা মন্দির প্রাঙ্গনে একটি পাইকড় গাছের চারা রোপণ করা হয়। সেই সাথে ৭০ জন নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০০টি ফলজ বনজ, ওষুধি বৃক্ষ বিতরণ করা হয়।