তরুণশক্তিই পারে সামাজিক ন্যায্যতা ও সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টি করতে
মানিকগঞ্জ থেকে আছিয়া ও ইস্মিতা আক্তার
গ্রামীণ বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির দীর্ঘদিনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে কোটি কোটি বাঙালি হৃদয়ে ও দুনিয়ার শান্তিকমী মানুষের নজর কেড়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের অনুষ্ঠানমালায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সহযোগী সংগঠন, স্থানীয়ভাবে সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনগুলো তাদের নিজস্ব উদ্দীপনায় পালন করে আসছে।
সমাজে সাংস্কৃতিক চর্চাগুলো আরো বেগবান ও নারী-পুরুষের সামাজিক ন্যায্যতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহযোগিতায় মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বিনোদপুর নয়াপাড়া তরুণ সংঘ ও চারাভাঙ্গা ধলেশ্বরী যুব সংঘের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ ১৪২৬ এর প্রথম প্রহরে মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও শাকপান্তা আয়োজিত হয়। বিকেলে গ্রামীণ খেলাধুলা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় নয়াপাড়া তরুণ সংঘ ও ধলেশ্বরী যুব সংঘের সমন্বয়কারি রাজিউদ্দিন সজল ও মো. হৃদয় হোসেনের সভাপতিত্বে ও হারিজ উদ্দিন শিপু ও মো. জনি মোল্লার সঞ্চালনায় বৈশাখী মিলন মেলার তাৎপর্য ও সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার ও সাংস্কৃতিক টিমের সমন্বয়কারি মো. মাসুদুর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিংগাইর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান পারভিন আক্তার, বায়রা ইউপি সদস্য নাসরিন আক্তার, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আব্দুল খালেক, মো. আজাদ খান, বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বারসিক মাঠ সহায়ক আছিয়া আক্তার, ইস্মিতা আক্তার ও উভয় সংগঠনের শতাধিক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, তরুণরা নিজস্ব উদ্যোগে স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে গ্রামীণ পরিবেশে বিনোদপুর নয়াপাড়া তরুণ সংঘ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে ঢাকা-সিংগাইর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে বিনোদপুর ঋষিপাড়ায় বটতলায় এসে শাকপান্তার আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। চারাভাঙ্গা ধলেশ্বরী নদীর পার থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে চারাভাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড হয়ে স্বরুপপুর এসে সমাপ্তি হয়। তারপর বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সংগঠনের উদ্যমী এই যুবকরা প্রত্যয় করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ও মুসলিমসহ সকল ধর্মালম্বী মানুষের হৃদয়ে বৈশাখের মিলন মেলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা বিশাল জায়গা দখল করে আছে দীর্ঘদিন ধরে। তারা এই চর্চাকে আরো বেগবান করতে চান। তারা বিশ্বাস করেন এই চর্চাই পারবে আগামী দিনের নারী-পুরুষের সামাজিক ন্যায্যতাভিত্তিক একটি বহুত্ববাদি সমাজ বিনির্মাণ করার।