দিন বদলের চেষ্টাই হোক নতুন ভোরের প্রত্যাশা
মানিকগঞ্জ থেকে গাজী শাহাদাত হোসেন ও শ্যাময়েল হাসদা
উৎসবপ্রিয় বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ মানুষের সংকীর্ণতা দূর করে হৃদয় বড় করে। পহেলা বৈশাখে মানুষের মাঝে সব ভেদাভেদ দূর হয়ে যায়। পুরাতন ভুল-ভ্রান্তি ভুলে সামনের দিকে এগুনোর এক অজানা শক্তি এক অজানা সাহস। তাই নতুনের প্রত্যাশায় মানিকগঞ্জ জেলা সদর বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের বেতিলা চর নতুন পাড়া গ্রামে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বেতিলা চর নতুন পাড়ার শিক্ষার্থী ও যুব সম্প্রদায়ের আয়োজনে এবং বারসিক‘র সহযোগিতায় গ্রামীণ খেলাধুলা, নাটক ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা অনুষ্ঠিথ হয়। নারীদের চোখ বেঁধে পাতিল ভাঙা, থালা মাথায় দৌড়, বালিশ খেলা, আটার নীচে গুপ্তধন, ছোট মেয়েদের দৌড় এবং পুরুষদের চোখ বেঁধে পাতিল ভাঙা তৈলাক্ত কলাগাছে ওঠা, আঠার নীচে গুপ্তধন, দীর্ঘলম্ফ, কোমড়ে রশি বেঁধে টানাটানি ও ছোট ছেলেদের ১০০মি. দৌড় ইত্যাদি জাতীয় খেলাধুলা আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে। খেলাধুলার পর শিক্ষার্থীরা ‘আমিও বাঙালি’ নাটক পদর্শন করে।
প্যানেল চেয়ারম্যান-১ রফিকুল ইসলাম নখিল বলেন, ‘আজ পহেল বৈশাখ এ দিনে আমারা আমাদের সংস্কৃতি জীবনযাত্রা তুলে ধরি। অতীতের সমস্ত দুঃখ ভূলে নতুন আলোয় জীবন শুরু করি।’ এ্যাডভোকেট ফারুখ আহমেদ ফিলিপ বলেন, ‘আমাদের অতীতের সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলে যেতে হবে। সকলে এক সাথে কাজ করতে হবে। যেখানে কোন জাতি ভেদাভেদ থাকবে না। আমাদের গ্রামের উন্নয়নের জন্য সকলে মিলে কাজ করতে হবে।’ এমন সুন্দর আয়োজন করার জন্য তিনি ছাত্র যুব সম্প্রদায় ও বারসিককে ধন্যবাদ জানান।
এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘একটি বাগানে যেমন শুধু গোলাপ বা চ্যামেলী ফুল থাকলে বাগান সুন্দর হয় না। বাগানে অনেক রকমের ফুল থাকলে অনেক সুন্দর লাগে, বাগানের সৌন্দর্য্য বাড়ে। তেমনি আমাদের বাংলাদেশ হচ্ছে একটি সুন্দর বাগান। এখানে সকল মানুষ (মুসলমান, হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান) থাকবে, সকল পেশার লোক থাকবে। এখানে জেলে,তাতি, কামার, কুমার, কৃষক সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে চলতে হবে। আমাদের নতুন দিনগুলো সকলে মিলে রাঙাতে হবে।
আলোচনা সভার শুরুতে বারসিক‘র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ আমাদের প্রাণের উৎসব। আমরা এই দিনে সকলে একত্রিত হয় আনন্দ করি। বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করি। ভালো পোশাক পড়ি, আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত করি। ঢাকডোল সানাই বাজতে বাজাতে নতুন আগামীকে স্বাগত জানাই। আমরা আমাদের শিল্প-সংস্কৃতিকে নতুন করে স্মরণ করি।’
আলোচনা শেষে সকল বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সংস্কৃতি, বাংলার মানুষের কথা বলে। বৈশাখ বাঙালির জীবনযাপনে, ভাষায়, উৎসব-পার্বণে, নারীর লাল-সাদা শাড়ির রঙিন আল্পনায় আগামী দিনের স্বপ্ন দেখা। আসুন আমরা পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে বাংলার শিল্প-সংস্কৃতিকে রক্ষা করি।