প্রতিটি অভিজ্ঞতাই নতুন কিছু শেখায়
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান ও মাসুদুর রহমান
কৃষিনির্ভর বাংলদেশে কৃষক কৃষক জ্ঞান বিনিময় কৃষকের মধ্যেই প্রতনিয়তই দেখা যায়। আর এই জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমেই কৃষির নানা ধরনের সমস্যা সমাধান করে থাকেন কৃষকগণ। কৃষকের এই ভিন্ন ভিন্ন জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই কৃষক ও কৃষি হয়েছে সমৃদ্ধ।
কৃষক কৃষক জ্ঞান বিনিময়ের এই ধারা চলমান রাখতে বারসিক সম্প্রতি সিংগাইর, হরিরামপুর, ঘিওর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষক গবেষক দলের অংশগ্রহণে ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নের শোলকুড়া গ্রামের কৃষি গবেষক মো. মাসুদ বিশ্বাসের ‘এসআরআই’ পদ্ধতিতে ধান চাষ ও সমন্বতি খামার ব্যবস্থাপনার উপর অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরের আয়োজনের উদ্যোগ নেয়।
কৃষক গবেষক দলের সদস্যদের সাথে কৃষি গবেষক মাসুদুর রহমানের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি গবেষক মাসুদুর বিশ্বাস তার উদ্যোগ সম্পর্কে কৃষক গবেষক দলকে অবহিত করেন এবং নিজ উদ্যোগসমূহ, দেশীয় পদ্ধতিতে মুরগির বাচ্চা ফোটানোর কৌশল, ৪৫ ধরনের বৃক্ষ নিয়ে ওষুধি বাগান, এসআরআই পদ্ধতি ধান চাষ, অল্প সময়ে ভুট্টা দিয়ে গরুর খাবার তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন।
মাঠ পরিদর্শন শেষে বারসিক প্রোগাম অফিসার মাসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় উপজেলা কৃষি উন্ন্য়ন সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. বাবর আলীর সভাপতিতে ¡ অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পর্যালোচনা বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বারসিক আঞ্চলিক সমন্বযকারী বিমল রায় এ অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘কৃষক থেকে কৃষকের জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমেই কৃষির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান হতে পারে। একজন কৃষকের ভালো উদ্যোগ থেকে একজন নতুন উদ্যোগই কৃষক তৈরি হবে যিনি প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারেন।
কৃষি গবেষক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমি বোরো মৌসুমে একটি করে চারা দিয়ে লাইন করে ৮ ইঞ্চি দূরুত্ব বজায় রেখে ১০ লাইন পর আবার ১ ফুট দূরুত্ব দিয়ে ধান চাষ করেছি, যা গ্রামের অন্য কৃষকগণ করেনি। আমার এই চাষ অন্য কৃষকের চেয়ে একটু আলাদা। এই পদ্ধতিতে জমিতে আলো বাতাস পর্যাপ্ত থাকে। পোকা মাকড়ের আক্রমণ হয় ন এবংা উৎপাদন খরচ কম হয়।’ উপ সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘মাসুদ বিশ্বাস একজন উদ্যামী কৃষক। তিনি যখনই নতুন কিছু দেখেন তা তিনি নিজেই করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’
অভিজ্ঞতা বিনিমিয় সফরে অংশগ্রহণকারী আব্দুল খালেক, শহীদ বিশ্বাস,আলেয়া বেগম, ইব্রাহিম মিয়া, ফরহাদ হোসেন, মনোয়ার হোসেন, সেন্টু মিয়া, প্রদীপ মন্ডল অনুভূতি ব্যক্ত করে জানান, প্রতিটি অভিজ্ঞতাই নতুন কিছু শিখায়। মাসুদ বিশ্বাসের এই কাজটিকে তাঁরা যদি প্রত্যেকই সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেন তাহলে তাদের এই অভিজ্ঞতা সফরের স্বার্থক হবে।