বিনা চাষে পেঁয়াজ রোপণ

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার

পেয়াঁজ আর্দ্র জলবায়ুতে ভালো জন্মে। ঘিওর উপজেলার সনাতন পদ্ধতিতে পেয়াজঁ চাষ চলে আসছে। ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়ন নীচু এলাকা হওয়ায় দীর্ঘদিন বর্ষার পানি থাকে কৃষকদের জমিতে ফসল ফলাতে দেরি হয়। তাই চলতি বছরে বারসিক’র সহযোগিতায় বর্ষার পানি চলে যাবার পর পরই কেল্লাই গ্রামের মো, রউফ মিয়া ও গাংডুবী গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (রফিক) পরীক্ষামূলক বিনা চাষে কাদার ভিতর সাগা পেয়াঁজ রোপণ করেন। এই পদ্ধতিতে কোন চাষের দরকার হয় না, জমিতে পানি থাকে না। তবে জমি ভিজা থাকবে। পেয়াঁজ রোপণের পর জমি খড় দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এভাবেই তাঁরা সম্প্রতি পেয়াঁজ রোপণ করেছেন। পেয়াজ রোপণের আগে জমিতে খৈইল ব্যাবহার করেন।

কেল্লাই গ্রামের কৃষক মো. রউফ মিয়া (৫৮) তাঁর পেয়াঁজ ক্ষেতে সঠিক পরির্চচা করেন, ধীরে ধীরে পেয়াঁজ গাছে পেঁয়াজ বড় হতে থাকে। তা দেখে নিজে মনে করেন এ পদ্ধতিতে পেয়াঁজ চাষ করলে কৃষকের খরচ কম হবে এবং ফলনও বেশি হচ্ছে। তার জমিতে প্রতিদিন কোন কোন কৃষক দেখে যাচ্ছে এবং এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন অনেকে।

পেয়াঁজ উত্তোলনের দিন বারসিক’র সহযোগিতায়জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ রওশন আলমকে নিয়ে পেয়াঁজ উত্তোলনের মাঠ দিবস পালন করার মাধ্যমে এলাকার আরো কিছু কৃষকদের পেয়াঁজের ফলন দেখতে আসেন। কৃষক মো. রউফ মিয়ার সাফল্য দেখে কেল্লাই গ্রামের কৃষক আজাদ মিয়া আগামী মৌসুমে ৩০ শতাংশ জমিতে এ পদ্ধতিতে পেয়াঁজ রোপণ করার কথা উল্লেখ করেন। কৃষক বাসারও এই পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষের কথা জানান। নালী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রউফ মিয়া আগামীতে পেয়াঁজ ও রসুন চাষ করবেন বলে জানান।

কৃষক গবেষক ফোরামের সদস্য প্রফুল্ল কুমার মন্ডল পেঁয়াজ বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আবাদে মাত্র ২ মাস ১৫ দিনে পেঁয়াজ উত্তোলন করা যায়। আর সনাতন পদ্ধতিতে পেয়াঁজ আসতে ৩ মাসের বেশি সময় লেগে যায়। তখন পেয়াঁজের দাম কমে যায়। আমরা যদি আগাম পেয়াঁজ ঘরে তুলতে পারি তাহলে দাম ও বেশি পাব। তাই আমিও আগামীতে বিনা চাষে কাদায় পেঁয়াজ রোপণ করবো। পেয়াঁজ ঢেকে দেবার জন্য কচুরিপানা শুকিয়ে রাখবো।’


কৃষিবিদ রওশন আলম কাদায় পেঁয়াজ রোপণের ক্ষেত ঘুরে দেখেন এবং কৃষকদের নানামূখী পরামর্শ দেন। এ সময় এলাকার কৃষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বারসিক’র মাসুদুর রহমান ও সুবীর সরকার উপস্থিত ছিলেন।

happy wheels 2

Comments