শুধু মানুষ নয় সকল প্রাণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে মো. শহিদুল ইসলাম
‘যে ভুখন্ডে,অঞ্চলে এবং বিশে^ আমরা বসবাস করছি, সেখানে রয়েছে লাখো লাখো, কোটি কোটি প্রাণের বৈচিত্র্য। মানুষ এ সকল প্রাণের উপরই নির্ভরশীল। তাঁর জীবন জীবিকা এ সকল প্রাণ কে ঘিরেই। মানুষের সকল খাদ্যের উৎস ও বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল এ সকল প্রাণবৈচিত্র্য। এসকল প্রাণের বৈচিত্র্য না থাকলে মানুষই হুমকির মধ্যে পড়বে।’
বারসিক’র আয়োজনে গতকাল অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী ‘জলবায়ু ন্যায্যতা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেরায় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বিষয়ক অনলাইন কর্মশালার প্রথম ও উদ্বোধনী দিনে উক্ত কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. বিধান চন্দ্র দাস।
কর্মশালায় রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উন্নয়ন কর্মী, তরুণ ও কৃষকসহ নানা পেশাজীবীর ৩০ জন মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষসহ অন্যান্য সকল প্রাণের যে সংকট তৈরি হচ্ছে দিনে দিনে সে দিকগুলো তুলে ধরা হয়। একই সাথে মানুষের নানামূখী কর্মকান্ডের কারণে কিভাবে আমাদের প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং এর ফলে আমাদের করণীয় দিকগুলোও তুলে ধরা হয়।
মানুষের অভিজাত জীবনযাপন এবং নানামূখী কর্মকান্ডের মসাধ্যমে যেমন বৃক্ষ লতকাপাতা কমে যাচ্ছে, তেমিন জলবায়ু পরিবর্তনকে আরো বেগবান করছে। এর ফলে বিভিন্ন অণুজীবসহ প্রাণবৈচিত্র্য আরো ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। অন্যদিকে মানুষের নিরাপদ খাদ্য সংস্থানের অভাব সহ রোগবালাইও বেড়ে যাচ্ছে।
বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে একদিকে যেমন বিশে^র বিভিন্ন দেশে দুর্যোগ বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি এই জলবআয়ু পরিবর্তনের আঞ্চলিক অভিঘাত বিভিন্ন কমিউনিটি এবং সম্প্রদায়ের ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যও কমে যাচ্ছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় যেমন একটি দেশের জাতীয় পরিকবল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হয়, তেমনি আঞ্চলিক সংকট এবং সম্ভাবনার দিকগুলো আরো বেশি জোরদার করার কথা বলেন অংশগ্রহণকারীগণ। আঞ্চলিকভাবে প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় গবেষণাগার স্থাপনসহ নানা বৈচিত্র্য সুরক্ষা করা দরকার। কারন বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। যেগুলো সেই অঞ্চলের মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণের বাঁচার জন্য শৃঙ্খল হিসেবে কাজ করে। তাই আঞ্চলিকভাবে বৈচিত্র্য সুরক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানা কর্মসূচি হিসেবে যেসকল বরাদ্দ আসে সেগুলো আরো জনমূখী করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অংশগ্রহণকারীগণ। একই সাথে জনগোষ্ঠীর চাহিদা এবং তাদের মতামত নিয়ে কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করলে আঞ্চলিক বৈচিত্র্য ও চাহিদাগুলো পুরণ করা সম্ভব।
কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে সেশন পরিচালনা করেন কৃষিবিদ এবি এম তৈৗহিদুল আলম. নৃবিজ্ঞানী সৈয়দ আলী বিশ্বাস। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন বারিসকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম।