সচেতন হলে সমতা বাড়ে
রাজশাহী থেকে আয়েশা তাবাসুম
বারসিক ও যোগিশো নারী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি সংগঠনটির মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমন্বয় সভার মূল আলোচনার বিষয় ছিলো ‘নারী ও পুরুষের সমতা’।
আলোচনায় বক্তারা জানান, পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় কাজের মজুরি কম পেয়ে থাকে। অথচ তারা লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে একজন নারীর সংসারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত বা তাদের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়না। সামাজিকভাবে কোন সমাজসেবামূলক কাজে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ একেবারেই সংকীর্ণ। নারী ও পুরুষের সামাজিক বৈষম্যের কারণে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরা তাদের ছেলে সন্তানদের নিজেদের বৃদ্ধ বয়সের ভরসা ভেবে থাকে। এ কারণে তাদের ছেলে সন্তান পরিবারে বেশি গুরুত্ব পায়।
আলোচনায় যোগিশো নারী সংগঠনের সভাপতি পারুল আক্তার (৪৫) বলেন, ‘আমরা নারীরা সংগঠন করার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি, পরিবারের বা সমাজের উন্নয়নে আমাদেরও অনেক ভূমিকা আছে। তাহলে কেন আমাদের মূল্যায়ন করা হবে না?’
বক্তারা আরও জানান, নারীদের কাজের কোন মূল্যায়নই করা হয়না। অথচ এসব নারীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংসারে বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। শুধু সংসারের গৃহস্থালি বিভিন্ন কাজই নয়; তারা গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করেন এবং বাড়ির ফাঁকা জায়গায় বিভিন্নরকম সবজি চাষ করেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ করে সংসারে বাড়তি উপার্জনে শামিল হচ্ছেন। তবে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাদের এসব কাজের মূল্যায়ন নেই।
নারী ও পুরুষে সমান অধিকার বিষয়টি এখনও কাগজে কলমে থেকে গেছে। বাংলাদেশ সংবিধানে বলা হয়েছে ‘নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সব নাগরিকদের সমান অধিকার থাকবে।’ কিন্তু এ নিয়মগুলো যখন বাস্তবে প্রয়োগ করা হয় তখনি শুর হয় নানান প্রতিবন্ধকতার। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার নারী কবিতায় বলেছেন, ‘সাম্যের গান গাই আামার চক্ষে পুরুষ রমণী কোন ভেদাভেদ নাই। বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।’ বিশ্বায়নের ফলে সামাজিক প্রেক্ষাপট বদলেছে। আজ সামাজিক, পারিবারিক, এমনকি পেশাগত দিক দিয়েও প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।