একজন রফিকুল ইসলাম ও ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের গল্প
আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ ॥
ঘড়ির কাটা তখন রাত ১টা। শীতের রাত। হীম শীতল শৈত্য প্রবাহ আর টুপটুপ কুয়াশায় জড়োসরো প্রকৃতি ও মানুষ। সাটুরিয়া উপজেলার কান্দাপাড়া বাজার। বাজারের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রচন্ড শীত নিবারণের জন্য খরকুটা জ্বালিয়ে হাত পা গরম করার চেষ্টা করছেন। নিরাপত্তা কর্মীর মধ্যে বাচ্চু মিয়া (৭০) একটু বেশি দুর্বল হয়ে পরেছেন শীতে। এমন সময় ২টি মাইক্রো বাস এসে থামল তাদের সামনে। পুলিশ ভেবে সালাম দেবার জন্য এগিয়ে গেলে নিরাপত্তা কর্মীরা। ভেতর থেকে নেমে এলেন একজন সাধারণ মানুষ। শীতার্ত ওই নিরাপত্তা কর্মীদের কম্বল দিয়ে জরিয়ে ধরলেন তিনি। আকস্মিক এ ঘটনায় তারা হতবাক হয়ে যান। আবছা আলোয় মানুষটির অস্পষ্ট চেহারা চিনতে চেষ্টা করেন তারা। তিনি ড. রফিকুল ইসলাম, রাবেয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। ৫ নিরাপত্তা কর্মী মান্নান, সহিমুদ্দিন, বিল্লাল , আজাদ খা ও বাচ্চু মিয়াকে নিজ হাতে কম্বল গায়ে জড়িয়ে দেন এই মানুষটি। এরপর রাতভর চলে ছিন্নমূল আর অসহায় শীতার্ত মানুষের খোঁজে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভাসমান অসহায় দুঃস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।
কান্দাপাড়া বাজারের পর সাটুরিয়া বাজারে ৬ জন ভ্যানচালকদের হাতে কম্বল তুলে দেন তিনি। এর আগে রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ বাসষ্টান্ড, ছাত্রী ছাউনী, শুভযাত্রা বাসষ্টান্ডে ভাসমান মানুষদের মাঝে শতাধিক শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন, সাটুরিয়াা ফাষ্ট গ্রুপের সদস্য মাহফুজুল ইসলাম খান রত্ন ফিরোজ।
ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ কম্বল শীতার্থদের একটু হলেও শীত নিবারণ করবে। আসলে আমার যতটুকো সামর্থ্য আছে তাই দিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ শীত মৌসুমে সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাটুরিয়াা ফাষ্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার কম্বল বিতরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, আমেরিকা প্রবাসী সাটুরিয়া উপজেলার নওগাঁও গ্রামের খান পরিবারের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম খানের সহায়তায় মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছিল নিঃস্ব ৭ পরিবার। জমি আছে অথচ থাকার ঘর নেই এমন ৭টি অস্বচ্ছল পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সহায়তার হাত। এ নিয়ে বারসিক নিউজ এ একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।