বারসিক’র স্বপ্নযাত্রা এবং বারসিকনিউজ

সিলভানুস লামিন 

এক
কেউ কেউ বলেন, স্বপ্ন দেখা হচ্ছে মানুষের একটি বড় ক্ষমতা। মানুষ ছাড়া আর কোন জীব স্বপ্ন দেখে কি না তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। স্বপ্ন থেকেই একটি সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়, জন্ম হয় নিত্য নতুন সৃষ্টি, উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের। সমাজে ব্যক্তির অবস্থানও স্বপ্ন থেকে শুরু হয়। মানুষ স্বপ্ন দেখে প্রতিনিয়ত। সে স্বপ্ন দেখে ভালো থাকার, মর্যাদা লাভ করার ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার! স্বপ্ন আছে বলে মানুষ সেই স্বপ্নকে তাড়া করতে চায়। আর স্বপ্নকে তাড়া করতে গিয়েই তারা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে। আমরা বারসিক’র পরিবারের সদস্যরাও স্বপ্ন দেখি একটি শোষণমুক্ত সমাজের, একটি সমতাভিত্তিক সমাজের যেখানে সবাই শান্তিতে, আপন মর্যাদায় এবং বৈচিত্র্যময়তায় বসবাস করতে পারে। বারসিক বিশ্বাস করে প্রাণীতে বৈচিত্র্য, উদ্ভিদে বৈচিত্র্য, মানুষে মানুষে বৈচিত্র্য। এই বৈচিত্র্যময়তার মধ্য দিয়ে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে সবাই স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভালো থাকবে-এটাই বারসিক’র চাওয়া। বিগত সময়ে বারসিক যে স্বপ্নকে লালন করে এগিয়েছে সেই স্বপ্নের পূর্ণতা দিতে আরেকটি নতুন স্বপ্ন দেখতে প্রয়াসী হয়েছে। এটাকে আমরা নতুন ‘স্বপ্নযাত্রা’ বলছি। বিগত বছরগুলোতে বারসিক চেষ্টা করেছে এলাকার মানুষকে জানার, তাদের শক্তিকে বোঝার এবং তাদের আশপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রকৃতির সাথে এবং পরস্পরের সাথে তাদের সম্পর্ককে উপলদ্ধি করার! সেই জানাবোঝা ও উপলদ্ধি থেকে বারসিক অনুধাবন করতে সমর্থ হয়েছে মানুষকে সুযোগ দিলে, তাদের শক্তিকে স্বীকৃতি ও গতিশীল করতে সহায়তা করলে এবং সর্বোপরি তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে সঠিক স্থানে প্রয়োগে সহায়তা করলে এই মানুষগুলো একটি কার্যকর ও গতিশীল মানবসম্পদে পরিণত হতে পারে! বিগত ১০ বছরে বারসিক তাই যেসব প্রকল্প নিয়েছে বা বাস্তবায়ন করেছে মানুষের সেই শক্তির জায়গাটাকে বিবেচনা করেই করেছে। মানুষের এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এসব প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এগুলো আসলে সেই অর্থে কখনও প্রকল্প ছিল না, ছিল মানুষের শক্তিকে, স্পৃহাকে এবং জ্ঞানকে স্বীকৃতি দেওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রচেষ্টা। বারসিক’র বিভিন্ন কর্মএলাকায় সংগঠিত কৃষক, নারী, পেশাজীবী, তরুণ, কিশোর, আদিবাসী এবং অন্যান্য সম্প্রদায় ও পেশার মানুষের শক্তিশালী সংগঠনগুলো, নেটওয়ার্কগুলো সেই বার্তা আমাদেরকে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

দুই
‘উন্নয়ন’ শব্দটি ছোট্ট হলেও এর পরিধি ব্যাপক। কোন কোন ক্ষেত্রে এটি আপক্ষিকও বটে! উন্নয়ন বলতে কেবলমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোঝায় না, বরং সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক উন্নয়নও এর আওতায় পড়ে। প্রতিটি এলাকায় কোন না কোনভাবে এসব উন্নয়ন উদ্যোগ ক্ষুদ্র, অনানুষ্ঠানিক এবং বিক্ষিপ্তভাবে হলেও চলমান রয়েছে। একটি এলাকার একজন মানুষ যখন আরেকজনকে সুপরামর্শ দেয়, বা কোন সংগঠন আরেকটি সংগঠনকে যখন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নানান বুদ্ধি, পরামর্শ প্রদান করে কিংবা কোন ব্যক্তি নিজ উদ্যোগ পরিবেশ, সংস্কৃতি সংরক্ষণে প্রচেষ্টা চালায় তখন সেখানে উন্নয়ন উদ্যোগ চলমান রয়েছে ধরে নিতে হবে। তাই নিজের কর্মএলাকাগুলোতে উন্নয়ন উদ্যোগ গ্রহণের সময় বারসিক সতর্ক থেকেছে যাতে নতুন গৃহীত কোন উন্নয়ন উদ্যোগ জনমানুষের চলমান এ উদ্যোগকে স্থবির না করে। বরং মানুষের চলমান অনানুষ্ঠানিক উন্নয়ন উদ্যোগগুলোকে কিভাবে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করা যায় সেই চেষ্টায় বারসিক করে আসছে। সেজন্য এলাকার মানুষের সাথে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক ও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের সাথে এবং সর্বোপরি সব পেশার, শ্রেণীর ও বর্ণের মানুষের সাথে বারসিক পরামর্শ করে। উন্নয়ন উদ্যোগ পরিচালনায় বারসিক’র এই কৌশল ও দৃষ্টিভঙ্গি তাই প্রশংসিত হয়েছে। আমি বছর দু’য়েক আগে একটি এলাকায় গিয়ে বারসিক’র প্রতি মানুষের এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতা দেখতে পেয়েছি। ওই এলাকার মানুষ বলেছেন, “আমরা এ পর্যন্ত এমন কোন সংগঠনকে দেখিনি যে, যারা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি বা কৌশল কী হতে পারে সে বিষয়ে আমাদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করতে আসে।” কোন কোন কর্মএলাকার মানুষ বারসিককে একটি ‘এনজিও’ হিসেবে দেখতে রাজি নয়। তারা বলেছেন, “বারসিক তো আমাদেরই সংগঠন, আমরা কি উন্নয়ন করবো, কীভাবে করবো এবং কাদের নিয়ে করবো বা কাদের পরিচালনায় করবো সেটাতো আমরাই ঠিক করি, বারসিক কেবল পেছন থেকে আমাদের সহযোগিতা করছে। আমরা যে উন্নয়ন দেখতে চেয়েছি সেটাকেই বারসিক অগ্রাধিকার দিয়েছে”। বারসিক’র উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গিটাই হচ্ছে জনমানুষের আত্মবিশ্বাস ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাতে প্রতিটি উদ্যোগে তাদের অবদানের ছোঁয়া থাকে। উন্নয়ন উদ্যোগে তাদের মালিকানা, অংশীদারিত্ব ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করাই বারসিক’র মূলমন্ত্র।

তিন
একটি কথা এখনও খুব বেশি প্রচলিত এবং তা হলো “এনজিও সংস্কৃতি মানুষকে পরনির্ভরশীল করে তোলে”। এটা বাস্তব এবং সেটা অবশ্যই নানানভাবে প্রতিফলিত হয়েছে মানুষের কর্মযজ্ঞে, এমনকি আচরণেও! বেসরকারি সংগঠন বা এনজিওর কাজই হচ্ছে মানুষকে তাদের ওপর নির্ভরশীল করে তোলা এবং এক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে। বাড়ির জন্য টিন লাগবে? সমস্যা নেই এনজিও আছে না! ক্ষুদ্র ঋণ নাও, টিন কিনো! গ্রামের রাস্তাটি খারাপ কিংবা টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, সংস্কার করা লাগবে-সেখানেও এনজিও আছে তাই কোন সমস্যা নেই! এরকম অনেকগুলো কাজ যেগুলো মানুষ নিজেই করতে পারে সেটা তারা এনজিওর ওপর ছেড়ে দিয়েছে। এভাবে মানুষের শক্তি, সক্ষমতা, সৃষ্টিশীলতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। অথচ এনজিও’র আর্বিভাবের আগে মানুষ নিজের ভেতরের শক্তি, সাহস, সক্ষমতা, জ্ঞান ও সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ওইসব কাজ নিজেই করতো, সমাধান করতো বহুবিধ সমস্যাও! বারসিক প্রচলিত এনজিও সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নয়। বারসিক মনে করে, “এনজিওর প্রধান কাজ হচ্ছে মানুষের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলা এবং তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জন্মানো যে, তারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধান করার সক্ষমতা ও ক্ষমতা রাখে।” বারসিক তার প্রতিটি কর্মএলাকায় জননেতৃত্ব উন্নয়ন উদ্যোগের আলোকে মানুষের ভেতরের সেই শক্তি ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলার কাজ করে আসছে, স্বীকৃতি দিয়ে আসছে তাদের ক্ষমতা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সৃষ্টিশীলতাকে এবং সর্বোপরি তাদের মনের ভেতরে একটি দিগন্তপ্রসারী ‘স্বপ্ন’ রচনা করতে সহায়তা করেছে যে, “আমরাও পারি”। এই স্বপ্নকে তাড়া করতে গিয়ে বারসিক’র প্রতিটি কর্মএলাকায় তাই তো নিত্যনতুন মানবসম্পদ তৈরি হয়েছে যারা নিজ এবং এলাকার বাইরের তাদের মতো মানুষকে সহায়তা করেছে একটি সার্বিক উন্নয়ন সাধনে। কৃষক সিরাজুল ইসলাম, কৃষাণী ফরিদা পারভীন, কৃষক ও গবেষক ইউসুফ মোল্লা, হাবাদা’র হাওয়া বেগম, জানমা’র যুগেশচন্দ্র মণ্ডল, কাবুলজান, সৈয়দ আহমেদ বাচ্চু, কৃষক মো. মোতালেব, যুবক জাকির হোসেন, অল্পনা রাণীসহ আরও অনেক নাম রয়েছে যারা প্রতিদিনই নানাভাবে এলাকা, গ্রাম, ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার সার্বিক উন্নয়ন সাধনে সহায়তার জন্য তারা তাদের জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অন্যের মধ্যে সঞ্চার করছেন এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের দূত তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর।

চার
বারসিককে পরিবেশবাদী সংগঠন হিসেবে চেনে সবাই। প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও রক্ষায় সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে বারসিক। পরিবেশ সুরক্ষায় মানুষের লোকায়ত জ্ঞানকে তথ্যায়ন বা নথিবদ্ধ করে বারসিক বিভিন্ন ক্যাম্পেইন কর্মসূচি পরিচালনা করে-এতদিন এ পরিচয়ে বারসিক বেশি পরিচিত। কিন্তু বারসিক’র কর্মসূচি শুধুমাত্র পরিবেশকে কেন্দ্র করেই সীমাবদ্ধ থেকেছে? অবশ্যই না। বারসিক উন্নয়নকে দেখেছে মানুষের সার্বিক উন্নয়নের আঙ্গিকে; যেখানে যুক্ত তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নৈতিক উন্নয়ন। সাতক্ষীরার ফরিদা পারভীনের কথায় ধরা যাক, ফরিদা পারভীন যখন নিজের জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চাষাবাদ করে তখন একদিকে তাঁর অর্থনৈতিক উন্নয়ন (বৈচিত্র্যময় ফসল বিক্রি করে) যেমন সাধিত হয়েছে তেমনিভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় (বিষহীন কৃষি) তিনি অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে এই ফরিদা পারভীন যখন তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বা সম্পদ (বীজ) অন্যের সাথে সহভাগিতা করেছেন কিংবা পারিবারিক কিংবা সামাজিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে সফল হয়েছেন তখন সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন। আবার নেত্রকনো, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী এবং সাতক্ষীরার যুবকরা বারসিক’র কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা (যৌতুক, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, ঝরে পড়া রোধ) সমাধানে প্রচার চালান, কর্মএলাকার নদী রক্ষা, সুপেয় পানির জন্য পুকুর পুনঃখনন, রাস্তা সংস্কার, রক্ত দানসহ স্বেচ্ছাশ্রমে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেন কিংবা পরিবেশ সুরক্ষায় রাস্তার দু’পাশে, স্কুল প্রাঙ্গন, পতিত জমি, চরে তারা গাছ রোপণ করেন তখন তারা সামাজিক ও পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রেখেছেন। একইভাবে বলা যায়, কর্মএলাকার মানুষ যখন ভাষা রক্ষা, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন বারসিক’র সহায়তা ছাড়াই বা সামান্য সহায়তায় তখন তারা সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন। সাতক্ষীরার যুবকরা যখন বাঘে আক্রমণ করা রহমান গাজীর চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহসহ বিভিন্ন কাজ শুরু করেন কিংবা যুবকরা যখন দেশের প্রবীণসহ প্রতিটি মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু প্রদান করেন, তাদের দেখভাল করেন কিংবা পরস্পরের সুখঃদুঃখের সাথী হয়ে সমব্যথী ও সমানুভুতি প্রকাশ করেন তখন আমরা বলতে পারি নৈতিক উন্নয়নে মানুষগুলো অবদান রেখেছেন। কর্মএলাকার বারসিক’র সামগ্রিক কর্মসূচির প্রভাব বিশ্লেষণ করে আমরা এসব উন্নয়নের চিত্র দেখতে পাই। বারসিক মানুষের জীবনে সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

পাঁচ
মানুষের জীবনে সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের জন্য বারসিক বারসিকনিউজ নামে একটি অনলাইন পত্রিকা চালু করেছে ২০১৫ সাল থেকে। এই অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে বারসিক কর্মএলাকা ও কর্মএলাকার বাইরে মানুষের মহৎ উদ্যোগ, অর্থনৈতিক উদ্যোগ, মানুষের সৃষ্টিশীল উদ্যোগ, সামাজিক সমস্যা অসঙ্গতি সমাধানের উদ্যোগসমূহ দেশ ও দেশের বাইরের মানুষের সাথে সহভাগিতা করছে। এই অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে বারসিক নিজের উন্নয়নের জন্য মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ যেমন প্রচার করছে, তেমনি পরিবেশ, প্রকৃতি, বৈচিত্র্য রক্ষায় মানুষকে উদ্যোগী করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে মানুষের জীবনে প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের অপরিহার্যতা, মানুষের উন্নয়নের জন্য এসব প্রাকৃতিক উপাদানের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এছাড়া প্রকৃতিসহ অন্যান্য প্রাণের সাথে মানুষের আন্তঃনির্ভরশীল সম্পর্ক তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বারসিকনিউজ দেশের অন্যান্য অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকা থেকে স্বতন্ত্র। এই অনলাইনের মাধ্যমে বারসিক চেষ্টা করছে তৃণমূল মানুষগুলোর নানান উন্নয়ন উদ্যোগ অন্যদের কাছে তুলে ধরা। তাই তো দেখা যায়, বারসিকনিউজ-এ প্রখ্যাত বা ‘বড় নামধারী’ মানুষকে (প্রখ্যাতি মূলধারার সংবাদপত্রের অন্যতম সংবাদ উপাদান) নিয়ে তৈরি সংবাদ বা ফিচারের সংখ্যা নেই বললেই চলে। বরং এই অনলাইনে অজপাড়াগায়ের ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ ও প্রচলিত দৃষ্টিতে কম গুরুত্বপূর্ণ (আমাদের কাছে সবাই সমান) মানুষকে নিয়ে তৈরি সংবাদ বা ফিচারের সংখ্যাই বেশি। বারসিকনিউজ-এ বর্তমানে ২০০০ এর অধিক আধেয় রয়েছে এবং প্রতিটি আধেয়ই এক একটি বার্তা ও শিক্ষণীয় বিষয় পৌছে দেয় সবার কাছে। এই প্রতিটি আধেয়ই তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের উদ্যোগকে পুঁজি করে। বারসিকনিউজ চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষের এই উন্নয়ন উদ্যোগগুলোকে সবার কাছে পরিচিত ও প্রচার করতে। সাধারণ মানুষের এই উদ্যোগগুলোকে স্থায়িত্বশীল করার জন্য যাতে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা ও স্বীকৃতি লাভ করে সেই চেষ্টা এখনও অব্যাহত রেখেছে বারসিকনিউজ। বারসিক মনে করে, এভাবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব, যা সমাজ ও দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

happy wheels 2

Comments