বজ্রপাতের ঝুঁকি কমায় তালবৃক্ষ
মানিকগঞ্জ থেকে গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল
বজ্রপাত রুখতে ২৫০টি তাল বীজ রোপণ করেছেন অষ্টোদনা মা সংগঠনের সদস্যগণ। এতে সহযোগিতা করেছে বারসিক। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নে অশ্টোদনা মা সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত তাল বীজ রোপণের শুভ উদ্বোধন করেন কৃষি কর্মকর্তা। উক্ত তালবীজ রোপণ অনুষ্ঠানে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আলোর শিখা যুব সংগঠনের সভাপতি হৃদয় আহম্মেদ।
বর্তমানে প্রাকৃতিক দূর্যোগের মধ্যে বজ্রপাত জনজীবনে সবচেয়ে বেশি আতংকের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘন ঘন বজ্রপাতের ফলে মানুষের মৃত্যুজনিত ঘটনাও ঘটছে অহরহ। বজ্রপাতের কারণে মৃত্যুজনিত ঘটনা মোকাবেলার উদ্যোগ হিসাবে এ তালবীজ রোপণ করা হয়েছে বলে মা পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়।
গ্রামীণ নারীদের উদ্যোগে আয়োজিত তালবীজ রোপণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে গ্রামের জিকাতলা থেকে মিতরা পর্যন্ত ২৫০টি তালের বীজ রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কৃষি কর্মকর্তা বদরুদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের কারণে বজ্রপাতের মাত্রা বেড়েছে, বেড়েছে মানুষের মৃত্যুজনিত ঘটনা। তাই বৈশি^ক পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এ ধরনের বৃক্ষ রোপণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।’
এক সময় আমাদের দেশে অনেক ধরনের বৈচিত্র্যময় গাছ পালায় ভরপুর ছিল। কালের পরিবর্তনে মানুষের ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এসেছে মানুষের রুচির। তাই শুধু মানুষের প্রয়োজনীয় গাছ গাছপালার কথা ভাবতে গিয়ে ভুলতে বসেছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতির ঐতিহ্য বহনকারী তাল খেজুরের কথা। নির্বিচারে জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে ইটভাটার চুলায়। তাল খেজুরের মত আকাশচুম্বি গাছের অনুপোস্থিতিতে মৃত্যুঘাতী বজ্রপাত তড়িৎ প্রবাহে মানুষকে বেছে নেওয়া শুরু করেছে। যে কারণে বেড়েছে প্রাণহানির ঘটনা।
তাই পরিমাণে অল্প হলেও অষ্টোদনা মা সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত তালবীজ রোপণের উদ্যোগকে পরিবেশ রক্ষার ইতিবাচক দিক হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। সেই সাথে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বজ্রপাতের মত প্রাণহানিকর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য তাল-খেজুরের মত বৃক্ষরোপণে সর্বস্তরের মানুষের একযোগে কাজ করা জরুরি বলে করছেন মা সংগঠনের সদস্যগণ।