পানীয় জলের চরম সঙ্কটে সাতক্ষীরার বস্তিবাসীদের
আসাদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা
‘একটি মাত্র পানীয় জলের উৎস। সেটা হলো পৌরসভা থেকে দেওয়া সাপ্লাই পানির একটি ট্যাপ। সেটাও ঠিক মত পানি থাকে না। আর নিত্য প্রয়োজনের জন্য থালা-বাটি, রান্নার কাজে বা কাপড় ধোয়ার জন্য নেই কোন পানির উৎস। একটি পুকুর আছে সেটাও নোংরা।’
উপরোক্ত কথা গলো বলেছেন সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর আতিরবাগান বস্তিবাসীরা।সম্প্রতি বারসিক’র আয়োজনে পানীয় জল ও এলাকায় পানির পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায় তারা এসব কথা তুলে ধরেন। বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম ও যুব সংগঠক ফজলুল হকের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বস্তির ১৫ জন নারী ও শিশু উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বস্তিবাসী রমেশা খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার সাপ্লাই পানির একটি ট্যাপই আমাদের খাওয়ার পানির উৎস। এই একটি ট্যাপের মাধ্যমে সবাই পানি সংগ্রহ করি। তাও মাঝে মাঝে থাকে না। তবে মাঝে মাঝে যখন থাকে না তখন আমরা কলসি, হাড়ি-পাতিলে পানি সংরক্ষণ করি। সেটা প্রয়োজনের তুলনায় কম। অনেক সময় পানিতে ময়লাও থাকে। একটিমাত্র ট্যাপ থেকে বস্তির সবাই পানি নেয় তাই একবারে বেশি নিতে পারি না। তাই দিনে দুই-তিন বার আনতে হয়। পানি আনতে আমরা নারীরাই বেশি যায়। মাঝে মাঝে বাচ্চারাও আনে।’
অন্যদিকে পুতুল বেগম বলেন, ‘পৌরসভা থেকে এই পানি ফ্রি দেয়। তবে ট্যাপ নষ্ট হয়ে গেলে বা পানি সরার পাইপ নষ্ট হয়ে গেলে নিজেরা চাঁদা তুলে ঠিক করি। আমরা নারী পুরুষ মিলেমিশে সকল কাজ করি। তবে নারীরা একটু বেশি কাজ করি। আমাদের এখানে খাওয়ার পানির একটা উৎস থাকলেও নেই নিত্য ব্যবহারের পানি। থাকা-বাটি ধোয়া, কাপড় ধোয়ার বা গোসল করার কোন উপায় নেই। একটা ময়লা পুকুর আছে তাতে সব করতে হয়। আমরা জানি এর জন্য রোগবালাই হচ্ছে তারপরও কোন উপায় নেই বলে এটা ব্যবহার করতে হয়।’
আরেক নারী হামিদা খাতুন বলেন, ‘পৌরসভা পানির ব্যবস্থা করার আগে দূর থেকে অন্য বাড়ি বা ক্লাবের কল থেকে পানি আনতাম। তখন কষ্টও বেশি হতো। শহরে পানির উৎস কম থাকায় এই অবস্থা। এটা আমাদের নিজেদের জায়গা না বলে আমরা নিজেরা কল বসাতে পারি না। বা কেউ দেয় না। জমির মালিকও কোন ব্যবস্থা করে না। পৌরসভা যদি চাপ কলের একটা ব্যবস্থা করে তাহলে আমাদের উপকার হয়।’