নিরাপদ খাদ্য আমাদের সবার অধিকার
কলমাকান্দা, নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
বারসিক’র উদ্যোগে নলছাপ্রা (বহুত্ববাদী সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র) গ্রামে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল। উক্ত সংলাপে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মো. ফারুখ আহমেদ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম এবং ৬নং ওয়ার্ড নাজিরপুর ইউনিয়ন ও মুক্তি যোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।
নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সংলাপের প্রবন্ধ পাঠ করেন বারসিক’র কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটর আলপনা নাফাক। প্রবন্ধে উঠে আসে অধিক ফসল উৎপাদনের আশায় রাসায়নিক সার/বিষের অত্যধিক ব্যবহারে উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের কি ধরণের ক্ষতি সাধন হচ্ছে এর রূপরেখা, ভোক্তা বা ক্রেতার অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩, উক্ত আইন বাস্তবায়নের জন্য নিরাপদ খাদ্য বিধিমালা ২০১৪, প্রবিধিমালা ২০১৮ প্রভৃতি।
সংলাপে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য আমরা যারা কৃষক আছি আমাদের সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে আমরা নিরাপদভাবে আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে পারি। যদি আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারি তবে আমরা নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে পারবো। পাশপাশি সুস্থভাবে বাঁচতে পারবো।’ তিনি কৃষকদের ফসল উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার/বিষ কম ব্যবহার করতে আহব্বান জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফারুখ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন প্রযু্িক্ত ব্যবহৃত হচ্ছে যেমন পোকামাকড় দমনের জন্য পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার, বিভিন্ন গাছ গাছালির সমন¦য়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি করে ব্যবহার করা, রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে জৈব সার, ভার্মি কম্পোষ্ট ব্যবহার করা, সেক্স ফেরোম্যান ফাঁদের সাহায্যে পোকা দমন এবং ধানের চারা রোপণের সময় লাইন করে রোপণ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘লাইন করে রোপণ করা হলে রোগবালাই কম আক্রমণ করে। ইঁদুরের উপদ্রব কম হয়। পরিচর্যার ক্ষেত্রে সুবিধা হয় যার দরুণ ফলনও বেশি পাওয়া যায়। ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে যদি আমরা এসব পদ্ধতিগুলো মেনে চলি তবে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারবো।’ যদি ফসলে কোন সমস্যা হয় তবে না জেনে কোন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার না করে সরাসরি কৃষি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য আহব্বান জানান।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘যারা ফসল উৎপাদনের সাথে জড়িত তারা যাতে সবসময় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করেন আর যারা ব্যবসায়ী আছেন তারাও যেন কোন প্রকার কারচুপি করে অনিরাপদ খাদ্য গ্রাহকের কাছে তুলে না দেন।’