নতুন প্রজন্মের কাছে অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ তুলে ধরলেন কৃষক
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুরীর কুমার সরকার
ঘিওর উপজেলার শোলকুড়া গ্রামের আলিফ বিশ্বাস ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। তার পিতা গবেষক কৃষক মো. মাসুদ বিশ্বাস। মাসুদ বিশ্বাস ¯œাতক পাস করার পরও নিজেকে কৃষক বলে পরিচয় দেন। আলিফ স্কুলে ও বাড়িতে শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষার গল্প শোনে। গল্প শোনে নিজের সহপাঠিদের নিয়ে শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষার পালন করার জন্য সে মাটি দিয়ে বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করবে বলে ঠিক করেছে। এছাড়া বাবার কাছ থেকে অচাষকৃত উদ্ভিদের উপকার সম্পর্কে জেনে বন্ধুদেরও জানাবে বলে ঠিক করেছে।
শহীদ দিবস উপলক্ষে প্রিয়া, মিথিলা, সুমি, সোহাগ নূর, রফিকুল, রাসেল, আবির, আলিফ, সোহাগ, মিনহা সহপাঠিরা মিলে মাটি দিয়ে শহীদ মিনার, ঘর, ফুল, নৌকা, কুয়া, কামরাঙ্গা, পাখি, ডলফিন, চুলা, রান্না ঘর, কলা, আম, মাছ, কেক তৈরি করে প্রদর্শন করেছে।
অনুষ্ঠানে বারসিক’র কর্মী সুবীর কুমার সরকার বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।’ গাংডুবী গ্রামের উদ্যমী যুবক মো. জাহিদ মিয়া (২৮) বলেন, ‘মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত ও সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেয়ার প্রথম নজির এটি। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’
ভাষা দিবস ও ভাষা শহীদের আত্মত্যাগ ও মহাত্ম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি শিশুদেরকে প্রাণ, প্রকৃতি ও অচাষকৃত উদ্ভিদের উপকার নিয়েও শিশুদের জানানো হয়। শহীদ দিবসের দিনে তাই শোলকুড়া গ্রামসহ আশেপাশের ৩টি পাড়ার নারীরা আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষার দিনে অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে প্রদর্শন করেন। নারীরা শিশুদের সাথে এ অচাষকৃত উদ্ভিদের নানান উপকার দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অন্যদিকে শিক্ষিত শিক্ষক মো. মাসুদ বিশ^াস শিশুদের সাথে মাটি ও কৃষি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘মাটি হলো মা। মাকে যেমন আমরা ভালবাসি তেমনি মাটিকে আমাদের সকলের ভালোবাসতে হবে। জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে জমির মাটি নষ্ট হচ্ছে। আমাদের সকলের উচিত হবে জমিতে কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে মাটিকে রক্ষা করার। মাটি ভালো থাকলে আদের পৃথিবীর সকল প্রাণ-প্রকৃতি ভালো থাকবে।