গ্রীষ্মকালীন ফুল উৎসব
রাজশাহী থেকে অমৃত সরকার
প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে নারীদের ভূমিকা অনেক। অতীতের মতো বর্তমানেও নারীরা প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে ভূমিকা রেখে প্রকৃতিকে করছেন সমৃদ্ধ। গতকাল রাজশাহীর তানোর উপজেলার হরিদেবপুর গ্রামের এই নারীরাই গ্রীষ্মকালীন ফুল উৎসবের মাধ্যমে পালন করলেন আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস-২২।
সকাল সকাল মাঠে, গ্রামীণ বনে, বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে, খাড়ির পাশ থেকে নারীরা শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালীন ফুল তুলে নিয়ে এসে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সবার ফুলের ডালাতেই সদ্য তুলে নিয়ে আসা লাল, হলুদ, সাদা, বেগুনী রংয়ের ফুলের মেলা। এই ফুল তুলে আনার মধ্য দিয়ে হরিদেবপুর নারী সংগঠন ও বারসিক’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় একটি প্রতিযোগিতা। যিনি বেশি ফুলের গুনাগুণ ও ব্যবহার বর্ণনা করতে পারবে তিনি প্রথম হবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণেই আমাদের প্রাণবৈচিত্র্য আজ হুমকিতে। প্রকৃতি থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খাদ্য বা ঔষধি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ যেগুলো কখনও কখনও গবাদি পশু বা মানুষের ঔষধ ও খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দিনে দিনে এই অতি প্রয়োজনীয় উদ্ভিদগুলো কমে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে। এই উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণে মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণ, নতুন প্রজন্মের মাঝে এই উদ্ভিদ বৈচিত্র্যও প্রয়োজনীয় জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়াই ছিল গ্রীষ্মকালীন ফুল উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ তবে বর্তমানে প্রকৃতিতে এই ঋতুুগুলোর প্রকাশ তেমন একটা দেখা যায় না। প্রতিটি ঋতুতে প্রকৃতি সাজে আলাদা আলাদা সাজে। এই আয়োজনের মাধ্যমে গ্রীষ্ম ঋতুর বহিঃপ্রকাশ সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছে অংশগ্রহণকারীরা।
এ বিষয়ে হরিদেবপুর গ্রামের প্রবীণ নারী মাহামুদা বেগম (৬৫) বলেন, ‘আজকে আমরা বুঝতে পারলাম আমাদের চারপাশে সময়ে সময়ে কত ফুল ফোটে। এগুলো সব আমাদের কোন না কোন কাজে আসে। আমরা এগুলো রক্ষ্ াকরব।’
উক্ত অনুষ্ঠানে ৫৫টি ফুলের নাম, গুনাগুণ ও ব্যবহার সর্ম্পকে আলোচনা করে ১ম হয়েছেন সীতা রবিদাস, ৫০টি ফুলের নাম, গুনাগুণ ও ব্যবহার সম্পর্কে জানিয়ে শাকিলা বেগম এবং ৪৫টি ফুলের নাম, গুনাগুণ ও ব্যবহার আলোচনা করে ৩য় হয়েছেন বানী রানী। এছাড়া এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনটির ৪০জন নারী।