প্রবীণদের প্রতি সম্মান, নির্যাতন নয়
মানিকগঞ্জ থেকে গাজী শাহাদত হোসেন বাদল ও মো, নজরুল ইসলাম
গতকাল ১৫ জুন আর্ন্তজাতিক প্রবীণ নির্যাতন প্রতিরোধ সপ্তাহের উপলক্ষে প্রবীণদের উপর চলমান নির্যাতন বন্ধে প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনতার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আউটপাড়াতে’ প্রবীণ অধিকার বাস্তবায়নে বেতিলা মিতরা ইউনিয়ন সাংস্কৃতিক দলের’ আয়োজনে দূরবন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দূরবন্ধন কর্মসূচিতে সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি মো. ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন-বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়, আউটপাড়া গ্রামের অবঃ চাকুরিজীবী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যবসায়ী মাজেদ মিয়া, ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান,কৃষক হযরত আলী, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও সংগঠক তসলিম উদ্দিন, বারসিক কর্মকর্তা গাজী শাহদাৎ হোসেন বাদল প্রমূখ।
করোনাকালিন দুর্যোগে শারিরিক দূরত্ব বজায় রেখে গ্রামীণ মানুষের অংশগ্রহণে প্রবীণ মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, ভালোবাসা, তাদের অধিকার ও সন্মানের দাবিতে এই দূরবন্ধনে সরকারি সেবাসমূহের আওতা বাড়ানোর দাবি, মা-বাবার প্রতি সন্মান শ্রদ্ধা, তাদেরকে নির্যাতনমুক্ত রাখা ও পারস্পরিক সহনশীল পরিবেশ গড়ে উঠুক এবং সম্প্রীতির ধারা বজায় থাকুক এই কথাসমূহ আলোচকদের নিকট থেকে উঠে আসে।
আলোচনায় বক্তারা জানান, প্রবীণ নাগরিকগণ দীর্ঘ কর্ম জীবনে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য তার সকল উপার্জন, শ্রম দিয়েছেন। সেখানে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র তার প্রতি সন্মানের দায়িত্ব পালন না করে তবে এই প্রবীণ নাগরিকের উপায় কি হবে? অনেক সন্তান তার মায়ের বাবার সঞ্চিত সম্পদ দখল নিয়ে তাকে বঞ্চিত করে রাস্তায় ফেলে দেয়, শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করে। একজন মা বা বাবার সম্পদ অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয় তবে ব্যক্তি অবাঞ্চিত হয়।
তারা আরও জানান, বাংলাদেশের প্রবীণ নাগরিকদের রক্ষায় সরকার ইতিমধ্যে আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় বয়স্কভাতা চালু হয়েছে, বিধাব ভাতা চালু হয়েছে, মা-বাবা ভরণপোষণ আইন করা হয়েছে। প্রবীণদের সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা করা হযেছে। এই সকল বিষয় থাকার পরও কিন্তু প্রবীণ নাগরিকগণ নানা ধরনের বৈষম্য, নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হন। বয়স্ক নাগরিকগণ কথা বলার অনেক সময় কাউকে পান না, তাদের প্রয়োজনীয় খাবার, ঔষধ, পোশাক, থাকার ঘর বা জায়গা নিয়ে নানান গঞ্জনার শিকার হন।
বক্তারা বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকেই প্রবীণ হব একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে। তখন আমাদের নানান ধরনের রোগ ব্যাধি কারণে কর্মক্ষমতা হারাবো। আমাদেরকে পরিবার ও সমাজ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখবে। তাই প্রবীণদেরকে সন্মান ও তাদের প্রতি আমাদেও দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা উচিত।’