গ্রামে মানুষসহ এগিয়ে যেতে চান চরের খালেদা

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে পাটগ্রামচরে বাড়ি ৪২ বছরের খালেদার। চার মেয়ে স্কুলে লেখাপড়া করে। তাঁর স্বামীর নাম রেজ্জাক মোল্লা। তিনি একজন জেলে ও কৃষক। মাছ ধরার কারণে তিনি বেশির ভাগ সময়ে নদীতে সময় কাটান। তাঁর স্বামী বাড়িতে সময় কম দেওয়ার কারণে খালেদা নিজে বসতবাড়ির জমিতে সবজি চাষ থেকে শুরু করে গরু বাছর পালন, গরুর খাবার সংগ্রহ করা, গৃহস্থালির নানান কাজ করেন। তাছাড়াও বসতবাড়ির সবজি চাষে সহযোগিতা, পানি দেওয়া আগাছা পরিস্কার করা, সবজি ক্ষেতে মাচা দেওয়া, বীজ বপন ফসল সংগ্রহ ও বীজ সংগ্রহ করার কাজ তাকেই করতে হয়। স্বামী রেজ্জাক মোল্লা মাছ ধরার পাশাপাশি সময় পেলে পরিবারে কৃষি কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। বিশেষ করে বাজারে ফসল বিক্রি করা, কেনাকাটা, বাজার করা এসব কাজের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।


খালেদার শুশুর বাড়ি থেকে পাওয়া বসতবাড়িসহ মোট ৫৬ শতক জমি রয়েছে। এই ৫৬ শতক জমিতে তিনি সারাবছর নানান ধরনের স্থানীয় জাতের সবজি চাষ করেন। তাঁর বাড়িতে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া, ডাটা, ধুন্দল, করল্লা, শশা, বেগুন, লাউ, মরিচ, ঢেড়শ, চালকুমড়াসহ নানান জাতের সবজি। এছাড়াও বাড়িতে স্থানীয় জাতের হাঁস-মুরগি, গরু ও ছাগল রয়েছে।


খালেদা বেগম বলেন, ‘সারাদিন কৃষি কামকাজ করে সময় কেটে যায়। আমার বাড়িতে নানা রহমের সবজি ক্ষেত দেহে গ্রামের অনেক মানুষ আগ্রহী হয়েছে। অনেককে আমি সবজি দিয়ে থাহি, পরামর্শ দেই। আমি চাই আমার দেহাদেহি গ্রামের মানুষ এগিয়ে যাক।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমি ১০ শতক জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে খরচ বাদে পঁচিশ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারছি। যে টাকা দিয়ে আমাদের পরিবারের চার মেয়ের লেখাপড়া খরচ এবং সংসারে আয় উন্নতির কাজে লাগাইছি।’


পাটগ্রামচরের সাবেক ইউপি সদস্য কৃষক শহিদ মোল্লা বলেন, ‘পরিশ্রম করলে ফল পাওয়া যায় তার প্রমাণ খালেদা বেগম। তারা স্বামী-স্ত্রী উভয় কঠোর পরিশ্রমী মানুষ। কৃষি কাজের মাধ্যমে তাদের দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। মানুষ তাদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা নেয়।’


খালেদার আগামী ভবিষ্যত পরিকলœনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে পরিশ্রম করে কৃষি কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই এবং আমার চার মেয়েকে লেখাপড়া করায়ে বড় করতে চাই।’
উল্লেখ্য যে, বারসিক হরিরামপুর চরাঞ্চলে এসব উদ্যোগি কৃষককের পাশে থেকে তাদের কাজকে আরো কিভাবে সম্প্রারিত করা যায়, কিভাবে মানুষ নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে। সংগঠনটি কৃষকদের বীজ সংরক্ষণ, বাজার নির্ভরশীলতা কমানোসহ নানান বিষয়ে প্রশিক্ষণ, গ্রাম পর্যায়ে সভা, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর আয়োজন করে, উপজেলা কৃষি অফিসের সাথে কৃষকদের যোগাযোগ তৈরিতে সহায়তা করে।

happy wheels 2

Comments