ছাগল পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীর পথে মাধবীর পরিবার
সাতক্ষীরা থেকে আব্দুল আলীম
নারীরা পৃথিবীর জন্ম লগ্ন থেকেই অবিহেলিত ছিল তবে পুরুষের সহযোগি হিসেবে কাজ করে আসছেন। পারিবারিক উন্নয়নে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ও সকল কাজে ভুমিকা পালন করে। গৃহস্থালী কাজের পাশাপাশি আর্থিক উন্নয়নের জন্য নারীরা নানা ধরনের আয়মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। তেমনি মাধবী রানী পরিবারের আয়ের আগ্রহে কোন অংশে কম নয়।
মাধবী রানীর বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার ম্যন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কুলতলী গ্রামে। দশম শ্রেনীতে পড়াকালীন সময় বিবাহ হয় কুলতলীর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভোলার রপ্তানের সাথে। ভোলা রপ্তান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হোওয়ায় লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। একটি পুত্র সন্তান নিয়ে ৩ জনের পরিবারে আয়ের কেউ নেই। ভোলা রপ্তান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হোওয়ায় কোন কাজ করতে পারেনা। এমনকি কোন মহাজন তাকে কাজে নিতে আগ্রহী না। সরকারি সেবার আওতায় প্রতিবন্ধী ভাতার টাকায় চলে তাদের সংসার। তারা কোনভাবে দিন আনা দিন খাওয়া মত চলে।
২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডেভেলপমেন্ট জাস্টিস’র সহযোগিতায় বারসিক’র বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে মাধবী রানী পরিবেশ প্রকল্পের ধুন্দল সিএসওতে সদস্য হিসেবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান। যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক আলোচনায় সভা, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রমে ধারাবাহিক অংশগ্রহণ করে আসছেন। দলে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে উৎপাদনশীল সম্পদ হিসাবে তাকে ২টি ছাগল ও ৫টি হাঁস-মুরগি সহযোগিতা করা হয়। এছাড়াও তাকে একটি কদবেল ও ছবেদার চারা, কিছু বর্ষাকালীন বীজ সহযোগিতা দেওয়া হয় প্রকল্প থেকে।
প্রশিক্ষণ ও সম্পদ সহযোগিতা পাওয়ার পর মাধবী রানীর ইচ্ছা ও আগ্রহ বেড়ে যায় বহুগুন। তিনি বাইরের কাজ করতে না পারায় খুব যতœ করে ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন। এখন মাধবী রানী ৮টা ছাগল ও ৮টি হাঁস মুরগির মালিক। প্রতিমাসে তিনি ১০০/১৫০টাকার ডিম বিক্রি করেন। কিছুটা পরিবারে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারেন। তিনি উক্ত ছাগল থেকে ১০০০০ ( দশ হাজার টাকার) ২ টি ছাগল বিক্রি করেন। তিনি উক্ত টাকা পরিবারে খরচ করেন এবং অন্য ছাগল ও মুরগীর জন্য ঘর তৈরী করবেন বলে জানান। স্বামী ভোলা রপ্তান বলেন ,“এই প্রথম কোন এনজিও থেকে সম্পদ পেয়ে তার থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছি, আজ আমরা দুজন মহাখুশি”। আগের চেয়ে তিনি এখন অনেক ভালো আছেন। তাদের দুজনের ছোখেমুখে যেন অনেকবড় তৃপ্তির ছাপ। এখন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন বলে তিনি জানান। মাধবী রানী বলেন ছেলেকে ঠিকমত পড়াশোনা করাব তার জন্য এই সম্পদ ঠিকমত লালনপালন করে সম্পদ বাড়াব। তারা দুজন বারসিক কে ধন্যবাদ জানান পাশে থাকার জন্য।