ভালো ফলনে চাই উত্তম বীজ

সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল

‘কৃষি কাজে ভালো ফলন পেতে গেলে আগে চাই উপযুক্ত বীজ। সঠিক পরিপুষ্ট বীজ না হলে ভালো ফলন আশা করা যায় না। বীজ যদি ফুলো হয় কিংবা অপরিপক্ক হয় তাহলে যতই পরিচর্যা করি না কেন ফসলের ফলন ভালো হয় না’। এভাবেই বললেন কৃষাণী তুলসী রানী মন্ডল।

এলাকায় একজন উদ্যোগী নারী হিসেবে তুলসী রানী ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। নিজেদের বসতভিটায় বছরের সবসময় ফসল উৎপাদন হয়। সামান্য পরিমাণে ফসল নিজেদের সংসারের কাজে লাগে, আর বেশিরভাগ অংশ বিক্রয় করেন। তার সামগ্রিক কৃষি কাজে তার একমাত্র ছেলে বাবু ও স্বামী পরিমল চন্দ্র মন্ডল সহযোগিতা করেন বলেই তিনি এতদুর উন্নতি করতে পেরেছেন বলে জানান। সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের বড়কুপট গ্রামের কৃষাণী তুলসী রানী নিজেদের ৭০ শতক বসতভিটায় মৌসুমভিত্তিক বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন করে চলেছেন।

বর্তমানে তিনি আলু, টমেটো, ঝাল, বেগুন, কপি, ধনিয়া, মৌরি পেয়াজ, রসুন, উচ্ছে, ঢেড়স, পুইশাক ও মিষ্টিকুমড়া প্রভৃতি লাগিয়েছেন। তিনি নতুন ফসল হিসেবে গাঁদা ফুলের চাষ শুরু করেছেন। গতবছর গাঁদা ফুলের বীজ বাছাই করে সেরা বীজগুলো রেখেছিলেন। এবার নিজ হাতে সেগুলো মাদায় ফেলে চারা বের করে বাগানের বিভিন্ন অংশে লাগিয়েছেন। প্রতিটি ফুল স্থানীয়ভাবে ৩/৪ টাকা দরে বিক্রি হবে বলে তিনি মনে করেন। ফসল চাষাবাদে তিনি জৈব সার উৎপাদন ও ব্যবহার করেন। বরবর্তী মৌসুমে লাগানোর জন্য তিনি বীজ সংরক্ষণ করেন। ক্ষেতে সবচেয়ে ভালো পরিপুষ্ট ও সুস্থ সবল ফলটি আগেই চিহ্নিত করে রেখে সেটা পাকিয়ে বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। নানা রকম সবজির পাশাপাশি বর্ষাকালে চিনিকানি ধান চাষ করেন। বিভিন্ন উৎসবে এই ধান ও চাল ব্যবহার করেন।

তুলসী রানী বিআরডিবি থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন ডিম পাড়া মুরগিীর খামার। সাড়ে চার শত মুরগি রয়েছে তার খামারে। সপ্তাহে একদিন ডিমগুলো বিক্রি করেন মুন্সিগঞ্জ বাজারের ডিলারের নিকট। সংসারের নানা ধরনের কাজের পাশাপাশি তিনি সামগ্রিক কৃষি কাজে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। উল্লেখ্য বারসিক থেকে তার বাগানের ঘেরা সংস্কারের জন্য ঘেরার উপকরণ সহযোগিতা করা হয়। তুলসী রানীর অনন্য কৃষি উদ্যোগ পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষায় অসামান্য অবদান রাখছে।

happy wheels 2

Comments