জাতীয় কন্যা শিশু দিবস: বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার কন্যা শিশুরা
আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ থেকে ॥
কন্যা শিশু। চারদিকে বৈষম্যের প্রাচীর ঘেরা। কন্যা শিশুদের জন্ম, বেড়ে ওঠা, বয়োঃসন্ধিকাল, বিকাশ প্রক্রিয়া কর্মক্ষেত্র ও জীবনধারার মূল্যায়ন; সবই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যুগে যুগে। ফলে তাদের মেধা-মনন সীমাবদ্ধ গণ্ডিতেই আবদ্ধ থাকছে। আবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা না পেয়ে আজকের কিশোরী মেয়েগুলোর মানসিকতা ক্রমশই সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে এই সমাজে। বাস্তবে সকল অধিকার থেকেই বঞ্চিত বাংলাদেশের কন্যা শিশুরা। গ্রামীণ জনপদে দৃষ্টি ফেরালে চোখে ভাসে এক ভয়াবহ চিত্র। গ্রামের প্রকৃতির বর্ণিল আতিথেয়তায় এক জমজমাট পরিবেশে জন্ম নেয়া মেয়েগুলো একসময় এসে শিকল বন্দী হয়ে পড়ে। জন্মের পর থেকেই বৈষম্য ওদেরকে ঘিরে ফেলে। স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্যে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসার অধিকারটি পর্যন্ত তারা পায় না। আর এই শিক্ষা-বঞ্চিত এইসব কন্যা শিশুরাই এক সময় সমাজে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশে এখন কন্যা শিশু এক কোটি ৬০ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার শতকরা দশ ভাগ। কিন্তু এই কন্যা শিশুরা নানা দিক দিয়ে এখনো অবহেলিত। তারা নিরাপত্তাহীনতা আর অপুষ্টির শিকার ঘরে বাইরে, সবখানে। ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা কিংবা পড়াশোন বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা অনেক পুরাতন বিষয় হয়ে গেছে। বাল্য বিয়ে হয়ে কুড়িতেই বুড়ি বণে যাচ্ছে হাজারো কিশোরী। সাধারণত দেশের বিভিন্ন জরিপ এবং গবেষণায় ১৫ থেকে ১৮-১৯ বছরের মেয়েরা গুরুত্ব পায়। কিন্তু ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি কন্যা শিশুরা কী অবস্থায় আছে তার চিত্র পরিসংখ্যানে স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে নারী ও মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান এক সেমিনারে তার বক্তব্যে বলেন,‘‘এই বয়সের কন্যা শিশুরা প্রধানত পরিবারে, রাস্তায় এবং স্কুলে নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের ওপর যৌন নির্যাতনও করা হয়। তারা তা প্রকাশ করেনা। বা ভয়ে প্রকাশ করতে পারে না।
অনিশ্চয়তায় কন্যাশিশুর শিক্ষা অধিকার
গ্রামের কন্যাশিশুদের শিক্ষায় পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে অভিভাবকদের অনাগ্রহ। একাধিক পরিবারের সাথে আলাপকালে তারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেন। আলাপে বোঝা যায়, গ্রামের বেশিরভাগ অভিভাবক তাদের মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে অসচেতন। তাদের অভিমত, মেয়েদের কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে ঘর, সুতরাং ঘরের কাজ করতে তো আর শিক্ষার প্রয়োজন নেই। আর তাছাড়া মেয়েদের শিক্ষার পেছনে তারা অতিরিক্ত অর্থ ও খরচ করতে চান না। সন্ধান করে জানা যায়, গ্রামের বেশির ভাগ পিতামাতা নিরক্ষর কিংবা অল্প শিক্ষিত বলেই তারা এ রকম ধারণা পোষণ করেন। মেয়ে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে গ্রামের অভিভাবকরা কিছুই জানেন না। শিক্ষার সুযোগ পাওয়া যে একটি মেয়ের জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয়, তা গ্রামের অধিকাংশ পিতামাতাই বোঝেন না।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে ভর্তির দিক দিয়ে কন্যা শিশুরা এগিয়ে। আবার তাদের ড্রপ ‘আউট’ও বেশি। মাধ্যমিকে মেয়েদের অন্তর্ভূক্তি ৬৪ ভাগ আর ছেলে ৫৭ ভাগ। কিন্তু ঝরে পড়া হিসেবে মেয়ে ৪৭ এবং ছেলে ৩৫ ভাগ। অন্যদিকে এই কন্যা শিশুরা কাজে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রেও ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে। নারী নেত্রী লক্ষ্মী চ্যাটার্জ্জী বলেন, ‘‘পরিসংখ্যান একটি ভয়াবহ তথ্য দেয়। আর তা হলো, মেয়েরা বাবার বাড়িতে যেমন ঠিকমতো খাবার পায়না, তেমনি অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ায় তারা শ্বশুর বাড়িতে গিয়েও নানা চাপে পড়ে। তারা নানা রোগে আক্রান্ত হয় এবং অপুষ্টি এবং শারীরিক সমস্যায় ভোগে।” তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা শহরে আর গ্রামে ভিন্ন চিত্র দেখি। শহরে এখানো মেয়েদের দিয়ে ঘরকন্যার কাজ করানো হয়। আর শহরে আছে নানা হয়রানি। যদিও তারপরও মেয়েরা নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।
মেয়ে শিশুদের জন্য আমাদের দেশের গ্রামগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। মেয়েদের শিক্ষা সমপ্রসারণে এটি আরেকটি সমস্যা বলে সচেতন মহল মনে করেন। গ্রামের প্রত্যন্ত জনপদে যোগাযোগ সংকট একটি মারাত্মক সমস্যা। আর এ সমস্যা মানুষকে শিক্ষাসহ নানাদিক থেকে পিছিয়ে রেখেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের বিদ্যালয় গমন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। যেসব ছেলেমেয়ে স্কুলে যায়, তাদেরকে শুকনো মওসুমে মাইলের পর মাইল পথ পায়ে হাঁটতে হয়। আবার বর্ষায় কাদাপানি ভেঙে, কখনো নদী সাঁতরিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌছতে হয়। ছেলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হলেও অধিকাংশ মেয়ে পক্ষে এ পরিবেশে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া কষ্টকর। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকরাই একসময় মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা বঞ্চিত মেয়ে শিশুরা
কন্যাশিশুর পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিষয়ক ইউনিসেফের এক গবেষণা তথ্য মতে, শতকরা ৩৫ ভাগ কিশোরী অপুষ্টির শিকার। শূন্য থেকে ৪ বছর বয়সী কন্যাশিশুরা ছেলেদের চেয়ে ১৬ শতাংশ ক্যালরি ও ১২ শতাংশ প্রোটিন কম পায়। এ ছাড়া ১০-১২ বছর বয়সী ৫৪ শতাংশ এবং ১৩-১৭ বছর বয়সী ৫৭ শতাংশের উচ্চতা আদর্শ উচ্চতার নিচে। অপরদিকে জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রমের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের শতকরা ৬০ ভাগ কিশোরী অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। যার মধ্যে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৪৩ ভাগ কিশোর-কিশোরী রক্তস্বল্পতায় ভুগছে এবং এদের প্রায় ৫ ভাগ কিশোর-কিশোরীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১০ গ্রামের কম। দেশের কিশোর-কিশোরীর শতকরা ৪৩ জনের আয়োডিনের ঘাটতি রয়েছে এবং এর অভাবে স্নায়ুতন্ত্রের বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, মেধা ও বুদ্ধিমত্তা কমে যায়। শতকরা ৬০ ভাগ কিশোরী অপুষ্টি ও অ্যানিমিয়ার শিকার। গ্রামের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই মেয়ে শিক্ষাথীদের জন্য আলাদা করে টয়লেট তৈরি করা হয় না। পরিবেশের অভাবে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে গিয়ে গণ-টয়লেট ব্যবহার করে না। সারাদিন পর বিদ্যালয় থেকে তারা বাড়িতে এসে টয়লেট ব্যবহার করে। এর ফলে নিজেদের অজান্তেই মেয়েরা নানা রোগ বালাইয়ের শিকার হয়। একদিন সেইসব রোগবালাই আবার মারাত্মক রূপ ধারণ করে।
বিডিএমএ’র অতিরিক্ত মহাসচিব ডা. মো. আবুল হাসান জানান, শিশু থেকে কিশোরী মেয়েরা রক্তস্বল্পতা, আয়োডিনের অভাবসহ নানা ধরনের বয়োঃসন্ধিকালীন সমস্যায় ভুগে। মেয়েদের বসবাস উপযুক্ত পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। শিক্ষা কিংবা কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট না থাকা এবং পর্যাপ্ত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। আর অপুষ্টির শিকার কিশোরী মা হলে সে একটি অপুষ্ট শিশুরই জন্ম দেবে। অপুষ্টির শিকার মায়ের নানা জটিলতা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে অপুষ্টির শিকার মায়েরা কম ওজনের শিশু জন্ম দেন।
বাংলাদেশে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও শিক্ষাগত অবস্থানের কারণে অবিবাহিত কিশোরীরা তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো নিঃসঙ্কোচে কারো কাছে বলতে পারে না। বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে অধিকাংশ মা-বাবা তাদের সন্তানদের সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন না। এমনকি স্কুলের শিক্ষকরা পাঠ্যপুস্তকের যৌন ও প্রজনন বিষয়ক পাঠ্যগুলো ক্লাসে আলোচনা না করে এড়িয়ে যান। আর তাই বাংলাদেশের অধিকাংশ কিশোরী যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও সঠিক ধারণা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক কিশোরীরা বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করার মধ্য দিয়ে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁঁকিতে পড়ছে।
বাল্য বিয়ে কবলে শিশু-কিশোরীরা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাল্য বিয়েতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। বাংলাদেশে ১৮ বছরের আগে বাল্যবিবাহের হার ৪৯ শতাংশ। শত প্রচার আর আইন করেও বাল্যবিয়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়েরর তথ্য অনুযায়ী, শতকরা ৬৬ ভাগ কন্যা শিশুর ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। এর মধ্যে ৬৪ ভাগ কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণ করে। মানিকগঞ্জের ঘিওর এলাকার কিশোরী মা লিপি আক্তার বললেন, “তখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়ি। শখ করে আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ে দেন। সেই সময় আমার বয়স ছিল ১৪ বছর। সংসার কি জিনিসি তা বুঝে ওঠার আগেই হাল ধরতে হয় সংসারের। এক বছর পরেই কোলজুড়ে আসে এক সন্তান। তারপর থেকেই শরীরে একটা না একটা রোগ লেগেই আছে। এখন আর শরীরে তেমন জোর পাই না। ঠিকমত যতেœ নিতে না পারায় শিশু সন্তানটিও নানা অসুখে আক্রান্ত হয়েছে।”
জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থানীয় দেশগুলোর একটি। বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হয়। ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৫২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়। ‘সেভ দ্য চিল্ড্রেন’-এর তথ্য অনুসারে, ১০ বছর বয়সী কন্যা শিশুদের অনেক বেশি বয়সি পুরুষদের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। প্ল্যান বাংলাদেশ এর সমীক্ষা মতে, পারিবারিক সহিংসতার কারণে ১৩ থেকে ১৮ বছরের যুব গৃহবধূ ও মেয়েদের শতকরা ৭০ ভাগেরও বেশি মারাত্মক শারীরিক আঘাতে মৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে থাকে। এ ছাড়া এসিড সন্ত্রাস, যৌন হয়রানি, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনায় দেশের কন্যশিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সামাজিক অবক্ষয়, অবহেলা আর নির্যাতনের বলি কন্যা
নিরাপত্তার বিষয় থেকেই কন্যাশিশুর সব অবহেলা এবং নির্যাতনের শুরু। আর কন্যা শিশুকে শুরু থেকেই মেয়ে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি এখানো তেমন পাল্টায়নি। পরিবারের আর্থিক সংকট গ্রামের মেয়েদের অবহেলা আর নির্যাতনের সূচনা হয়। বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে এখনও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কম নয়। বহু মানুষ দিন আনে, দিন খায়। নিয়মিত কর্মসংস্থানের সুযোগ তাদের নেই। যখন যে কাজ পাওয়া যায়, তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চালাতে হয়। এরা নিরুপায়। অতি অল্প বয়সেই বাংলাদেশের অধিকাংশ মেয়ের কাঁধে চাপে পরিবারের সকল বোঝা। বাড়ে দায়িত্ব। কম বয়সে বিয়ে, পর্দা প্রথা, সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলার জন্য মেয়েদেরকে সবার আগে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন সূত্র মতে, শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ নারী ও কিশোরী এসিড সন্ত্রাসের শিকার। যে পরিবারগুলোতে যেখানে তিন বেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকাই কষ্টকর, সেখানে তাদের কন্যা শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি সাধারণত উপেক্ষাই থাকে। এছাড়াও দারিদ্রতার কারণে বাসা বাড়িতে গৃহকর্তাদের হাতে শিশু- কিশোরীদের নির্যাতনের বিষয়টি সবারই জানা। শিশু মেয়েরা প্রতিনিয়তই ইভটিজিং, ধর্ষণ, খুন, অপহরণের শিকার হচ্ছে। আর আমাদের দেশে এ চিত্র যেন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা যে কোন দেশের জন্যই অশুভ বার্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের এক কলেজ ছাত্রী বলেন, ‘‘আমরা ঘরে-বাইরে সবখানেই এক ধরণের অবহেলা এবং নিরাপত্তাহীনতার শিকার। যে কোনো ঘটনার জন্য আমাদের দায়ী করার প্রবণতা থাকে। কেউ ইভটিজিংয়ের শিকার হলে তার জন্য আমাদের দায়ী করা হয়। আবার প্রতিবাদ করলে বলা হয়, আমরা কেন ঝামেলা করতে গেলাম।”
হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ঘরের (পরিবারের) প্রথম সন্তান কন্যা হয়; সে ঘর হয় বরকতময়। সব ধর্মেই মেয়েদের আসন অনেক উচ্চতর স্থানে। ছেলে-মেয়ে সমান অধিকার! কিন্তু এই ‘সমান অধিকার’ ম্লান যেন না হয় সেদিকে সবারই খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার রাষ্ট্রীয় অধিকার। আর কন্যা শিশুদের ভালো রাখার দায়িত্ব আমার- আপনার-সবারই। আমরা কন্যা শিশুদের জন্য একটা ভালো সকালের নিশ্চয়তা চাই, একটা ভালো দিনের নিশ্চয়তা চাই। চাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পজিটিভ করতে। কর্মদক্ষতা বাড়ানো, আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি, সংসার ও সন্তান ধারণ, লালন-পালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে মেয়েদের শিশুকাল থেকেই সুন্দর পরিবেশ ও সুষ্ঠু রক্ষানাবেক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। মেয়েরা শিক্ষিত না হলে জাতি শিক্ষিত মা থেকে বঞ্চিত হবে।