মানিকগঞ্জে আমন মৌসুমে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
মানিকগঞ্জ থেকে মাসুদুর রহমান
সম্প্রতি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বরুন্ডী গ্রামে স্থানীয় কৃষক কৃষাণী সংগঠনের আয়োজনে হাটিপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত ১৩ জন কৃষাণী ও ৪৯ জন কৃষকের অংশগ্রহণে উপজেলা কৃষি সম্প্রসরণ কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আমন মৌসুমে সরেজমিনে গবেষণাধীন প্লটে কৃষক কৃষাণীদের উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীরা সরেজমিনে মূল পরীক্ষণ প্লট, জাত সংরক্ষণ প্লট ও বীজ বর্ধ প্লটের ৭৬ প্রকার ধানের জাত পর্যক্ষেণ করেন। তারা ধান গাছের উচ্চতা, কুশির সংখ্যা, শীষ ও দানার দৈর্ঘ্য, চিকন দানা ও মোটা দানা, জীবনকাল, পানি ধারণ ক্ষমতা, হেলে পড়া, ভাত, মুড়ি, পিঠা, পায়াস অর্থাৎ নানা ধরনের খাদ্যের উপর বিবেচনা করে ১৩ প্রকার ধানের জাত পছন্দের মধ্য দিয়ে ৪৬ কেজি বীজের চাহিদা করেন যার মধ্যে আম শাইল, রাজভোগ, কালিজিরা, কাইস্যাবিন্নি, মকবুল ও দুধ কলম উল্লেখযোগ্য।
বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়ের মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলার মধ্য দিয়ে মাঠ দিবসের প্রধান বক্তা হাটিপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন (মাদল) বিশ^াস বলেন, ‘বরুন্ডী কৃষক কৃষাণী সংগঠন ও বারসিকের যৌথ উদ্যোগে এলাকা উপযোগি জাত বাছাই কার্যক্রমের মাধ্যমে আমার ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের পছন্দমত বেশ কিছু ধান জাত নির্বাচন করতে পেরেছে এজন্য আমি আমার ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।’ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘মূল পরীক্ষণ প্লটের মাধ্যমে এলাকা উপযোগি জাত বাছাই কার্যক্রম জাত সম্প্রসারণের একটি কার্যকরী কৌশল।’
স্থানীয় প্রবীণ কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৮৮ সালের ভয়বহ বন্যায় ৪ ধরনের আমনের জাত হারিয়ে গেছে, বর্তমানে যে জাতগুলো আছে সেগুলো টিকিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। চলতি বছরে পানি কম হওয়ায় মাঝারি আকৃতির ধান গাছের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। কাজেই সব ধরনের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জাত আমাদের কাছে রাখতে হবে।’ বরুন্ডী বীজ ব্যাংকের তত্ত্বাধায়ক গুরুদাস সরকার বলেন, ‘বরুন্ডী বীজ ব্যাংকে স্থানীয় কৃষকদের মৌসুমভিত্তিক ধানসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ জমা রাখার মাধ্যমে বীজ ব্যাংকটি সচল হয়েছে সেই সাথে এলাকায় বিভিন্ন ফসলের জাতের সংখ্যা বেড়েছে।’