গম ও পায়রার চাষে লাভবান হচ্ছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর চরাঞ্চলে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে হরিহরদিয়া চরে কৃষক পর্যায়ে স্থানীয় জাতের গম ও পায়রা চাষ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। এই মাঠ দিবস আয়োজনে সহযোগিতা করেন হরিহরদিয়া কৃষক সংগঠন। মাঠ দিবসে অংশগ্রহণ করেন হরিহরদিয়া কৃষক-কৃষানী সংগঠনের সদস্যসহ গঙ্গাধরদি, পাটগ্রামচর ও হরিহরদিয়া গ্রামের ২৫ জন কৃষক-কৃষাণী।
চলতি মৌসুমে যারা গম ও পায়রা চাষ করছেন এবং আগামী বছর যারা গম ও পায়রা চাষে আগ্রহী কৃষক তারা মাঠ দিবসে অংশগ্রহণ করেন। মাঠ দিবসে গম ও পায়রা চাষী কৃষক কাসেম আলী তার গম ও পায়রা চাষ পদ্ধতি, জমি তৈরি, স্থানীয় জাতের গম পায়রার বীজ সংরক্ষণ বিষয়, গম চাষে মাটির ধরন, উৎপাদন খরচের পরিমাণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঠ দিবসে অংশগ্রহণকারীদের সাথে আলাপ-আলোচনা ও তথ্য আদান প্রদান করেন।
হরিহরদিয়া গ্রামের কৃষক কাসেম মিয়া (৪৫) জানান, এ বছর তিনি ৩ পাকি (প্রতি পাকি ২৬ শতক) জমিতে গম ও পায়রা চাষ করেন। গম ও পায়রা চাষে তার খরচ হয়েছে মোট ১৫ হাজার টাকা। ৩ পাকি জমিতে মোট গম উৎপাদন হবে ৩০ মণ। প্রতিমণ গমের মূল্য বর্তমান বাজার দর এক হাজার টাকা। এলাকার কৃষকরা এখন গম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। কারণ ৫ বছর আগে চরাঞ্চলে গম পায়রা কম চাষ হতো। কিছু কৃষকরা গম চাষ করলেও ইদুরের আক্রমণ বেশি হওয়ার কারণে অনেক কৃষক গম পায়রার চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু এখন গম পায়রা চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণে ইদুরের প্রার্র্দভাব কমে গেছে।
গম ও পায়রা চাষী কয়েকজন কৃষক কাসেম, মুক্তার খাঁ, আসমত আলী, মুন্না শিকদার, মিলন খাঁ, আফছার আলী সাথে আলোচনা করে তারা বলেন, ‘চরে বন্যা হওয়ার কারণে মাটিতে দোঁআশ মাটি পড়ে এতে গম ভালো হয়। আর ২০১৬ সালে বড় বন্যা হওয়ার কারণে অনেক কাঁশবন ভেঙ্গে যায় আর সেখানে বাস করা শিয়াল এখন চক পাথারে এসে বাস করে। ফলে অনেক ইঁদুর তারা খেয়ে ফেলে তাই গম ক্ষেতে ইদুরের প্রার্দভাব কমে গেছে।’
হরিহরদিয়া গ্রামের কৃষক আফছার আলী বলেন, ‘গম, পায়রা চাষ করে আমাদের নিজেদের খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়তা করছে। গমের তৈরি আমরা রুটি, জাউ, খিচুরী, গমের ভাত খেতে পারি। অপরদিকে পায়রার দিয়ে ছাতু তৈরি করে খাই। এছাড়া গরু ছাগল, ঘোড়ার খাদ্য হিসেবে পায়রা গুরুত্বপুর্ণ খাদ্য হিসেবে ব্যবহ্রা করে থাকি।’ হরিহরদিয়া কৃষক সংগঠনের সভাপতি ন্নানু প্রাং বলেন, ‘চরাঞ্চলে শুধু গম পায়রার পাশাপাশি মাস কালাই, মসুর কালাই, খেসারী কালাই, শরিষা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।’
বারসিক হরিরামপুর রিসোর্স সেন্টার চরাঞ্চলে বৈচিত্র্যময় ফসলচাষে এলাকায় গড়ে উঠা কৃষক সংগঠনে আলোচনা, গ্রাম পর্যায়ে আলোচনা সভা, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছে।