বাড়ির পাশে দেশীয় ফলজ গাছ, ফল পাবো বারোমাস
রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্র নাথ
রাজশাহীর পবা উপজেলার দর্শন পাড়া ইউনিয়নের বিল নেপাল পাড়া একটি গ্রাম। এই গ্রামটি সবুজ শ্যামলে ঘেরা। গ্রামের ভেতরে একটি মাদ্রাসা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি উচ্চ বিদ্যালয় আছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষি পেশার সাথে জড়িত। কৃষিই একমাত্র গ্রামবাসীর প্রাণ। এই গ্রামে বারসিক ২০১৬ সাল থেকে প্রাণ প্রকৃতিরক্ষা, পরিবেশ, প্রতিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিকেন্দ্রিক বিষয়ে সভা, উঠান বৈঠক, প্রচারণা ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে।
এই এলাকারা সমস্যাগুলোর মধ্যে গ্রামটিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ আছে তবে আমড়া ও ডালিম গাছ তুলনামূলকভাবে কম দেখা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই গ্রামটিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ফলজ বৃক্ষে পরিপূর্ণ করার লক্ষ্যে বিলনেপাল পাড়া নারী উন্নয়ন সংগঠন এবং বিলনেপাল পাড়া চাষী ক্লাবের সদস্যদের যৌথ উদ্যোগে ফলজ চারার সহায়তা ভিত্তিতে ২০১৬ সালে জুন মাসে ৫০টি পরিবারকে ডালিমের চারা দেওয়া হয়। এই ৫০টি ডালিম চারার মধ্যে ৪৫টি ডালিম চারা এখনও টিকে আছে। ৪৩টি ডালিম গাছে ২০১৭ সাল থেকে ফুল ও ফল ধরছে বাকি ২টি ডালিম গাছ মাটির ধরনের কারণে বড় হচ্ছে না তবে গাছগুলো সতেজ আছে।
এই সর্ম্পকে বিল নেপাল পাড়া নারী সংগঠনের সদস্য মোসা. ফাইজান বেগম ও কহিনুর বেগম বলেন, ‘বারসিক’র কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া ডালিম গাছে ২০১৭ সালে কিছু সংখ্যক ফুল এসেছিল তবে আমরা সে ফুলগুলো ছিড়ে ফেলেছিলাম কারণ প্রথম ফুলগুলো ছিড়ে দিলে সামনে বছরগুলোতে সেই গাছের ফল বড় হয়। আর সে কাজের কাজ এই বছর আমাদের ডালিম গাছে ৫০টি ফল ধরেছিল সেখান থেকে কিছু ডালিম আমরা খেয়েছি আর কিছু ডালিম প্রতিবেশিকে দিয়েছি। তারপরও ডালিম গাছে এখনো ২০ ফল আছে।’
৪৩টি পরিবারের ডালিম গাছের ফল ধরা দেখে গ্রামের কিছু পরিবার বাজার থেকে ফলের চারা এনে লাগাচ্ছেন। গ্রামের বাকি যে সকল পরিবারে ডালিম চারা ছিল না সে সকল পরিবারে বারসিক ২০১৮ সালে আরো একটি করে ডালিম চারা সহায়তা করেছে। এখন গ্রামটিতে মোটামুটিভাবে ডালিম গাছে পরিপূর্ণ।
আগামীতে গ্রামের আর কোন প্রতিবেশীদের একে অপরের মধ্যে ফল সহায়তার প্রয়োজন হবে না বলে তারা মনে করেন। কারণ প্রায় সকল পরিবারে কোন না কোন ফলজ গাছ আছে, যা গ্রামের মানুষেরা এক অপরের মধ্যে ফল বিনিময় করতে পারবে । এই ফলজ গাছগুলো থেকে গ্রামবাসীরা শুধু ফলই পাচ্ছেন না বরং অক্সিজেনও পাচ্ছেন। পবা উপজেলার মধ্যে এই গ্রামটিকে দেশীয় বৈচিত্রপূর্ণ ফলজ বৃৃক্ষে পরিপূর্ণ গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা চেষ্টা করেছেন গ্রামবাসীরা।