সকল ক্ষেত্রে নারী অংশগ্রহণ বেড়েছে
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহিনুর রহমান
‘প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারীর অধিকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সিংগাইর উপজেলা কালিয়াকৈর খান উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ পালন করেছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটি পালনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। নারী পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণে দিবস পালনের অনুষ্ঠানমালায় ছিলো নারী দিবসের আলোচনা, প্রমীলা ফুটবল ম্যাচ এবং পুরস্কার বিতরণী।
নারী দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্কুল কমিটির সভাপতি লিয়াকত হোসেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিংগাইর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ারা খাতুন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সিংগাইর উপজেলার নারী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সেলিনা খাতুন, কালিয়াকৈর খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ যুবায়ের হোসেন খান, দাতা সদস্য মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, বারসিক কর্মকর্তা শিমুল বিশ^াস, শাহিনুর রহমান, বিউটি সরকার ও শারমিন আক্তার প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘নারীরা সব পারে। শুধু সাহসে ভর করে এগিয়ে যেতে হবে। আর মনে রাখতে হবে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হলে বছরের প্রতিটি দিনকেই নারী দিবস ভাবতে হবে। তাহলে নারীদের উন্নয়নকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘আপাত দৃষ্টিতে সকল ক্ষেত্রে নারী অংশ গ্রহণ বেড়েছে। রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষাক্ষেত্র, শিল্প কারখানা, সেনাবাহিনী… কোথায় নেই নারীর অংশগ্রহণ। আজ নারী পর্বত শিখরে আরোহণ করতে শিখেছে। শিখেছে মহাকাশ জয় করতে। শুধু পারেনি আমাদের ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি একচুল পরিবর্তন করতে। আজও আমাদের সামাজ মনে করে নারী অবলা। তারা থাকবে পারিবারিক ও সামাজিক বেষ্টনীর মধ্যে আবদ্ধ।’ তারা আরও বলেন, ‘গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় আজও নির্ধারিত নারীর কাজ। গন্ডিতে আবদ্ধ নারীর পোশাক-পরিচ্ছদ, খেলাধুলা, বিনোদন, আচার আচরণ চলাফেরার সীমারেখা। মান মর্যাদার দিক থেকে পারিবারিক ও সমাজিক জীবনে আজকের দিনেও নারীরা বৈষম্যের শিকার। অথচ আজ থেকে দেড় শতাধিক বছর আগে থেকে নারীর প্রতি হওয়া বৈষম্য দুর করতে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে সুতা কারখানা থেকে প্রতিবাদী আওয়াজ উঠেছিল। সেই আওয়াজ তোলা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবছর ৮ মার্চ পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব নারী দিবস। কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে নারী- পুরুষের মধ্যে প্রচলিত চিরাচরিত ব্যবধান।’
এখন প্রশ্ন হলো-নারীরা আসলে অবলা? তারা কি কিছুই পারেনা? বাস্তবতা অন্যকথা বলে। সুযোগ পেলে নারীরা সব কিছু করতে পারে। গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থাকে এই সত্যকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর জন্য দিবসটিতে আয়োজন করা হয় প্রমীলা ফুটবল ম্যাচ। বিকাল ৩টায় খেলার উদ্বোধণ করেন স্কুলের দাতা সদস্য মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান। কালিয়াকৈর খান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উক্ত স্কুলের ছাত্রীরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে। ৪০ মিনিটের খেলায় শাপলা দল বিজয়ী হয়। খেলা শেষে বিজয়ী শাপলা দল এবং বিজীত গোলাপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি আনোয়ারা খাতুন।