সমাজ ও দেশ গঠনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে দক্ষ তারুণ্য
রাজশাহী থেকে তহুরা খাতুন লিলি ও শহিদুল ইসলাম
‘মানুষের কাছে যাও
তাদের মধ্যে থাকো
মানুষের কাছে শিখো
তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে শুর করো
মানুষের যা আছে সেটাকেই সমৃদ্ধ করো।
মনে রেখো, ভালো নেতা সেই
যার কাজ শেষ হয়ে গেলে
মানুষ বলে যে, আমরাই করেছি।’
উপরোক্ত কথাগুলো সত্যিকারের উন্নয়নে অন্যতম নির্দেশক হিসেবে ভূমিকা পালন করে। নিজ সমাজের, দেশের বৈচিত্র্য, প্রচলিত রীতি-নীতি, ভিন্ন ভিন্ন পেশা ও তাদের নিজস্ব অধিকারগুলো ভালো জানা থাকলে একজন নবীন তরুণও হয়ে উঠেন অনেক বেশি দক্ষ। আর সেই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নিজের সমাজ দেশে এমন কি বিশে^র উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। একজন তরুণ দিনে দিনে সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজে আরো অনেক তরুণকে সংগঠিত করেন। এভাবে ভালো কাজগুলো সংগঠনের মাধ্যমে সবার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সমাজে দেশে। এসব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে একজন তরুণ সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন করেন। আর এভাবেই সমাজ উন্নয়নে , প্রকৃতির ও প্রাণবৈচিত্র্যের উন্নয়নে তরুণদের নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দক্ষতাগুলো সহভাগিতার মধ্যে দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠে। সমাজ এগিয়ে যায়। একটি বৈচিত্র্যময় সমাজ গড়ে উঠে।
স্বেছাসেবী তরুণদের কাজ, নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক দিকগুলো আরো গতিশীল করতে বারসিক সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ লক্ষ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরাম ও বারসিক’র যৌথ আয়োজনে গতকাল দিনব্যাপী ‘তরুণ নেতৃত্ব ও সংগঠন ব্যবস্থাপনা” বিষয়ক অনলাইন কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে রাজশাহী অঞ্চলের ৯টি যুব সংগঠছনের ৩৮ জন যুব স্বেচছাসেবী অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় তরুণ নেতৃত্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপন করেন- চায়নার হুয়াযোং এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ফেলো ও রাজশাহী বিশ^বিদ্রালয়ের তরুণ সংগঠন নবজাগরণ ফাইন্ডেশনের সাবেক প্রেসিেেডন্ট ও উপদেষ্টা, ‘রোদ্ধা’র প্রধান নির্বাহী পরিচালক কে.এম আবু হোরায়রা। তিনি একজন সাবেক তরুণ হিসেবে তার নেতৃত্বের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেন। একই সাথে তিনি তরুণ নেতৃত্বের ধরন, নেতৃত্বের গুণাবলি, নেতার বৈশিষ্ট্য ও বাস্তবভিত্তিক তথ্যগত দিকগুলো তুলে ধরেন।
স্বেচছাসেবী ও তরুণ সংগঠন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা নির্ভির তথ্য ও পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। তিনি তরুণ সংগঠনের ব্যবস্থাপনা কেমন হওয়া দরকার, সংগঠনে কি কি বিষগুলো থাকা জরুরি এবং সংগঠনের নেতাদের আচরণের দিকগুলো তুলে ধরেন।
কর্মশালায় তরুণরা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিজ নিজ সংগঠনের কার্যক্রম তুলে ধরেন। একইসাথে করোনা মাহামারিকালে তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথাগুলো তুলে ধরেন। বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরামের সদস্য সচিব শাইখ তাছনিম জামাল বলেন-‘করোনাকালে আমারা তরুণরা প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের নানাভাবে সহায়তা করেছি।’ আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সাবিত্রি হে¤্রম বলেন- ‘করোনাকালে আমরা প্রান্তিক আদিবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছি সংগঠিত ছিলাম বলেই। আমরা করোনাকালে আদিবাসী গ্রামে মাস্ক, স্যানিটাইজার, খাদ্য সামগ্রীসহ শিক্ষা উপকরণ সহায়তা করেছি। আর এটা করতে পেরেছি আমরা সংগঠিত ছিলাম বলেই।’
কর্মশালার স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য তুলে ধরেন বারসিক এর পরিচালক তৌহিদুল আলম। তিনি তরুণদের নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।