একটি ভেড়া ঘুরিয়ে দিয়েছে পারুল বিবির সংসারের চাকা
রাজশাহী থেকে আয়েশা তাবাস্সুম
পারুল বিবি ( ৪০)পেশায় একজন গৃহিণী। অভাবই যেন তাঁর নিত্যদিনের সাথী। ২ সন্তানের জননী পারুল বিবির ছোটবেলা কেটেছে ৬ বোন ২ ভায়ের সংসারে চরম অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে; ৩ বেলা খাবারই ঠিকমতো জোটেনি। অভাবের তাড়নাই একটু বড় হতেই বিয়ে দেওয়া হয় এক দিনমুজর শামসুদ্দিন (৪৫) সাথে। ভিটেমাটি বলতে মাথা গোজার ঠায়টুকু ছাড়া কোন সম্বল নাই। নতুন সংসারে এসেও অভাব তার পিছু ছাড়লোনা। শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও ২ মেয়ে নিয়ে কোন রকম সংসার চলে। কয়েকবছর পর তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা আসতেই তার স্বামী অসুস্থ হয়ে যায়। তিনি উপার্জনক্ষম হয়ে পড়েন। এতে সংসার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়েন পারুল বিবি। চিকিৎসার খরচ মেয়েদের পড়াশোনার খরচ, সংসার খরচের জন্য তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন!
পারুল বিবি বলেন, ‘যেখানে গ্রামের ৮-১০ বছরের বাচ্চারা মাঠে দিন ৫০-১০০ টাকার কাজ করে সংসারে আর্থিক যোগান দিচ্ছে সেখানে আমি মেয়েদের পড়া শোনা বন্ধ করিনি শত কষ্টেও। তাদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়েছি।
তার অভাবের সংসারের আশার আলো হিসাবে যুক্ত হয় একটি ভেড়া। এ ভেড়াটি তিনি তার প্রতিবেশীর কাছে থেকে আদি নেন। এই ভেড়া কয়েকমাসের মধ্যে তার সংসারে চাকা ঘুরিয়ে দেয়। একটি ভেড়া থেকে প্রথম দুইটি ভেড়া হয়। এভাবে বাড়তে বাড়তে এখন তার সংসারে ১০ টি ভেড়া। কিছু ভেড়া বিক্রি করে কিনেছেন একটি গাভী। সেই গাভী থেকেও তার অনেকগুলো গরু হয়েছে। সেই গরু বিক্রি করে তিনি স্বামীর ভালো চিকিৎসা করেছেন এবং বাড়িতে টয়লেট এর ব্যবস্থা করেছেন। ভেড়া বিক্রির টাকা দিয়ে ঘরে নতুন টিন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে সংসার করেছি এখন আল্লাহ চাইলে সুখের মুখ দেখেছি। মেয়েরা পড়াশোনা করছে। বড় মেয়ে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, স্বামী সুস্থ। আমরা এখন ভালো আছি।’