সাম্প্রতিক পোস্ট

করোনাকালে একটা নয়া হালখাতার খোঁজে

ঢাকা থেকে পাভেল পার্থ

নিদারুণ এই করোনাকালে চলতি আলাপখানি কারখানা বনাম কৃষির মতোন কোনো কান্ডজ্ঞানহীন তর্ক তুলছে না। দুনিয়াজুড়ে প্রমাণিত হয়ে চলেছে প্রজাতি হিসেবে মানুষের বাঁচার মৌলিক শর্ত কি? প্রথমত খাদ্য। আর তা আসে কোথা থেকে? নিশ্চয়ই কোক-পেপসি, ইউনিলিভার, জেনারেল ডিনামিক্স, মটোরোলা, ফোর্ড, প্রাডো, এডিডাস, লিভাইস, টেসলা, সিনজেনটা কী মনস্যান্তোর দুনিয়া কাঁপানো কারখানাগুলো থেকে নয়। মানুষের খাদ্যের পুরোটা জোগান আসে জলা, জমিন আর জংগল থেকে। জমিন থেকেই আসে ভূট্টা কি গম। তারপর না সেটি পিৎজাহাট কী কেএফসির ফাস্টফুড হয়ে ওঠে। করোনাকালে দুনিয়াকে মুঠোয় রাখা বহুজাতিক কোম্পানি গুলো এখন স্তব্ধ হয়ে আছে। বন্ধ হয়ে আছে তাদের কারখানাভিত্তিক উৎপাদন। ফোর্ডের একটা দামি গাড়ি বা গ্রিইর এসি এই লকডাউনের কালে কি এমন কাজে লাগছে মানুষের? এই যে লকডাউনেরকালে সোনার গয়না বিক্রি হলো না, লাখো টাকা দামের জুতো, হিরের আংটি কিংবা একটা দামি মোবাইল কি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না তাতে কী এমন ক্ষতি হচ্ছে দুনিয়ার? কি এমন তছনছ হয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাপন? প্রজাতি হিসেবে এইসব দু:সহ ভোগবাদ আর নজিরবিহিন বিলাসিতা না করেওতো মানুষ দিব্যি টিকে থাকতে পারছে। তাহলে এই প্রশ্ন তো নিমিষেই আসে, এসব বহুজাতিক পণ্য আমাদের দরকার কেন? দুনিয়াকে লন্ডভন্ডকরে কারখানার পর কারখানা বানিয়ে এসব তৈরি করে কার লাভ? আর ক্ষতিই বা কার? শিল্পকারখানাভিত্তিক উন্নয়নকে একটা বাহাদুরির জায়গায় দাঁড় করানো হয় সবসময়। করোনার মতো সংকট আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে এসব বাহাদুরি কেবলি মাস্তানি। কারখানাভিত্তিক উৎপাদন তো বন্ধ আছে। ফোর্ড, জেনারেল মটরস, টেসলার মতো গাড়ি কোম্পানিগুলোও এইসময়ে মাস্ক আর ভেন্টিলেটর তৈরি করছে। কারখানাভিত্তিক উৎপাদন স্থবির হয়ে থাকলেও মানুষের এতে খুব একটা প্রতিক্রিয়া নেই। মানুষ কেবল প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে খাবারের জন্য। লকডাউনের ভেতরও মানুষ হুমড়ি খাচ্ছে খাদ্য বেচাকেনার বাজারে। গাদাগাদি করছে কোনো খাদ্য সহযোগিতার সারির ভেতর। করোনাকালে সবকিছু লকডাউন হলেও কৃষিই একমাত্র অব্যাহত রেখেছে উৎপাদন। আর এটিই হলো করোনাকালের মৌলিক সহজ শিক্ষা। কী ধরণের উৎপাদনব্যবস্থা আমরা আমাদের দুনিয়ার জন্য চাই? কারখানাভিত্তিক উৎপাদনতো করোনার মতো এমন নানা আগামীর সংকটে আবারো স্থবির হয়ে যেতেই পারে, কিন্তু কৃষিসহ প্রাকৃতিকসম্পদ নির্ভর উৎপাদন ও জোগান তো থামবে না। থামেনি এই সংকটেও। তাহলে করোনাকালের এই মৌলিক শিক্ষাকে কী আমরা মনে রাখবো? প্রাকৃতিকসম্পদনির্ভর উৎপাদনকেই কী রাষ্ট্রের মূল উন্নয়নচিন্তা হিসেবে ভাবতে পারবো?

নির্ঘুম জলা, জমিন আর জংগল

করোনাকালে প্রায় সবাই কাজ থেকে ঘরে গেছে। এমনকি গার্মেন্টস শ্রমিকেরাও। যদিও নির্দয়ভাবে তাদের টেনে আনা হয়েছিল। কিন্তু থামেনি কৃষকের কাজ। বোরো মওসুমের ধান কাটা চলছে। নারীরা বসতবাগানে বুনছেন বর্ষাকালিন বীজ। জেলেরা জাল টেনে চলেছেন জলে। সুন্দরবনে মৌয়ালিরা গেছেন মধু-মোম সংগ্রহে। চাবাগানে কাজ করছেন শ্রমিকেরা। পাহাড়ের জুমে ব্যস্ত আদিবাসীরা। বাজার যখন বন্ধ পাহাড়-সমতলের নারীরা চারধার থেকে খুঁজে আনছেন শাকলতা, বুনো আলু কী পাহাড়ি ফল। প্রকৃতির উৎপাদন ও জোগান বন্ধ হয়নি। শ্রমমুখর হয়ে আছেন প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাথমিক ব্যবহারকারী মানুষেরা। করোনাকালের এই নিশানা কী রাষ্ট্রের কলিজায় ছলকায়? কৃষক, জেলে, মৌয়াল, শ্রমিক, মজুরদের এই নির্ঘুম সংগ্রামের আওয়াজ কী আমরা টের পাই? জীবনের ঝুঁকি নিয়েও যারা অবিরল মজবুত করে তুলছেন দেশের খাদ্যভিত, আমরা কি এবার এই জীবনের কথা ভাববো? বিশেষ করে দেশের বিশাল এক তরুণ যুব প্রজন্ম। তারা কি প্রাকৃতিকসম্পদনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থায় নিজেদের জড়িত করতে এখন উৎসাহী হবে? যে জমিন, জলা আর জংগল এই নিদারুণ সময়ে আমাদের বেঁচে থাকাকে নিশ্চিত করছে করোনাকালের পর আমরা এই অবদান পায়ের তলায় পিষে ফেলবো? আমরা কি বুকের দরদে জড়িয়ে ধরবো না এই লড়াকু জমিন, জলাভূমি আর জংগলের আহাজারি? যদি এই করোনার নিদান এক বিঘৎও আমাদের অন্তরে দাগ রাখে তবে তো আমাদের উন্নয়নচিন্তার আগাপাছতলা রূপান্তর জরুরি। করোনার মত বিপদ আরো আসবে সামনে, হয়তো আরো জটিল ও রূঢ় রূপে, আমাদের কে বাঁচাবে তখন? তখনো কিন্তু অবিরল আমাদের বেঁচে থাকার রসদ জোগাবে টিকে থাকা মুর্মূষু জমিন, জীর্ণ জলাভূমি আর রক্তাক্ত জংগল। আগামীর দিনগুলোতে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তি আরো মজবুত করতে এখন থেকেই আমাদের জমিন, জলা আর জংগল নিয়ে ভাবতে হবে। এই প্রাকৃতিকসম্পদ আর প্রাণবৈচিত্র্যই সকল সংকটে বাঁচাবে মানুষ। মানুষের সমাজ, মানুষের রাষ্ট্র, মানুষের দেশ।

চূর্ণবিচূর্ণ কৃষিজমি

কেবল শস্যফসলের উৎপাদন নয়, কৃষিজমি একইসাথে কোনো গ্রামীণ সমাজের বসতিস্থাপনের ইতিহাস এবং কৃষিসভ্যতার এক জীবন্ত দলিল। এটি সামাজিক সংহতি ও নানা বর্গ-শ্রেণির ঐক্যের প্রতীক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের (২০১৫) সূত্র উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবপোর্টালে জানিয়েছে, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমি ৮৫০৫২৭৮.১৪ হেক্টর, মোট সেচকৃত জমি ৭১২৪৮৯৫.৪১ হেক্টর, আবাদযোগ্য পতিত জমি ২০৪৩৬৬.২৪ হেক্টর। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী কৃষিজমির গুরুত্বকে আবারো আন্দাজ করেছেন। এক খন্ড জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সেই ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু নিদারুণভাবে দেশে বছরে ১ ভাগ কৃষি জমি কমছে। কৃষি জমি সুরক্ষার প্রশ্নে ২০১৫ ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন’ তৈরি হলেও এখনো কার্যকর হয়নি। করোনাকালে আইনটি চূড়ান্ত করা দরকার। কঠোরভাবে দেশের কৃষিজমিনগুলো সুরক্ষা করা ছাড়া আমাদের আর পথ কই?

জীর্ণ জলাভূমি

জলার দেশ আমাদের। কিন্তু জলা সব উধাও হয়েছে উন্নয়নের চাবুকে। বাংলাদেশের মোট আয়তনের ছয় ভাগের এক ভাগ জুড়েই হাওর জলাভূমি। আছে বিল, বাওড়, খাঁড়ি, ঝিরি, ঝর্ণা, ডোবা, খাল, পুকুর, দীঘি। বন্দি নদীগুলোর মতই দেশের গরিষ্ঠভাগ জলা আজ নিরুদ্দেশ। বছর বছর একের পর এক হারিয়ে যাচ্ছে মাছ আর জলজ প্রাণ। জলানির্ভর জেলে, মাঝি, বাগদীরা বংশগত পেশা ছেড়ে হচ্ছে দিনমজুর। দেশের প্রাণিজ প্রোটিনের বড় অংশটা এই জলাই জোগান দেয়। কিন্তু আমরা আড়িয়ল বিলকে মেরে বিমানবন্দর করতে চেয়েছিলাম। প্রতিদিন জলাভূমিগুলো দখল আর ভরাট করছি তো আমরাই। কিন্তু এই করোনারকালে এখনও এই মুমূর্ষু জলাই তো জোগান দিচ্ছে মাছ। জলাভূমি সুরক্ষার এই হলো সময়। দরকার সংবেদনশীল নীতি, আইন ও সমন্বয়। ঢাকার লুট হয়ে যাওয়া খাল গুলো এখনো উদ্ধার করতে পারিনি আমরা। দেশের এক আঙুল জলাভূমিতেও আর দখল ও দূষণ ঘটবে না, করোনাকালে রাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিক।

রক্তাক্ত জংগল

করোনাকালে আবার এক প্রাণের আওয়াজ ওঠেছে উন্নয়নের রক্তলাগা অরণ্যভূমিতে। সুন্দরবন, উপকূলীয় বন, গর্জন মাতৃঅরণ্য, গ্রামীণ বন, জলাবন, বর্ষারণ্য, পাহাড়ি বন, শালবন, চরবন। একটা ছোট্ট দেশে বনে কী বৈচিত্র্য ভাবা যায়? কিন্তু আমরা কী করেছি, উচ্ছেদ করে চলেছি আদি অরণ্যসভ্যতার ব্যাকরণ। বন্যপ্রাণেদের বাজারে তুলেছি, জংগল কেটে আসবাব ব্যবসাকে চাঙ্গা করেছি, খনিজ উত্তোলনের নাম বহুজাতিক কোম্পানির খুনখারাবি বৈধ করেছি। এই লকডাউনেরকালে এখনো বন সরাসরি বাঁচিয়ে রাখছে অনেক জীবন। আর সিডর, আইলা কী বুলবুল নয় সকল দুর্যোগে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে বনই তো বাঁচায় বাংলাদেশ। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন, রেললাইন, শিল্পাঞ্চল, খনন নানাভাবে শেষ টুকরো বনকেও তো আমরা আগলে রাখতে পারছি না। তাহলে আগামীর বিপদের দিনে দেশ ও দশের জন্য কে জোগাবে অক্সিজেন? কে হবে বৃহৎ কার্বণ শোষণাগার? দীর্ঘ সময় ধরে প্রশ্নহীনভাবে ১৯২৭ সনের এক উপনিবেশিক বনআইন বন্দি করে রেখেছে আমাদের মনোজগত। এই করোনাকালে বন নিয়ে আমাদের মনের মুক্তি ঘটুক। দেশের প্রতিবেশ, জ্ঞানজগত আর বৈচিত্র্যকে আমলে নিয়ে বন সুরক্ষার রাষ্ট্রীয় পাটাতন তৈরির এখনি সময়।

লুন্ঠিত জিনসম্পদ ও লোকায়ত বিজ্ঞান

তথাকথিত সবুজবিপ্লবের ভেতর দিয়েই বিশ্বকৃষি শৃংখলিত হলে প্রথমেই লুট হতে থাকে গ্রামীণ বীজ ও জিনসম্পদ। সোনালী আঁশের দেশে এই করোনারকালে কৃষক আছেন আরেক শংকায়। কীভাবে বুনবেন পাট? বীজ যে আসে ভারত থেকে। কেবল পাট নয়, দেশের সব্জী বীজের প্রায় পুরোটাই দখল করেছে বহুজাতিক কোম্পানিরা। আমরা বিএডিসিসহ রাষ্ট্রীয় বীজ প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বনির্ভর ও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারিনি। কিন্তু এই করোনারকালেও গ্রামে গ্রামে নারীরা নিজেদের ভেতর লাউ-কুমড়া-ঝিঙা-মরিচ বীজগুলো বিনিময় করে যাচ্ছেন। অথচ নারীর হাতে বীজ আমরা তুলে দিয়েছি সিনজেনটা, মনস্যান্তো কি কারগিলের জিম্মায়। দেশীয় বীজবৈচিত্র্য আর উৎপাদনের নানামুখী লোকায়ত বিজ্ঞানকে আমরা কদর করিনি। জেনেটিক গবেষণা কী বায়োপ্রসপেক্টিংয়ের নামে এসব ডাকাতি হয়েছে। মার্কিন কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয় আর মনস্যান্তোর মাধ্যমে বেগুনের জন্মভূমিতে আমরা টেনে এনেছি কৃত্রিম বিটিজিন। সিনজেনটার মতো বহুজাতিক কোম্পানিরা যখন দিনের পর দিন আমাদের কৃষকের সাথে প্রতারণা করে আমরা তার বিচার করতে পারিনি। কিন্তু এই নিদারুণ দু:সময়েও কিন্তু সজাগ আছে গ্রামীণ নারীর ক্ষয়িষ্ণু বীজভান্ডার। দেশীয় বীজখাতকে জোরদার করার এখনি সময়। বীজসহ সকল জিনসম্পদের ওপর রাষ্ট্রকে পাবলিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের জিনসম্পদ আর লোকায়ত বিজ্ঞানই সকল বিপদে আমাদের ওঠে দাঁড়াবার পথ দেখাবে।

কৃষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা

প্রতিদিন কৃষি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে কৃষক। কৃষিউদ্বাস্তু মানুষের সকল ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে যায়। দিনমজুর, বস্তিবাসী, গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশাঅলা তৈরি হয় নানা নতুন পরিচয়। আর এই নতুন শ্রমক্ষেত্র কৃষিউদ্বাস্তু মানুষকে উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে কোনো আত্মিক সম্পর্ক তৈরি করে না। এখানে কেবল সময় ও শ্রম বেচাকেনা হয়। আর তাই এই কৃষিউদ্বাস্তু মানুষেরা এই করোনাকালে যখন শহর ছেড়ে আবারো গ্রামে ফিরলেন তখন তৈরি হলো নতুন বিবাদ। স্থানীয় গ্রামীণ কৃষক নয়, কৃষি থেকে উদ্বাস্তু গ্রামে ফেরা এই মানুষদের মাধ্যমেই করোনার সংক্রমণ ও শংকা ছড়িয়ে পড়ছে। এতো শংকা ও আতংক চারধারে। তাও কৃষক সচল জমিন থেকে ঘর। ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এখনো মরছে কৃষক। আছে পাহাড়ি ঢল কী ঘূর্ণিঝড়ের শংকা। রাষ্ট্র করোনা সংকট মোকাবেলায় ৫০০০ কোটি টাকার কৃষিপ্রনোদণা ঘোষণা করলেও এর কতটুকু সুফল পাবেন গ্রামীণ নারী, বর্গাচাষী ও কৃষিমজুরেরা? এরাই তো দেশের কৃষিজগতের মূল হাল। আমরা এখনো কৃষক পরিচয়কে মর্যাদা ও জাতীয় স্বীকৃতি দিতে পারিনি। কোনো কৃষিপরিবারই চান না তাদের সন্তানেরা কৃষক হোক। কিন্তু করোনারকাল তো প্রমাণ করে চলেছে এমনসব বিপদে কৃষিউৎপাদন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে কৃষক পরিচয়কে সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর এইতো সময়। এই স্বীকৃতি হয়তো নতুন প্রজন্মকে কৃষিতে আরো বেশি আগ্রহী করে তুলবে। করোনা-উত্তর খাদ্য সংকট কী দুর্ভিক্ষের রাজনীতি থেকে দেশ ও দশের সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত হবে।

দরকার একটা নয়া হালখাতা

অ্যাকুয়া ডি ক্রিস্টালো ট্রিবেটো অ্যা মডিগ্লিয়ানি নামে একটা পানি আছে। এক বোতলের দাম ত্রিশ হাজার টাকা। করোনাকালে এই পানি কি মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছে? তাহলে এই পানির কী দরকার আছে এই দুনিয়ায়? দুনিয়াটাতো বিশ আর আশিতে ভাগ হয়ে আছে। আছে যুদ্ধ আর অস্ত্রের বাণিজ্য। মারণাস্ত্র কী বিলাসিতার ঝলকানি। কিন্তু এই করোনা লকডাউনে সব বাহাদুরি তো থেমে আছে। তাহলে কী দরকার এই বাহাদুর আর মাস্তানদের? করোনা-উত্তর দুনিয়াটাতো আরেকভাবেও শুরু হতে পারে। এখন যেমন চলছে কিছুটা, লাগামহীন ভোগবিলাসিতা ছাড়া। নতুন প্রজন্ম কী এই ভোগবিলাসী বাহাদুরদের বাতিল করবে? আগামী পৃথিবীর জন্য একটা নয়া হালখাতা তৈরি করবে? বাংলাদেশের এক উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ এবং করোনায় এরাই বেশি আক্রান্ত। আবার এরাই ছুটছে মানুষের পাশে বুকের দরদ ঢেলে। এই প্রজন্মই পারে হালখাতাটা বদলাতে। দশাসই সব কারখানা নয়, প্রাকৃতিকসম্পদনির্ভর এক যুতসই উন্নয়নচিন্তাকে জাগ্রত করতে।

happy wheels 2

Comments