আমরা স্থানীয় বীজ চাষ ও সংরক্ষণ করবো এবং পরস্পরের সাথে বিনিময় করবো
বিউটি সরকার, সিংগাইর, মানিকগঞ্জ
বাজার নির্ভরশীলতা কমানো এবং এলাকার বীজের সমস্যা এলাকাতেই মেটানো এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গতকাল সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চরনয়াবাড়ী গ্রামে কৃষকদের আয়োজনে ও বারসিক’র সহযোগিতায় স্থানীয় জাতের বীজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার শিমুল বিশ্বাসের সঞ্চালনায় ও সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা বিউটি সরকারের সহযোগিতায় উক্ত বীজ মেলার অনুষ্ঠানে ছিল স্থানীয় জাতের বীজের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা, স্থানীয় বীজ উপস্থাপন, বীজ বিনিময় ও লেবু গাছের চারা প্রদান। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাড়িতে বীজ সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা উন্মুক্ত মতামত প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘বীজ সংরক্ষণের সুবিধা হলো বীজ বাজার থেকে কিনতে হয় না ফলে টাকা লাগেনা। এছাড়া পোকামাকড়ের আক্রমণ কম লাগে। তাই সার, বিষ ছাড়া চাষ করা যায় ও খরচ কম হয়। বাড়িতে সংরক্ষিত বীজের ফসল খেতে যেমন সুস্বাদু হয় অপরদিকে পরিবেশের সাথে মানানসই। যখন ইচ্ছা চাষ করা যায়। সর্বোপরি ভালো মানের বীজ পাওয়া যায়।’
এক পর্যায়ে স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘কৃষক কোম্পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় বাড়ীতে বীজ সংরক্ষণ বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষকের শক্তি হলো বীজ, এই শক্তি কোম্পানি দ্বারা হরণ যেন না হয় তার জন্য বাড়িতে বীজ সংরক্ষণের চর্চা করতে হবে। এছাড়া সংকট মুহুর্তে বাড়ি থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে।’
পরবর্তীতে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় জাতের কালিজিরা, সরিষা, তিল, পুইশাক, ধনিয়া, ধান, পেঁপে, লাউ, সীম, ডাটা, চালকুমড়া ও ধুন্দল বীজ প্রদর্শন করেন এবং ১০ জন কৃষকের মাঝে বীজ বিনিময়ের মাধ্যমে কৃষকরা কৃষাণীদের হাতে স্থানীয় জাতের বীজ তুলে দেন।
বীজ বিনিময় প্রসঙ্গে কৃষক রজ্জব আলী বলেন, ‘আগে একজনের কাছ থেকে অন্যজন বীজ বিনিময় করতো। ফলে প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক তৈরি হত। এখন বাজার নির্ভরশীল হওয়ায় তা কমে গেছে।’
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘আমরা স্থানীয় বীজ চাষ ও সংরক্ষণ করবো এবং পরস্পরের সাথে বীজ বিনিময় করার মাধ্যমে স্থানীয় জাতের বীজ হারিয়ে যেতে দেব না ও সন্তানদের সুস্থ রাখার জন্য নিরাপদ খাবার তৈরি করবো।’ অনুষ্ঠানশেষে সবার মাঝে লেবু গাছের চারা বিতরণ করা হয়।