এসো প্রবীণজনের গল্প শুনি
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
বারসিক’র উদ্যোগে জয়াখালী গ্রামের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে গতকাল শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের জয়াখালী নারী সংগঠনের কার্যালযে নবীন ও প্রবীণদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি বিষয়ক এসো প্রবীণজনের গল্প শুনি শিরোনামে আলোচনা সভা ও গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচিতে জয়খালী গ্রামের কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষার্থী, শিশু ও নবীন প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্য এবং ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে আহত প্রবীণ বনজীবী আবু বাক্কার গাজীর সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিলনের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভা ও গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়। গল্পের আসরে প্রবীণ ব্যক্তিরা তাদের জীবনের স্মরণীয়, মজার, বেদনাদায়ক ঘটনা গল্পের মাধ্যমে শোনান। গল্পের বর্ণনা পরবর্তী এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রবীণ ব্যক্তি হরিপদ মুন্ডা, খগেন মুন্ডা, হোসেন গাজী, রাজমিস্ত্রি সুরাত আলী, কুলসুম বেগম, নবীন ছাত্র সজীব, উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সদস্য সাংবাদিক শাহীন ইসলাম বারসিকের রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও বিশ্বজিৎ মন্ডল সহ অন্যান্যরা।
আলোচকরা বলেন, ‘এখন আর আগের মতো দিন নেই। আগে অভাব থাকলে মানুষের মধ্যে শান্তি ছিল এখন আর সেই শান্তি নেই। কালের বিবর্তনের সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে এখন নেই সে সব সুগন্ধী ধান, দেশীয় সে সব মাছ, বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার। ছিল জারি গান, বাউল গাল, ধর্মীয় যাত্রা, ভাসান ও খেলার মধ্যে ছিল হাডুডু, হাড়িভাঙা, গাদন, মোড়ক লড়াই সহ বিভিন্ন খেলা।’ অংশগ্রহণকারী মুন্ডা জনগোষ্ঠী বলেন, ‘আমরা মুন্ডারা এখন বুনো নামে পরিচিত। আমরা যে মানুষের জন্য বসবাস যোগ্য এ আবাদ তৈরি করেছি তা কেবা জানে, কে মনে রেখেছেন? এটা নবীনদের জানা দরকার কাদের ভূমিকা ছিল এই কাজে।’
অন্য অংশগ্রহণকারী প্রবীন ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের মনের কথা আমরা যে কেমন আছি তা সকলের সামনে প্রকাশ করতে চাইনা না। আমাদের ছেলে মেয়েরা যে আমাদের কতো ভালো রেখেছে তা আমাদের মধ্যে থাকুক। যদি সম্ভব হয় প্রবীণ ও প্রতিবন্দী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সচেতনমুলক আরো অনুষ্ঠান করা। তারা যদি সচেতন হয় তাহলে আমরা প্রবীণরা ভালো থাকবো।’ নবীনরা বলেন, ‘আমাদের পিতা মাতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে তা না হলে আমরাও যখন প্রবীণ হবো আমাদের ছেলে মেয়েরা আমাদের দায়িত্ব নেবে না। প্রবীনদের কথা শুনে আমাদের খুব ভালো লেগেছে।’
আরো বেশি করে নবীন, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি আয়োজনের প্রস্তাব রাখেন অংশগ্রহণকারীরা।