প্রবীণদের সেবায় আমাদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার
‘বয়সের সমতার পথে যাত্রা’ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে প্রবীণ হিতৈষীর মানিকগঞ্জ শাখার আয়োজনে, জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা এবং বারসিকসহ বিভিন্ন এনজিওর অংশগ্রহণে গতকাল পালিত হলো আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস ২০১৯। দিবসকে কেন্দ্র করে র্যালি, আলোচনা সভা, প্রবীণ মেলা, প্রবীণদের জন্য খেলাধুলা, মেডিকেল ক্যাম্প, লিফলেট বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।
সকাল ৯.৩০মি. র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যলয় থেকে শুরু করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ স্মৃতি ফলকে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামালে সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক ফৌজিয়া খানম।
অনুষ্ঠানে ফৌজিয়া খানম বলেন, ‘প্রবীণ ব্যক্তিরা সম্মানীয় ব্যক্তি। তাদের যথাযথ সম্মান পাওয়ার অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকেরই তাদের সম্মান করা উচিত। নবীণরা যাতে প্রবীণদের সম্মান করে তাদের মধ্যে সেই নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করতে হবে। বাসে, ট্রেনে অনেক সময় প্রবীণ ব্যক্তিরা দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রত্যেকের উচিত তাদের বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
বিশেষ অতিথি এডিএম সাহিনা আক্তার বলেন, ‘প্রবীণ ব্যক্তিরা আমাদেরই মা, বাবা। প্রত্যেক সন্তানের দায়িত্ব রয়েছে তার মা-বাবাকে দেখাশোনা করার। মানুষের মধ্যে সচেতনা তৈরি করতে হবে। পরিবার থেকে আমাদের সন্তানদের শিক্ষা দিতে হবে যাতে তারা বড় হয়ে তার মা-বাবার দেখাশোনা করে। দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মফিজুল ইসলাম খান কামাল তার বক্তব্যে বলেন, ‘সরকার প্রবীণদের জন্য আইন করেছে তার বাস্তবায়ন করারও চেষ্টা করছে। প্রবীণদের জন্য সরকার ভাতা দিচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, চেয়ারম্যান, মেম্বাররা তাদের পরিচিতদের ভাতা দিচ্ছেন। কিন্তু যে ভাতা পাওয়ার যোগ্য তাঁকে দিচ্ছেন না। এক্ষেত্রে আমাদের প্রবীণদের এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন এনজিও আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে যাতে সঠিক বণ্টন নিশ্চিত হয়। পরিবারে সন্তানদের বুঝাতে হবে যাতে তারা পিতামাতার দেখাশোনা করে।’
আলোচনা শেষে প্রবীণ ও নবীনের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রবীণদের জন্য হাড়ি ভাঙ্গা, মিউজিক্যাল চেয়ার খেলার আয়োজন করা হয়। খেলাধুলা শেষে বারসিক সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শিল্পীরা গানের মাধ্যমে পিতা- মাতার ভরণ-পোষণ আইন ও তাদের প্রতি দায়িত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে প্রবীণ দিবসে ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে এ্যাড: দীপক কুমার ঘোষের ৬৫ তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়।