ভালো থাকার জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশ^জিৎ মন্ডল ও গাজী আল ইমরানঃ
বারসিক’র উদ্যোগে গতকাল শ্যামনগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরী কক্ষে করোনাকালীন সময়ে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে করনীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, সরকারী মহাসিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল, কৃষক, কৃষাণী, দিনমজুর, বনজীবী, সে¦চ্ছাসেবক সিডিও ইয়থ টিম, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম ও বারসিক কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বারসিক কর্মকর্তা গাজী আল ইমরানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শরিফ বিন শফিক, সরকারি মহাসিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মোঃ আবুল হোসেন, উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, কৃষাণী নাজমুননাহর, বনজীবী নারী শেফালী বেগম, শিক্ষার্থী শিরিন সীমা, সাবিনা পারভীন, বারসিক’র বিশ^জিৎ মন্ডল ও এলাকা সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পালসহ প্রমুখ।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শরিফ বিন শফিক বলেণ, ‘করোনা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি তাড়াতাড়ি দূর করা সম্ভব হবে না। এটাকে মানিয়ে নিয়ে আমাদের চলতে হবে। উপকূলীয় এলাকার মানুষ দরিদ্র সীমার মানুষ। এজন্য প্রতিটি পরিবারের পুরুষের পাশাপাশি নারীদের আয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। এতে করে সংসারের আয়ের পথ তৈরি হবে। তার জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানান ধরনরে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে তার খোঁজ খবর নেওয়া এবং নিজে যাতে পেতে পারে এবং অন্যরা যাতে পেতে পারে তার জন্য চেষ্টা করতে হবে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ শেষে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য ঋণ দিচ্ছে। আপনারা সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে যান তাহলে সংসারের আয়ের পথ তৈরি হবে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘নারী ও শিশুর প্রতি যে সহিংসতা তা রোধের জন্য পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে। নিজের পরিবারের ভুলগুলো আগে শুধরাতে হবে। কিশোর ও কিশোরীদের প্রজনন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, বিনোদনের ব্যবস্থা করা। সাথে কোন স্থানে বাল্য বিয়ে হলে সাথে সাথে তা প্রশাসনকে জানাতে হবে। আমাদের ভালো থাকার জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।’
সভায় বক্তারা জানান, ‘করোনাকালনি সময় ছিলো খুবই খারাপ একটা সময়। এই সময় নানান ধরনের সমস্যার দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো নারী ও শিশুরা। কারণ সেই সময়ে সবচেষে বেশি সমস্যা তাদের উপর দিয়ে হয়েছে। এই সময় প্রতিটি মানুষের কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় আয় রোজগার বন্ধ ছিলো। আর তাতেই পারিবারিক সমস্যার জন্ম নেওয়া শুরু করেছিলো।’
তারা আরো জানান, ‘এই সময় পুরুষরা বাইরে কাজে যেতে না পেরে পরিবারে সময় বেশি দিয়েছে। সেখানে ছোট খাটো সমস্যা নিয়ে পরিবারে কোন্দল তৈরি হয়েছে। এলাকাতে বাল্য বিয়ে বেড়ে গেছে। শিশুদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটেছে। তারা মোবাইল ও টিভিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের মনের ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শিশু শ্রম বেড়ে গেছে। সংগঠন গুলোতে সঞ্চয় বন্ধ হয়ে গেছে। ঋণের মধ্যে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। এই করোনার কারণে এরকম শত শত সমস্যা তৈরি হয়েছে। নারী ও শিশু চরম বিপর্যয়ে মুখে আছে। সেখান বের হওয়ার উপায় খুঁজতে হবে। আমাদের মনে হয় সব সমস্যার মুল উৎস হলো আয় না থাকা।’