দেশী জাতও ভালো ফলন দেয়
ঘিওর, মানিকগঞ্জ হতে সুবীর কুমার সরকার
মৌসুম ভিত্তিক দেশী জাতের উন্নতি সবজি পরিকল্পিত আবাদ করে একজন কৃষক লাভবান হতে পারেন। কৃষক তাঁর লোকায়ত জ্ঞান ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি কাজে সফলতা আনতে সক্ষম। ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের গাংডুবী নতুন পাড়া গ্রামের একজন তরুণ কৃষক মো: রফিকুল ইসলাম রফিক (৩৯)। প্লট আকারে দেশী উন্নত জাতের টমেটো, শস, করলা, মরিচ ও বরবরটি, ফুলকপি ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করে এমন সফলতা এনেছেন। সমৃদ্ধ কৃষক রফিকুল ইসলামের গত কয়েক বছরের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষকের সবজি চাষ বাড়ছে।
তরুণ কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে বসতবাড়িতে ভিন্নভাবে সবজির আবাদ শুরু করেন সাথে সাথে, বর্ষাকালে চাষের জমি পরিষ্কার করে জমিতে গোবর ও কচুরীপানা প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করেন তিনি। বারসিক ও কৃষি অফিসের পরামর্শে ৪০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে দেশী জাতের সবজি উন্নতভাবে আবাদ করেন। বাজারে সবজির চাহিদাও প্রচুর। কৃষক রফিকুল ইসলাম সবজির আবাদে জৈবসার ও জৈববালাই ব্যবহার করেন যা নিজেই বাড়িতে প্রস্তুত করেন এবং সারাবছরের জন্য সংগ্রহ করে রাখেন। মৌসুমে করলা, টমেটো, মরিচ, বর্বরটি, ফুলকপির আবাদ ভালো হয়েছে কৃষক রফিক মনে করছেন এক-একটি টমেটো গাছ থেকে ২০ কেজি করে টমেটো পাবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে টমেটো, মরিচ, ফুলকপি থেকে ভালো আয় করতে পারবেন। কেবল সবজি চাষ করে রফিক এখন আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ। নিচু ও বর্ষার এলাকা হওয়ায় ছয়মাস সবজির ফলন পাওয়া যায়। মালচিং আবাদে কৃষকের ব্যয় কম।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে জমিতে যে কেউ সবজির আবাদ করে রফিকের মত লাভবান হতে পারেন। এ পদ্ধতিতে আগাছা কম হয়, জমিতে রস থাকে কৃষকের খরচ কম হয়। সবজির আবাদ দিয়ে এ কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন।’ এ কৃষকের সবজির চাষে সফলতা দেখে এলাকার কৃষক মুজিবর রহমান, আজাদ মিয়া, গগন মিয়া, তালেব মিয়া, আইয়ুব কাজী, সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
রফিক বলেন, ‘মনযোগ দিয়ে কৃষিকাজ করলে সফলতা পাওয়া যায়। আমাদের কৃষিস্বপ্ন দিয়েই আমাদের দেশটা কৃষি উৎপাদনে ভরে উঠবে। আমাদের কৃষি থেকে দেশী উন্নত জাত হারিয়ে যাচ্ছে। হাইব্রিড কৃষির আবাদ বাড়ছে। দেশী জাতও ভালো ফলন দেয় ভেবেই সবজির আবাদ করছি। সবজির চাষের গুণেই আমি আর্থিকভাবে খুব ভালো আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার সবজি আবাদের সফলতা দেখে এলাকার আরও কয়েকজন কৃষক আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করেছেন। আমি প্রতিবছর বাড়িতে সবজির চারা উৎপাদন করি, বাড়িতে সবজির বীজ রাখি বারসিক’র মাধ্যমে আমার বাড়িতে একটা কৃষক বীজ বাড়ি আছে, আমার ফসল ঘরে উঠলে ভালো বীজগুলো বীজ ঘরে কৌটা, ড্রাম, কলসে যতœ করে রাখি।