পরিবেশ সুরক্ষায় নীম গ্রাম নগুয়া
নেত্রকোনা থেকে আ. রব
দিন দিন ঔষধি গাছ কমে গেছে। নীম একটি মহাঔষধি গাছ। যার পাতা থেকে মূল পর্যন্ত প্রতিটি অংশ কাজে লাগে। এই ঔষধি গাছটি কমে কমে শূন্যের দিকে চলে গেছে। তারপরও অনেক উদ্যোগী মানুষের চেষ্টায় টিকে আছে আমাদের আঙিনায়।
নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের নগুয়া গ্রামের কৃষক-কৃষাণীরা গ্রামের উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করার জন্য কৃষকরা গড়ে তুলেছে “সবুজ শ্যামল কৃষক সংগঠন” নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটি বিগত কয়েক বছর ধরে এলাকার উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করে আসছে। গ্রামীণ বীজঘর, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, নিরাপদ সবজিচাষ, ধানের জাত বাছাই, ভার্মিকম্পোস্ট তৈরি ও ব্যবহার করে যাচ্ছেন সংগঠনের সদস্যরা । পাশাপাশি সংগঠনের সভাপতি কবিরাজ নূরুল ইসলামের সহায়তায় নগুয়া গ্রামকে নীম গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছেন গত পাঁচ বছর ধরে। ২০১৮ সালে একশত নীমের চারা রোপণ করে প্রাথমিক কাজ শুরু করেন গ্রামের কৃষক কৃষাণীরা। গত পাঁচ বছর ধরে নিয়মিতভাবে কাজ করে বর্তমানে ৫০০টি গাছ রোপণ করেছেন। বর্তমানে গ্রামের প্রতি বাড়িতেই নীম গাছ আছে।
গত মাসে গ্রামের কৃষক কৃষানিা নীম গাছের গুণাগুণ নিয়ে এক আলোচনা ও এর উপকারিতার বিষয়ে জানানোর জন্য নতুন প্রজন্মকে নিয়ে এই আলোচনার আয়োজন করেন সবুজ শ্যামল কৃষক সংগঠন। গ্রামের যুবক, কৃষক, কৃষাণীরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় কথা বলেন আশুজিয়া গ্রামের ফসলের হাসপাতালের ব্যবস্থাপক কৃষক আবুল কামাল। তিনি জানান, নীম গাছ দিয়ে ফসলের পোকা দমনের জন্য বালাইনাশক তৈরি করি। গ্রামের যুবক রাব্বি জানান, তিনি নীমের ডাল দিয়ে প্রতিদিন দাঁত মাজেন। তার দাঁতে এখন আর ব্যাথা হয়না। গ্রামের অনেকেই নীমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজেন। অনেকেই রোগ নিরাময়ের জন্য নীমের পাতা ভাজি করে খেয়ে থাকেন। কৃষাণী রোকেয়া জানান, নীম গাছ বাড়ির পাশে থাকলে অনেক পোকামাকড় আক্রমণ করেনা।
আশেপাশের গ্রাম থেকে অনেকেই নিমের ডাল, পাতা সংগ্রহ করার জন্য আসেন। মাটি, পানি ও বায়ুকে বিশুদ্ধ রাখার জন্য প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় নগুয়া গ্রামের সবুজ শ্যামল কৃষক সংগঠনের সদস্যদের এ উদ্যোগ পাশের গ্রামসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।