করোনায় অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা ও অনিরাপদ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নিম্ন আয়ের মানুষ

সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান

বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপি মহা আতংকের  নাম করোনা ভাইরাস। সর্বপ্রথম চীনের উহান প্রদেশে এর সংক্রমণ হলেও আজ তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপি। বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ হয়েছে। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কে ইতিমধ্যে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে। ৮মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশেও  করোনা ভাইরাসের পার্দুভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

আর করোনার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার  নিম্ন আয়ের মানুষ ভুগছেন অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা ও অনিরাপদ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। কেননা বাংলাদেশের অন্যন্য উপজেলার মত মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।

সিংগাইর উপজেলা মানিকগঞ্জ জেলার পূর্বে এবং রাজধানী ঢাকার পশ্চিম পাশ ঘেঁষে অবস্থিত একটি কৃষি নির্ভর অঞ্চল।  অঞ্চলের লোকের ৬০ ভাগ লোকের পেশা কৃষি। তাছাড়া জেলে, বাঁশ-বেতের কাজ, রাজমিস্ত্রী, রিক্সা ও ভ্যান চালক, কৃষি দিনমজুর, ইটভাটার শ্রমিকসহ নানা শ্রেণীপেশার মানুষ রযেছে।

প্রতিদিনের উর্পাজনে চলে তাদের সংসার। কিন্তু এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশের ন্যায় উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষগুলো হয়ে পরেছে কর্মহীন। উপজেলায় করোনা শনাক্ত হওয়া জেলা শহর লকডাউনের কারনে ঘরবন্দি আছেন মানুষ। প্রতিদিন উপার্জন করতে না পারা নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে তাই নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ও সামাজিক সংগঠনের ত্রাণ সহযোগিতার উপর। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তা পেলেও তা কর্মহীন মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়। অন্যদিকে এখানকার শাক সবজি চাষিরা পড়েছে বিপাকে।

এ বিষয়ে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের ব্রিকালিয়াকৈর নয়াপাড়া গ্রামের সবজি কৃষক মো. হযরত আলী বলেন। “এ বছর আমার সবজির ফলন ভালো হলেও বাজারে নিলে বিক্রিত অর্থ দিয়ে আমার খরচ না উঠায় প্রতিবেশীদের মাঝে বিতরণ করছি। আমরা চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। জমি চাষাবাদ, বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচের জন্য যে ব্যয় হয় তা আমরা এ সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে মিটিয়ে থাকি। এ বছর আমরা এ ব্যয় কি ভাবে মিটবো? তাই এ বিষয়ে সরকার আমাদের কোন সহযোগিতা না করলে আমরা মহাবিপদে পড়বো। তাই সরকারের কাছে আমাদের জোরালো দাবি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি করে যেন আর্থিক প্রনোদনা দেওয়া হয় যা দিয়ে আবারও চাষিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।“

অন্যদিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সিংগাইর উপজেলা নারী উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক সেলিনা বেগম বলেন, “অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি বেড়ে চলেছের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা। শারীরিক দুরত্ব তৈরিতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও হাটবাজারগুলোতে সাধারণ মানুষের জনসমাগম বেশী হওয়ায় আক্রান্তের হার বাড়তে পারে ব্যাপক ভাবে”।

তাছাড়া সরকারি ভাবে করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব খোলা হলেও বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব অনুযায়ী তা অপ্রতুল। তাই সাধারণ সর্দি, কাশি, ঠান্ডা, জ্বর না হয সেই দিকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে হবে।

উল্লেখ্য বারসিক সিংগাইর উপজেলার বলধারা এবং বায়ারা ইউনিয়নের বাংগলা, কাস্তা, সোলাই, নবগ্রাম, গোলাই, ব্রী-কালিয়াকৈর নয়াপাড়া, বায়রা, নয়াবড়ি, নয়াবাড়ি আদর্শ গ্রাম, গাড়াদিয়া, জামালপুর মধ্যপাড়া সহ ১২ টি গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা মুলক কার্যক্রম চলমান রেখেছে যেন জনগোষ্ঠীর মাঝে করোনা মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

happy wheels 2

Comments