স্বপ্ন দিয়ে জীবন রাঙাই
ঢাকা থেকে সুদিপ্তা কর্মকার
‘এসো স্বপ্নের ছবি আকিঁ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে বারসিক’র সহায়তায় গত ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ইং তারিখে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদ উদ্যান এ অবস্থিত ‘পাইওনিয়ার হাউজিং (সোনামিয়ার টেক)’ বস্তি এলাকার স্কুলগামী শিশু-কিশোরদের নিয়ে একটি চিত্রাংকন প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। মোট ২৫ জন শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ছিল ১৫ জন ছাত্রী এবং ১০ জন ছাত্র।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই আমাদের এই বস্তিবাসী সুবিধাবঞ্চিত ছোট্ট শিশুদের মনের মধ্যে লালন করা স্বপ্নগুলো ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পলন করবে। এই বস্তিবাসী শিশুরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে, অনেক না পাওয়ার মধ্য দিয়ে বড় হচ্ছে। যেখানে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো পেতেই প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয় সেখানে ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখাটা খুব অবাক করা বিষয়। কিন্তু আমাদের শিশুরা স্বপ্ন দেখে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। তারা চায় পড়ালেখা শিখে বড় হয়ে ভাল কিছু করার। অংশগ্রহণকারী তামান্নার মতো সোনিয়া, রিতু, সীমার ইচ্ছা তারা বড় হয়ে ডাক্তার হবে। আবার ইয়াসিন, রিপনরা হতে চায় পুলিশ অফিসার এবং শাকিল মিয়া, সাফিয়া, রতন হতে চায় শিক্ষক এরকম অনেক ইচ্ছের কথাগুলি আমরা জানতে পারি আলোচনা ও ছবি আঁকার ফাঁকে ফাঁকে।
বেশ কিছু সময় কাজ করার কারণে জানা যায় এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ নদী ভাঙনের কারণে উপকুলীয় জেলা থেকে ঢাকায় এসেছে। এই সব শিশুরা কেউ কেউ খুব ছোট থাকতে এখানে এসেছে আবার কারও কারও জন্ম এই ঢাকা শহরের বস্তিতেই। নগরের এই পরিবেশে বসবাস করলেও তাদের মনের কোণে এখনও সুন্দর একটি সবুজ গ্রামের ছবি প্রোত্থিত রয়েছে, যেখানে রয়েছে নদী, গাছ, পাখি, সবুজ গ্রাম ও আরো অনেক কিছু। এই শহরে তারা বাস করলেও এই শহরকে আপন করে নেওয়ার মতো কোন শিশুবান্ধব পরিবেশ আমরা করতে ব্যর্থ হয়েছি যার জন্য এই শহরকে শিশুরা আপন করে নিতে পারেনি। গ্রাম এখনও তাদের কাছে স্বপ্নের মতো। হয়তো এমন গ্রামের কথা তাদের কেউ কেউ নিজেরা দেখেছে বা তাদের বাবা-মা দাদা দাদী দের কাছ থেকে শুনেছে।
আমরাও চাই শিশুরা আরও স্বপ্ন দেখুক। তাদের কল্পনার রাজ্যে আরও অনেক আশা স্বপ্ন ভর করুক। কারণ যারা স্বপ্ন দেখতে জানে তারা শতবাঁধা সত্ত্বেও স্বপ্ন বাস্তবায়নও করতে জানে। আর আমাদের সকলের উচিৎ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের স্বপ্নের মত পরিবেশ উপহার দেওয়া, যাতে তারা তাদের মনের স্বপ্ন বা ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে পারে। তাই বাড়িয়ে দিন আপনার সহযোগিতা হাতে এই বস্তিবাসী সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের দিকে যাতে তারা বড় হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।