স্বাধীনতা আমাদের আত্মপরিচয়
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এদিনটি একই সঙ্গে বেদনা এবং আনন্দের। ১৯৭১ সালে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি দেশের অর্ন্তভুক্তি ঘটে এ দিনে। এ দিনের নতুন সূর্য্যদোয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনে একটি নতুন অধ্যায়যের সূচনা। এই স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ উজ্জল মূহুর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে তা হলো এ দেশের অসংখ্য দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার মানুষ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক স্বৈরশাসনের ২৪ বছরের গ্লানি থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ। লাখ লাখ শহীদের রক্তে রাঙানো আমাদের স্বাধীনতার সূর্য। তাই এ দেশের স্বাধীনতা দিবস সব চাইতে গৌরবময় ও পবিত্র দিন।
এ দিনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক সংগঠনগুলো বাস্তবায়ন করে নানা ধরনের কর্মসূচি। তারই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ সকাল সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের কালিয়াকৈর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় কালিয়াকৈর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কতৃপক্ষ অনুষ্ঠানটির আযোজন করে ।
অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা ও আলোচনা সভা। মাদ্রাসার সহকারি সুপারেটেডেন্ট মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন মাদ্রাসার সুপারেনেন্টেট মো. আবুল হোসেন। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সহকারি শিক্ষক মো. আব্দুল হালিম, মো. মাহাবুল আলম, মো. আউলাদ হোসেন, শিক্ষিকা লায়লা আক্তার, দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আয়শা আক্তার, মিথিলা, সাদিয়া সুলতানা, নুসরাত জাহান, স্বপন হোসেন, আবুল হাসান প্রমুখ।
মাদ্রাসার সুপারেটেডেন্ট মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘২৬ মার্চ থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরু হয়। দ্বিজাতি তত্বের অনাচার অত্যাচার থেকে বেরিযে আসতে এ দেশের আপামর জনসাধারণ ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক জাতীয়তা প্রত্যাখ্যান করেই স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। তাই স্বাধীনতার চেতনা বোধে জাগ্রত হয়ে অসম্প্রাদায়িক চেতনা লালন করে উন্নত দেশ গড়ার দৃঢ় মানসিকতা অর্জন করতে হবে। তাহলেই আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব হবে।’ সহকারি শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার রয়েছে এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। স্বাধীনতা আমাদের আত্মপরিচয়। দেশের স্বাধীনতাকে কখনোই বিকৃত করা যায় না। শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্য পুস্তকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। নিজ দেশ সম্পর্কে জানা ও স্বাধীনতার চর্চা বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের বই পড়তে হবে।’
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, ‘স্বাধীনতা আমাদের সামনে চলার অনুপ্রেরণা। সকলের সমঅধিকার ও নায্যতা প্রতিষ্ঠার জন্যই দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু এই স্বাধীন দেশে এখনো আমাদের নারী সমাজ নিরাপদ নয়। স্বাধীনতাকে ধারণ করে আমাদের সামনের পথ চলতে হবে এবং আগামীর বাংলাদেশ আমাদের গড়তে হবে।’ শিক্ষার্থী স্বপন হোনেস বলেন, ‘২৬ মার্চ বাঙালিদের মুক্তির উদ্ধিপ্ত হওয়ার প্রেরণা। কিন্তু আমারা স্বাধীন হয়েছি ঠিক আমাদের দেশের অনেক মানুষ এখনো নানা ধরনের বৈষমের শিকার। তাই স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন প্রজন্মকেই দুর করতে হবে সমাজ থেকে নানা ধরনের বৈষম্য, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, বেকারত্ব দারিদ্র। অজর্ন করতে হবে অর্থনেতিক সমৃদ্ধি। তাই আসুন সংঘাত, হানাহানি, নিজ স্বার্থ চিন্তা জলাঞ্জলি দিয়ে দেশ গড়ার কাজে ব্রত হই।’