সাম্প্রতিক পোস্ট

পুষ্টিকর খাদ্যই হবে আকাঙ্খিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী

পুষ্টিকর খাদ্যই হবে আকাঙ্খিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার ও মো. মাসুদুর রহমান

‘মাত্রারিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও পতিত জমির অভাবে আপনজালা উদ্ভিদের মত পুষ্টিকর উদ্ভিদ বৈচিত্র্য আজ বিলুপ্তির পথে। এ সকল উদ্ভিদ গ্রামের পুষ্টির চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। গ্রামের নারীরা ১০০ ধরনের কাজের মধ্যে দিয়ে তাদের জীবন চলে।’ বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষৎ: পুষ্টিকর খাদ্যই হবে আকাঙ্খিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী’ সামনে রেখে ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী, ইউনিয়নের বহুজা গ্রামের মো. বাবর আলীর বাড়িতে স্থানীয় নারী সদস্য ও বারসিক’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত অচাষকৃত খাদ্য উদ্ভিদ প্রদশর্নী, রান্না ও আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন।

20191016_113759
অনুষ্ঠানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা বেশি উৎপাদনের আশায় পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বেশি ব্যবহার করার কারণে। অন্যদিকে আমাদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। আমরা নিজেদের বাড়ি ঘর তৈরি করতে ফসলি জমি নষ্ট করছি। আমাদের বাড়ির চারপাশে যে সব উদ্ভিদ জন্মে সেগুলোর পুষ্টিগুণ যে কত তা জানতে চাই না। বারসিক’র এ ধরনের উদ্যোগ আগামী প্রজন্মের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।’

20191016_113933
গাংডুবী কৃষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল্য মন্ডল বলেন, ‘আমরা ছোট বেলায় আমার মাকে দেখতাম বাড়ির চারপাশের শাক কুড়িয়ে কুড়িয়ে রান্না করতেন। বাজার থেকে কোনদিন শাক কিনতে হতো না।’ অন্যদিকে এসডিআই বানিয়াজুরীর সমৃদ্ধি কর্মসূচি সমন্নয়কারী মো. শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি পরিবার থেকে আবার শুরু করতে হবে অচাষকৃত উদ্ভিদের ব্যবহার করার। এগুলোকে রক্ষা আমাদের সকলের জন্য জরুরি এবং দায়িত্বও বটে।’

কৃষক গবেষক মো. মাসুদ বিশ^াস বলেন, ‘আমরা গ্রামে থেকে গ্রামের বৈচিত্র্য হারিয়ে ফেলছি। এমন উদ্যোগ প্রতিটি গ্রামে গ্রামে করা উচিত। রাস্তার ধারে বাড়ির চারপাশে যে উদ্ভিদ পাওয়া যায় তা যেন নষ্ট করা না হয় তার জন্য সকল পরিবারের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে এসব উদ্ভিদগুলোকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনসহ কৃষি কাজে নারীর রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক স্বীকৃতি চাই এবং আমাদের পরিবারের অভাব ঘুচাতে পারলে আমরা নিরাপদ খাবারে যেতে পারবো।’ এছাড়া অনুষ্ঠানে এলাকার নারী নেত্রী শারমীন আক্তার নতুন প্রজন্মের নিকট অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ তুলে ধরেন।

20191016_114950
অচাষকৃত খাদ্য রান্না প্রতিযোগিতায় শামসুর নাহার বৌটুনি, সেঞি, বনকচু, তেলাকুচ, কলমী, শাপলা, ডিমা, থানকুচি, পুই, কাটানুটা শাক রান্না করে ১ম স্থান, পারভীন আক্তার ২য় এবং কছরিন বেগম ৩য় স্থান লাভ করেন। এছাড়া রান্না প্রতিযোগিতায় মোট ১৯ জন নারী রান্না অংশ নেন। অন্যদিকে ১৫ জন নারী অচাষকৃত উদ্ভিদের প্রদর্শনীতে অংশ নেন।

happy wheels 2

Comments