নিরাপদ খাদ্য বিপননে আলাদা কর্নার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি স্থানীয় কৃষি বিভাগের
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে বিউটি সরকার
সিংগাইর উপজেলার নয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক কৃষাণিদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের খ্যাতি রয়েছে এলাকায়। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদক হিসাবে এ গ্রামের কৃষকগণ ইদানিং সমাদৃত হয়েছে সিংগাইর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে। যোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়াসহ সম্পর্ক উন্নয়ন হয়েছে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সকল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে। ফলে নয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক কৃষাণিগণ সরকারি সেবা সহযোগিতা পাওয়ার মাত্রা বেড়েছে। উল্লেখ্য যে, বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কৃষকরে সম্মিলিত করে সাংগাঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কৃষি অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।
সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের নয়াবাড়ী কৃষক সংগঠনের সদস্য শহিদুল ইসলাম ও শহর আলীর লাউয়ের প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন মানিকগঞ্জ জেলার কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) আশরাফুসজামান। নিরাপদ খাদ্য উৎপানের খামার পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘মানিকগঞ্জে নিরাপদ খাবার উৎপাদক হিসাবে ইমান আলী , কমলা বেগম, জয়তুন বেগম, ইব্রাহিম মিয়া, শহীদুল ইসলাম শহরআলীসহ বেশ কিছু কৃষকের নাম শুনি, তাদেরকে মুখোমুখি না দেখলে ও নামেই তাদের সাথে পরিচিতি হয়েছি। আজ তাদের সাথে আলাপ করে ভালো লাগলো।’
উক্ত প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শনে আরো যুক্ত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য)আমিনুল ইসলাম,সিংগাইর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন, বায়রা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা ফেরদৌস আহম্মেদ। এছাড়া নয়াবাড়ী কৃষক সংগঠনের সভাপতি ইমান আলী, সদস্য শহিদুল ইসলাম এবং নয়াবাড়ী আর্দশগ্রাম কৃষক সংগঠনের সদস্য শহর আলী উপস্থিত ছিলেন। কৃষক শহিদুল ইসলাম পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচানোর জন্য ব্যবহৃত সেক্স ফেরোমেন ফাঁদের উপকারিতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করার ফলে লাভ বেশি এবং খাদ্য নিরাপদ হয়।’ সেক্স ফেরোমেন ফাদঁ ব্যবহার প্রসংগে অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করলে কোন বিস লাগেনা, পোকামাকড় মারা যায়। খাবার নিরাপদ থাকে।’
তিনি কৃষকদের কৃষি বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতার জন্য কৃষি অফিসে যাওয়া ও যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন। বাজার ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন কৃষকদের নিরাপদ সব্জি স্থানীয়ভাবে বিক্রি বিষয়ে বলেন, ‘বায়রা বাজারে একটি নিদিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দেব যেখানে কৃষকরা তাদের নিরাপদ সব্জি ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারবেন।’
প্রসংগত সংগঠনের সদস্য শহর আলী কৃষকদের নিরাপদ সব্জি ঢাকার কৃষক বাজারে বিক্রি করেন। এছাড়া ঢাকা প্রাকৃতিক কৃষি বিপনন কেন্দ্রেও পাঠানো হয়। তারপরও কৃষকদের অনেক নিরাপদ সব্জি থেকে যায়, যা তারা ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারেন না। কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন আরো বলেন, ‘আমরা ঢাকার কৃষি বিভাগের সচিবদের সাথে দেখা করার সুযোগ না পেলেও কৃষক শহর আলী তার সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছেন যা অন্যান্য কৃষকদের অনুপ্রাণিত করেছে।’ কৃষক শহিদুর ইসলামের লাঊক্ষেতে পোকাদমনে ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করা এবং কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি অন্যান্য কৃষকদেরকেও অনুপ্রাণিত করেছে, যা নিরাপদ খাদ্য তৈরির উদ্যোক্তা তৈরি হতে সহায়তা করবে।