সকলে মিলে দুর্যোগ ঝুুঁকিহ্রাসে কাজ করবো
মানিকগঞ্জ থেকে কমল চন্দ্র দত্ত, গাজী শাহাদাত হোসেন ও শ্যাময়েল হাসদা
‘সচেতনতার সাথে দুর্যোগ মোকাবেলা করি, নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করি”-এ শ্লোগানকে সামনে রেখে কৃষক-কৃষাণী ও যুব সংগঠনের আয়োজনে এবং বারসিক’র সহযোগিতায় বেতিলা নাটমন্দিরে যুব ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস মোকাবেলা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারসিক মানিকগঞ্জ কর্মসূচি সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান, প্রোগ্রাম অফিসার কমল চন্দ্র দত্ত, সহযোগী কর্মসূচী কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন, সহযোগী গবেষণা কর্মকর্তা শ্যাময়েল হাসদা, কৃষি গবেষক মো. ইউসুফ আলী, যুব, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী ও কৃষক-কৃষাণী মোট ৪৯ জন অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ হলো প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট। এর প্রভাবে জীবন ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। বিপদ, আপদ ও ঝুঁকি হ্রাস, দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি, দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিচু ঘর-বাড়ী মাটি দিয়ে উচু করা, নৌকা রাখা, বর্ষার সময় বিষাক্ত সাপের হাত রক্ষা পাবার জন্য ঘর পরিষ্কার রাখা, কার্বলিক এসিড রাখা, শুকনা খাবার স্যালাইন রাখা, বজ্রপাতের সময় মাঠে থাকলে রক্ষা পাবার জন্য মাথা নিচু করে বসে থাকা, বেশি বেশি তাল ও খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন। কারণ উচু গাছ বজ্রপাত থেকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখে।’
কৃষাণী সুমি আক্তার বলেন ‘দুর্যোগ, আপদ, ঝুকি সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানলাম, শিখলাম। দুর্যোগ আসলে আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে পারবো এবং নিজের, পরিবারের সেবা মূলক কাজ করে কিছু টা হলেও ঝুকি কমাতে পারবো। কৃষক মোঃ নুরুল হক ‘বারসিককে ধন্যবাদ জানান। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুর্যোগ বিষয়ে আমরা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারলাম, যা আমাদের অনেক উপকারে আসবে। আমরা সকলে মিলে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।’
অংশগ্রহণকারী মধ্যে থেকে একজনকে ইউনিয়ন পরিষদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। যাতে নিজ এলাকার দুর্যোগকালীন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কিছু ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতা পায়।
এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্যে কমল চন্দ্র দত্ত বলেন, ‘দুর্যোগ প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট ঘটনা যা মানুষের স্বাভাবিক জীবসযাত্রাকে ব্যাহত করে।’ তিনি বিভিন্ন দুর্যোগ যেমন- খরা, বন্যা, নদীভাঙন, কালবৈশাখী ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস টর্নেডো ইত্যাদি কিভাবে সংগঠিত হয় এবং এর ফলে জনগোষ্ঠীর কি ধরণের ক্ষয়ক্ষতির সন্মুখীন হতে হয় এবং ঝুঁকি হ্রাস ও মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতি ও করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন দুর্যোগ বাধা সৃষ্টি করে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ এলাকায় ভাসমান বীজতলা তৈরি করতে হবে এবং বন্যা সহনশীল ফসল উৎপাদন করতে হবে।’