সবাই একসাথে কাজ করে সমাজটাকে পরিবর্তন করব
মানিকগঞ্জ থেকে ঋতু রবি দাস
“জেন্ডার সমতার জন্য নারীর ক্ষমতায়ন অগ্রগণ্য” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সম্প্রতি স্যাক কার্যালয়ে জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে কমিটির পুনর্গঠন করা হয়। সভায় সিংগাইর, হরিরামপুর এবং মানিকগঞ্জ থেকে সংগঠনের নারীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মী চ্যাটার্জি, নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা, পারডোর শামীমা আক্তার, জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন শামীমা আক্তার চায়না আরোও উপস্থিত ছিলেন বারসিক কর্মী এবং কর্মকর্তাগণ।
সভায় আন্ধারমানিক নারী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি রিমা আক্তার বলেন, তাদের গ্রামে বাল্য বিয়ের হার অনেক। তারা কয়েকজন নারী নকশীঁ শাড়ি, পাঞ্জাবি সেলাই করেন। তাতেও তাদের সমস্যা হয় কিন্তু মাস শেষে হাতে যখন টাকা পান সেটা তারা নিয়ে নেয়। তিনি আরও বলেন, বারসিক’র কাজের সাথে পুরুষদের আরোও বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। তাহলে তাদের চিন্তা ধারার উন্নতি হবে।’ সিংগাইর এলাকার আর একজন নারী সদস্য বলেন, বারসিক’র মাধ্যমেই আমার স্বামী ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তার প্যারালাইজড হয়েছে এবং বারসিক কর্মীর মাধ্যমেই তার স্বামী সমাজসেবা থেকে এই অনুদান পেয়েছেন। বারসিক এর কাজের জন্য এখন আমরা নিজেরাই সব জায়গায় যেতে পারি। বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এগুলোর জন্য আবেদন করতে পারি।’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা বলেন, নারী হয়ে যদি আমি সংগঠন না করতাম, রাজনীতি না করতাম তবে কোনদিনই কাউন্সিলর হতে পারতাম না। নারীদের সব কিছুতেই এগিয়ে আসা উচিত সেটা রাজনীতিই হোক বা অন্য কিছু। নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়া অনেক প্রয়োজন।’ লক্ষ্মী চ্যাটার্জি বলেন, আমাকে দেখে অনেকেই ভাবে আমি সারাদিন রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকি আমি বাড়ির কোন কাজ পারি না বা করি না। তবে আমি মুড়ি ভাজা থেকে শুরু করে সব কাজ পারি আর এই কাজগুলো আমার বাবা শিখিয়েছেন। আমি নিজের কাজ নিজেই করি, ঘরও সামলাই এবং বাইরেও সামলাই। নারীদের শুধু ঘরের কাজই করলে হবে না বাইরের জগৎটাকেও দেখা উচিত।’ বারসিক সহযোগী কর্মসূচী কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান বলেন যে, আমরা কিভাবে বুঝতে পারব যে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, তাহলে একটা উদাহরণ দেই এইবার কাতার ফুটবল বিশ^কাপ‘এ’ প্রধান চিকিৎসক হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশী নারী চিকিৎসক চট্টগ্রামের মেয়ে আয়েশা পারভীন। তাহলে দেখুন নারীরা কত এগিয়ে গেছেন।’
সবার মতামতের ভিত্তিতে শামীমা আক্তার চায়নাকে সভাপতি করে এবং ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা নারী উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা মন্ডলী রাখা হয়।
এর আগে সভার শুরুতেই প্রারম্ভিক আলোচনা শুরু করেন বারসিক‘র’ আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়। তিনি জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তারপর উপস্থিত সবাই নিজের পরিচয় দেন। বিমল রায় অংশগ্রহণকারীদের একটা দলীয় কাজ দেন। উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের ৪টি দলে ভাগ করা হয়। তাদের কাজ, তাদের বাধা, তাদের স্বপ্ন এবং তারা তাদের স্বপ্নের কেমন রূপ দেখতে চান এই বিষয়ে কাজ করেন। প্রত্যেক দল থেকে দুই জন অংশগ্রহণকারী এসে ব্রাউন পেপারে তাদের কাজগুলো উপস্থাপন করেন। তাদের কাজের মধ্যে বিভিন্ন পারিবারিক, সামাজিক কাজ এবং বাঁধাগুলো উঠে আসে।