করোনা সম্পর্কে গ্রামের মানুষ আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সচেতন
রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন
সচেতনতায় পারে একজন মানুষকে দৃঢ়বান করে তুলতে। মহামারি করোনা দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে মানুষের জীবনকে জর্জরিত করে দিয়েছে। এই মহামারিতে সব বয়সের সকল পেশার মানুষকে জীবনের ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিখিয়েছে।
এ বিপর্যয়ে সময়ে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ করোনাকে ভয় করতেন না। গ্রামের মানুষ মনে করতেন শহরে ও বড় লোকদেরই করোনা হবে তাদের মতো গরীবদের করোনা হবে না। তাই অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়াই রাস্তাঘাটে ও হাট বাজারে চলাফেরা করতেন। শুধু হসপিটালে গেলে বাধ্য হয়ে মাস্ক পরিধান করতেন। এত কঠোর লকডাউনের মধ্যে ও গ্রামের দোকানপাট খোলা বিকালে ও সন্ধ্যায় মোড়ে মানুষের চা-য়ের আড্ডা ও কৃষকদের জীবনের সুখ দুঃখের গল্প চলমান থাকতো।
তবে বারসিক’র মাধ্যমে লিফলেট বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, হাত ধুয়ার নিয়ম শেখানোর মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হয়েছে। করোনা সম্পর্কে তাদের ধারণাও পাল্টাতে সাহায্য করেছে এই সংগঠনটি। ফলশ্রুতিতে আগের তুলনায় গ্রামের মানুষ অনেক সচেতন হয়েছেন। করোনা যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে-তাই সাবধানতা অবলম্বন ও স্বাস্থ্যবিধি মানা জরুরি-এ সম্পর্কে গ্রামের মানুষ উপলদ্ধি করেছেন।
করোনা সম্পর্কে সচেতনতার মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও পরবর্তীতে ভ্যাকসিন আসার পর গ্রামের মানুষেরা ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী ছিলেন না। তারা মনে করতন ভ্যাকসিন নিলে বড় ধরনের সমস্যা হবে। তাই ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেননি অনেকে! এ বিষয়েও বারসিক গ্রামের মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে। ভ্যাকসিন নিলে সমস্যা হবে না বরং উপকৃত হবেন-এ বার্তাটি গ্রামের মানুষের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করেছে সংগঠনটি। আজ গ্রামের মানুষ আস্তে আস্তে বুঝতে পারছেন ভ্যাকসিন নিলে তাদের ভালোই হবে।
তাই তারা এখন ভ্যাকসিনের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করছেন। কিছু দিন আগে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু করা হয়েছিল সেখানে লম্বা লাইন ধরে ভ্যাকসিন নিতে দেখা যায় গ্রামের অনেক মানুষকে, যারা এতদিন ভয় পেয়েছিলেন এ ভ্যাকসিন নিতে। গ্রামের মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাই তারা ভ্যাকসিনের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করছেন এবং ম্যাসেজ আসার পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে লাইন ধরে টিকা নিচ্ছেন।
বিভিন্ন সভা পরামর্শ, সচেতনতার জন্য মানুষের মধ্যে এতো বদল দেখা দিয়েছে। আসলে সচেতনতায় পারে মানুষকে সুর্স্পূণভাবে গড়ে তুলতে।