কৃষক হরেন সরকারের লোকায়ত কৃষিচর্চা
চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে রায়হান কবির রঞ্জু
সম্প্রতি চাপাইনবাবগন্জ জেলা নাচোল উপজেলা কসবা ইউনিয়ন পাইকোড়া গ্রামের কৃষক হরেন সরকার (৪৮) গত ৮ বছর পূর্বে ৩ ছেলে স্ত্রীসহ পরিবারে ৫ সদস্য নিয়ে চলতো তার জীবন সংগ্রাম। অন্যের বাড়িতে বিভিন্ন কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই চলতো তার সংসার। আয় কম হওয়ায় সংসারে সবসময়ই অভাব অনটন লেগেই থাকতো। এই অভাব অনটন দূর করার জন্য তিনি নানাভাবে চিন্তা করেন।
চিন্তার এক পর্যায়ে তিনি লোকায়ত পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর বাড়ির পাশে অন্যের সাড়ে তিন বিঘা জমি ১০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি লিজ নিয়ে শুরু করেন তার লোকায়ত কৃষি চর্চা। ওই জমির এক বিঘায় তিনি টমেটো চাষ করেন এবং সাথি ফসল হিসাবে লাল ও সাদা শাক চাষ করেন। অন্যদিকে জমির ১৫ শতক জায়গায় মশুর ডাল এবং ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন। বছর শেষে তাঁর উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ আসে প্রায় হয় ৬০ হাজার টাকার মতো। তিনি আশাবাদী হলেন এবং পুরোদমে কৃষির ওপর নিজেকে মনোনিবেশ করলেন।
লোকায়ত এই কৃষি চর্চা করে আস্তে আস্তে তাঁর সংসারে অভাব ও অনটন দূর হলো। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এভাবে কৃষিকাজ থেকে যা আয় হয় তা ধীরে ধীরে সঞ্চয় করে তিনি বাড়ি করার জন্য ১৫ শতক এবং একবিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেন।
এ বছরও তিনি দেড় বিঘা জমিতে টমেটো এবং সাথি ফসল হিসেবে লাল ও সাদ শাক ও ১৫ শতক জমিতে মশুর ডাল ও দেড় বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেন। এবারেও আশা অনুরূপ ফলন আশা করছেন তিনি। এখানে উল্লেখ করা যে, তিনি লোকায়ত কৃষি চর্চা করেন বিধায় কৃষিজমিতে বাইরের কোন উপাদান ব্যবহার করেন না। তিনি নিজে সার ও জৈব বালাইনাশক তৈরি করে জমিতে প্রয়োগ করেন।
তিনি চিন্তা করেন উচু বরেন্দ্র এলাকার লাল ও সাদা উরবর্তাহীন জমিকে কিভাবে উন্নয়ন করা যেতে পারে! এই চিন্তা থেকে তিনি এবছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে গোবরের ঘুটা জৈব্ সার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। তিনি জানান, শুকনো ঘুটা জমিতে প্রয়োগ করলে জমির মান ভালো থাকে এবং ফসলও ভালো হয়।