তানোরে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী থেকে উত্তম কুমার

বারসিক’র উদ্যোগে গতকাল ১৭ জুলাই ‘কৃষিজমি সুরক্ষায় ও ভূমির সঠিক ব্যবহার বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তানোরে বারসিক’র সম্মেলন কক্ষে।

উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার অমৃত কুমার সরকার কমিউনিটি ফেসিলেটর রিনা টুডু, গোকুল মথুরা স্বপ্নচারী যুব সংগঠনের সভাপতি রুবেল হোসেন মিন্টু, মোহ স্বপ্ন আশার আলো সংগঠনের সভাপতি আলমগীর হোসেন ও সদস্য, পিরন পুকুর লাহা চলা কিশোরী সংগঠনের সভাপতি তৃষা হাজদা, নতুন পথে এগিয়ে যাওয়া কিশোরী সংগঠন সভাপতি মনিকা টুডু। এছাড়া এলাকার কৃষকেরাও এই সভায় অংশহগ্রহণ করেন।

সভায় রুবেল হোসেন মিন্টু (৩৮) বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ১৫/২০ বছর আগে আমরা দেখেছি বরেন্দ্র অঞ্চলের জমির প্যাটার্ন ছিল ঠিক সিঁড়ির মত উঁচু নিচু। এখানে ফসলের অনেক বৈচিত্র্য ছিল। নানা ফসল হতো। জমির প্যাটার্নটা অনেকটা সমতল করার ফলে একমুখী ফসল বেশি হচ্ছে। ফলে ভূপৃষ্ঠের পানি উত্তোলনটাও বেশি হচ্ছে। তাই দিনে দিনে পানির স্তর আরও নীচে নেমেছে।’

আলমগীর হোসেন (৩৪) বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে আবাসনের সঠিক আইন বাস্তবায়ন করা দরকার ।কারণ বসতবাড়ি করতে গেলেই সকলের রাস্তার ধারে বসতবাড়ি করছে। ফলে দেখা যাচ্ছে ডুবা ,খারি , লালা ভরাট করে বসতবাড়ি তৈরি হচ্ছে। তখন পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে সেই পানিটি আবাদি জমিতেই থেকে যাচ্ছে ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে। কৃষিজমি সুরক্ষায় আমাদের সকলের মনোভাব পরিবর্তনের দরকার।’

মনিকা টুডু (৩৭) বলেন, ‘আমরা দেখেছি বরেন্দ্র অঞ্চলে ফসল উৎপাদন হতো প্রথমে বৃষ্টির পানি থেকে। বৃষ্টির পানি যখন শেষ তখন পুকুরের পানি ব্যবহার হতো। এখন দেখা যাচ্ছে, পুকুর যত আছে সব সরকারিভাবে লিজ দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেই পুকুর থেকে কেউ আর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। তাই খাস পুকুর অবশ্যই কৃষকদের আওতায় থাকতে হবে।’

সভায় বেশ কয়েকটি সুপারিশ উঠে আসে যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো: কৃষিজমি সুরক্ষায় ২০১৫ এর আইন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, পরিত্যক্ত জমি ফসলের আওতায় আনতে হবে, বরেন্দ্র এলাকায় জমির প্যাটার্ন অনুযায়ী আইন বাস্তবায়ন করতে হবে, আবাদি জমিতে আবাসন করা যাবে না, আবাসন নির্মাণের সঠিক আইন বাস্তবায়ন করা দরকার, পানি নিস্কাশনের রাস্তা ভরাট করে বাড়ি করা যাবে না, এবং খাস পুকুর কৃষকদের আওতায় রাখতে হবে প্রভৃতি।

happy wheels 2

Comments