নেত্রকোনায় যুব সংগঠনের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ
নেত্রকোনা থেকে রুখসানা রুমি
নোয়াদিয়া একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে শপথ গ্রহণ করে। শপথের অংশ হিসেবে তারা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেও মধ্যে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেয়। ‘ধান, শালিক, নদী ও হাওর’ নামে যুব সংগঠনের ব্যানারে তারা এই উদ্যোগ নেয়।
নেত্রকোনা জেলার নোয়াদিয়া গ্রামসহ আশেপাশে গ্রামে প্রায় বাল্য বিবাহ সংঘটিত হয়। সম্প্রতি বর্গা গ্রামের ভক্ত দেবনাথ এর মেয়ে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তার বাবা তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর উদ্যোগ নেওয়ার খবর জানার পর নোয়াদিয়া ধান, শালিক, নদী ও হাওর যুব সংগঠনের সদস্যরা ছুটে যায় চম্পা রানীর বাড়িতে। তারা চম্পা রানীর পিতাকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে নানাভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে। সংগঠনের সদস্যরা এক পর্যায়ে নোয়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. কাদেরকে এ খবর দেয়। এরপর ওই প্রধান শিক্ষকসহ যুব সংগঠনের সদসরা চম্পা রানীর বাবা ভক্ত দেবণাথকে বাল্যবিবাহের কুফল বিষয়ে জানান এবং এর আইনি বিষয়ে তাকে অবগত করেন। বিষয়টি অনুধাবন করে চম্পা রানীর পিতা ভক্ত দেবনাথ মেয়েকে বাল্যবিবাহ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এভাবে বাল্য বিবাহের মতো একটি অভিশাপ থেকে বেঁচে যায় একটি শিশু। শুরু করে একটি নতুন জীবন। এই প্রসঙ্গে চম্পা রানী বলেন, “আমি পড়াশুনা করতে চাই, আমি শিশু, আমি একটি নতুন শিশুর জন্ম কেমনে দেব?”
নেত্রকোনা জেলায় কেন্দুয়া উপজেলায় নোয়াদিয়া গ্রামের যুব সংগঠনের এই যুবকরা এলাকার সংস্কৃতিকে, দেশকে জানা, নেত্রকোনা জেলাসহ নানান ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে তাদের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে। এছাড়া তারা সামাজিক অসমতাগুলো দূর করার জন্য, দেশপ্রেমে উদ্বূদ্ধ করার জন্য এবং যুবকদেরকে মাদকমুক্ত রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যুব সংগঠনটি নোয়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে মিলে নির্মল সাংস্কৃতিক চর্চার অংশ হিসেবে সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রকৃতিকে জানা, দেয়ালিকা তৈরি, শতবর্ষী গাছ চিহ্নিত করা ও গাছে পাখি রক্ষার জন্য কলসী রাধা সংরক্ষণ করা, মাসিক হাসির প্রতিযোগিতা করা, এলাকার বয়স্কদের শিক্ষা দানের জন্য বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা, কবিরাজ বাড়ির কবিরাজকে সহযোগিতা করা,বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করাসহ অন্যান্য কাজ করে যাচ্ছে।