হরিজন পাড়ার শিশুরাও পড়বে, আঁকবে, খেলবে
আটপাড়া, নেত্রকোনা থেকে সোয়েল রানা
শুরু হলো হরিজন পাড়ায় শিশুবিকাশ কেন্দ্র-৪। আমাদের সমাজ খুবই বৈচিত্র্যময় সমাজ। এখানে ধর্ম, বর্ণ, পেশা, শিক্ষাসহ সকলক্ষেত্রেই রয়েছে নানান ধরণের মানুষ। হরিজন সম্প্রদায় এমনই এক সম্প্রদায়- যাদের নেই শিক্ষার সুযোগ। আর সমাজের চোখেও তারা অবহেলিত। এমন সংস্কৃতি নিয়ে কোন সমাজ কখনও গড়ে ওঠেনি আর টিকেও থাকেনি। এই সমাজটি সকল পেশার মানুষের সমন্বয়ে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে টিকে আছে। সকল মানুষের শ্রম, ঘাম, জ্ঞান অভিজ্ঞতা আর সহযোগিতার সম্পর্কের কারণেই টিকে আছে আমাদের এই পৃথিবী। নেত্রকোনার আটপাড়ায় হরিজন পাড়ায় গড়ে উঠেছে শিশুবিকাশ কেন্দ্র; যা গ্রামের মানুষকেও আশাবাদি করছে এগিয়ে যেতে।
গত তিনবছর আগে পিছিয়ে পড়া আটপাড়া উপজেলার বাখরপুর গ্রামের পালপাড়ার শিশুদের শিক্ষার মানউন্নয়ন ও সৃজনশীলতা তৈরির জন্য রিকু রাণী পাল শিশুদের জন্য গড়ে তোলেন শিশুবিকাশ কেন্দ্র। স্কুলের পড়ার পাশাপাশি এই শিশুবিকাশ কেন্দ্রে শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা, সৃজনশীলতা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবেশ ভাবনা, নিজেকে জানা ইত্যাদি বিষয়েও তাদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করা হয়। পিছিয়ে পড়া এই শিশুদের অগ্রযাত্রা ও মান উন্নয়ন দেখে বারসিক এর কর্মএলাকা কলমাকান্দার নরসিংপুরের হাওরের বিচ্ছিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে আরেকটি শিশুবিকাশ কেন্দ্র। নেত্রকোনার ঋষিপাড়ার শিশুদের জন্যও একটি কেন্দ্র গড়ে তোলেন উদ্যোগী নারী দূর্গা রানী। এদিকে আটপাড়া উপজেলার হরিজন পাড়ার পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য বারসিক এর উদ্যোগে ৩৩ জন শিশুকে নিয়ে হরিজন পাড়ায় গড়ে তোলা হয় আরেকটি শিশু বিকাশ কেন্দ্র।
আটপাড়া শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি এই কাজে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করে চলেছে। বহুত্ববাদী সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সকল পেশার মানুষের পাশাপাশি হরিজনদেরকেও আমাদের সমাজে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হবে। আর তাই আটপাড়ার ঋষিপাড়ার শিশুরা এখন শিক্ষার পাশাপাশি, খেলবে, আঁকবে আর নিজেদের গড়ে তুলবে।