ইচ্ছে ছিলো নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে সাবলম্বী হওয়ার
মানিকগঞ্জ থেকে এম.আর.লিটন
খুব ছোট বেলা থেকে ইচ্ছে ছিলো নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে সাবলম্ব হওয়ার । যার ফলে কলেজ জীবনে পা রাখতেই শুরু করেন নিজ উদ্যোগে ছোটখাটো এক ব্যবস্যা । লেখাপড়ার পাশা পাশি ব্যবস্যা আরও সম্প্রসারণ করেন গড়ে তুলেন ‘দূর্জয় টেলিকম’। বলছিলাম একজন উদ্যোক্তা ও আত্মপ্রত্যয়ী যুবক মো. আনোয়ার হোসেন দূর্জয় এর কথা ।
ঘিওর উপজেলার বাইলজুরী গ্রামের এক প্রান্তিক কৃষক পরিবারের সন্তান মো. আনোয়ার হোসেন দূর্জয় । পিতা মৃত্যু জয়নুউদ্দিন । দুই ভাই, চার বোনের সবার ছোট আনোয়ার হোসেন । হাইস্কুল পড়ার সময় থেকে তিনি ছাত্র হিসেবে অনেক মেধাবী ছিলেন। তেরশ্রী কে. এন. ইনস্টিটিউশন হাই স্কুলে বিজ্ঞান শাখা থেকে তিনি-২০১২ সালে এসএসসি পাশ করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অর্ন্তভুক্ত মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স ৪র্থ বর্ষে অধ্যায়নত । নি¤œ মধ্যবৃত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে খুব ছোট বেলা থেকে অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন পরিচালনা করেন তিনি। এক সময় তার ৪ বোনের বিয়ে হয়ে যায়, বড় ভাই বিয়ে করে মা-বাবাকে রেখে আলাদা সংসার শুরু করেন। তখন আনোয়ার অনেক কষ্টে তার বৃদ্ধ পিতা ও মা কে নিয়ে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে।
আনোয়ার যখন ঘিওর সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়, তখন কলেজের পাশে নিজ উদ্যোগে একটি ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ এজেন্টের দোকান দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে দোকান সম্প্রসারণ করেন, দোকানের নামকরণ করেন ‘দূর্জয় টেলিকম’। এর মধ্যে তিনি ২০১৪ সালে এইচএসসি পাশ করে। জাতীয় বিশ^বিদ্যারয় অর্ন্তভুক্ত মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স পড়ার সুযোগ হয়। তার ব্যবস্যার পাশাপাশি লেখাপড়া অব্যাহত থাকে । এরপর তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (দোকান) ‘দূর্জয় টেলিকম’ স্থানান্তর করে ঘিওর পঞ্চরাস্তায় স্থাপন করে।
আনোয়ার হোসেন বারসিক নিউজকে বলেন, ‘মানুষ ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারে, যদি অনেক মনবল থাকে। আমার ছোট বেলা থেকে ইচ্ছে ছিলো নিজে কিছু একটা করবো। সেই ইচ্ছাশক্তি থেকেই আমার এ দোকান (ব্যবস্যা) ।’
তিনি আরও বলেন, “আমি প্রথমে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করি। একখন আমি দোকানে কম্পিউটার এনেছি এবং ব্যবস্যার জন্য মটর সাইকেল কিনেছি। আমার আরও পরিকল্পনা আছে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না করে দোকাটা আরও বড় করবো।”
এই কারণেই আনোয়ার এলাকায় এখন আত্মপ্রত্যয়ী যুবক হিসেবে পরিচিত। আনোয়ার এই উদ্যোগ দেখে এলাকার অনেক বেকার তরুণ-যুবকেরা শুধু চাকরির পিছে না ঘুরে আত্মকর্মসংস্থান করতে উদ্যোগী হচ্ছে ।