হোসনে আরার গল্প
কলমাকান্দা, নেত্রকোনা থেকে মুন্না রংদী
কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের বাস করেন হোসনে আরা। বয়স ৩১ বছর। ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। নিজস্ব জমি বলতে আছে ৪৫ শতাংশ জমি। এখানে সারাবছরই বিভিন্ন ধরণের শাকসব্জি চাষ করেন। তাঁর স্বামী কৃষি ছাড়াও দিনমজুর হিসেবেও কাজ করেন। তবে স্বামীর একার রোজগারের টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালানোটা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এমন সময় হোসনে আরা সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি বাঁশ বেতের কাজ করবেন। এভাবেই তাঁর একান্ত আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় তিনি শিখে ফেলেন বাঁশ বেতের কাজ। তিনি চালুন, ডালা, পাটি, খাচা, পাখা ও কোলা তৈরি করতে পারেন এখন। তবে যেহেতু এসব জিনিসপত্র চাহিদা মৌসুমভিত্তিক হয়ে থাকে সেহেতু তিনি মৌসুম বুঝে এসব কাজ করেন। এভাবে বাঁশ বেতের কাজে তিনি বাড়তি আয় করতে পারেন এবং স্বামীকে সহায়তা করতে পারেন। বাঁশ বেতের কাজ করে যে টাকা উপার্জন করছেন তা দিয়ে তিনি তার সংসারের কাজে লাগাচ্ছেন। সারাবছরই তিনি এসব কাজ করে থাকেন তবে। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে কাজ চাপ বেশি থাকে।
হোসনে আরা বলেন, ‘২০১২ সালে আমি বারসিক থেকে কিছু সহযোগিতা পাই, যা আমার এ কাজ করার ক্ষেত্রে আরো বেশি উৎসাহ উদ্দিপনা তৈরি করে। আমার তৈরীকৃত এসব জিনিসপত্র বাড়িতে থেকেই বিক্রি করতে পারি। বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। শুধুমাত্র নিজের গ্রাম নয়; আশপাশের গ্রাম থেকেও অনেক ক্রেতা আসেন আমার বাড়িতে এসব পণ্য ক্রয় করার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে আমার এসব কাজ দেখে শিখতে চান। যারা শিখতে চায় তাদেরকে আমি এসব কাজ শিখিয়ে দিই। তাদের মধ্যে ২ জন আছেন যারা এখন বাঁশ বেতের কাজ করছেন।’
হোসনে আরা বলেন, ‘কোন কাজকে অবহেলা করা উচিৎ না। বরং যে কোন কাজ উৎসাহের সাথে শেখা ও করা উচিৎ। আমার যদি এ কাজটি না শিখতাম তবে আজ আমাকে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করতে হতো।’