কৃষি মেলায় জনসাধারণের নজর কেড়েছে বারসিক’র স্টল

সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান

সিংগাইর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষি মেলা ২০২৩ এ জন সাধারণের নজর কেড়েছে বারসিক’র স্টল। গত ১১ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই তিন দিন সিংগাইর উপজেলা চত্বরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় উদ্বোধন করেন সিংগাইর উপজেলা চেয়াম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান।


মেলায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ, সিংগাইর পৌরসভার মেয়র আবু নাঈম মো: বাশার, উপজেলা কৃষি অফিসার মো: হাবিুলবাশার চৌধুরি। মেলায় মূলত সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মএলকার ১১টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় পরিচালিত কন্দাল ফসল পরিচিতি, পুষ্টিগুণ ও অর্থতৈকিভাবে কৃষকের সমৃদ্ধি অর্জনে কন্দাল ফসলের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।


উপজেলা কৃষি অফিসের আমন্ত্রণে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্ঠান বারসিক তার কর্মএলাকায় পরিচালিত কৃষকের উদ্যোগ তুলে ধরতে কৃষক গবেষক ইব্রাহিম মিয়ার পরিচালনায় কৃষি মেলায় অংশগ্রহণ করে। বারসিক কৃষি প্রতিবেশ বিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষকের নিজস্ব রীতি ও চর্চাসমৃদ্ধ স্থানীয় জাতের ধান, সবজি, মশলা, স্থানীয় জাতের ফল বৈচিত্র্য, ওষুধি গাছ জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক উপস্থাপন করে। বিভিন্ন ধান বীজ বৈচিত্র্যতার মধ্যে ছিল ওয়ারেজ, জুনটি, মকবুল, বাশমতি (পাকিস্তানি), সোনালী পাইজাম, টিয়া, রয়েল, যুবরাজ, কালামানিক, এম-২৫২, সুশীল, এলভি ও স্বর্ণলতা চালকুমড়া, ধুন্দূল, চিচিংগা, ডাটা, বেগুন, লালশাক, মরিচ, ডেরস, পেঁপে, টমেটো, পুইশাক, পালংশাক, সীম, ঝিংগা। কুশম ফূল ঝষ্ট মধু মুশরী, ডাবরি, ধনীয়া, মিষ্টি সোয়াজ, ছোট সোয়াজ, ফিরিংগী, শোলক, কালিজিরা। এছাড়া দেশীয় ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, সফেদা, পেঁয়ারা, নারিকেল, করমচা, লটকন ।


অন্যদিকে বারসিক কর্তক বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা ও কৃষকের উদ্যোগ বাস্তাবায়ন সম্বলিত বিভিন্ন ধরনের ব্যানার প্রদর্শিত হয় মেলায়। বারসিক স্টলে প্রতিদিনই সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের উপস্থিতিও ছিলো চোখে পড়ার মত। মেলায় আগত চকপালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বারসিক স্টল আমার খুব ভালো লেগেছে। বিভিন্ন প্রকার বীজ দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। যে সকল বীজ বিলুপ্তির পথে তা দেখে আমি অবাক হয়েছি। কেননা আউশ আমনসহ কিছু ধানের বীজ এখন আর পাওয়া যায় না। কিন্তু বারসিক কৃষকদের মাধ্যমে এই বীজ গুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করছে, যা আমাকে আনন্দিত করেছে। এখানে অনেক ধরনের বীজ রয়েছে যা বিলুপ্তির পথে।’


এছাড়াও মেলার সমপনি দিনে বারসিক স্টল পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর মানিকগঞ্জের উপ-পরিচালক, কৃষিবিদ আবু এনায়েত উল্লাহ। তিনি স্থানীয় জ্ঞান ও প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর কৃষি চর্চায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে বারসিককে ধন্যবাদ জানান। জনগোষ্ঠী পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কৃষিতে অবদান রাখায় বারসিককে বিশেষ সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র প্রদান করেন সিংগাইর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সম্মানিত উপ-পরিচালকের নিকট থেকে এই সম্মনা গ্রহণ করেন সম্মানিত কৃষক ইব্রাহিম মিয়া।

happy wheels 2

Comments