একজন ফুলকন্যা দীপা
মানিকগঞ্জ থেকে আছিয়া আক্তার
প্রতিটি মানুষই ফুল ভালোবাসেন। সকল মানুষেরই ফুলের প্রতি আলাদা একটা টান রয়েছে। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ফুল দেখলে তার দিকে তাকিয়ে থাকা এ যেন যুগ যুগ ধরে প্রতিটি মানুষের জন্মগত স্বভাব। ফুল ভালোবাসে সবাই, কিন্তু ফুল গাছ লাগালেই তো আর ফুল ধরে না। এতে পরিচর্যা করতে হয়; দিতে হয় পানি ও নিরানি, পরিষ্কার করতে হয় আগাছা । তারপর বড় হয়, ফুল ফোটে। সুন্দর করে বাড়ি, সুন্দর করে বাগান, সুশোভিত হয় আমাদের চারপাশ ও পরিবেশ।
এমনই এক ফুল প্রেমী ফুল কন্যা দীপা। যেমন রূপ তেমন গুণ! রূপ আর গুণের সাথে মিলিয়েই অনেক গুণে গুনান্বিত সে। মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের বাইমাইল ঋষিপাড়া গ্রামের মেয়ে দিপা। দিপা বাইমাইল কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। দীপার বয়স ১৪ বছর । তার বাবার নাম মুকন্দ মনি দাস (৫০) আর মায়ের নাম স্বর্ণ মনি দাস (৪৮)। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে দীপা সবার ছোট। তার বাবা ও মা বাঁশ বেতের কাজ কাজ করেন। দীপাও মা ও বাবার কাজে সাহায্য করে।
আনন্দ ও শখের বসেই সে লেখাপড়ার পাশাপাশি এই কাজ করে। এই মুহুর্তে তার কোন বাণিজ্যিক চিন্তা নেই। দেখা যায় যে, দেশের জাতীয় দিবসগুলোতে তার ফুলের কদর বাড়ে। তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীরা বাগান থেকে ফুল নিয়ে পুষ্পমাল্য তৈরি করে। একুশের প্রভাত ফেরিতে তার ফুল ছাড়া তো হয়ইনা! এছাড়াও বিভিন্ন পূজার সময় তার কাছেই ফুল নিতে আসে তার প্রতিবেশীরা। এই কাজে সে বিরক্ত হয় না; বরং আনন্দ পায়। দীপা বলেন, ‘আমার মত সবাই বাড়িতে ফুল গাছ রোপণ করলে বাড়ির সৌন্দর্য্য বাড়বে, পাখির কলকাকলি বাড়বে, মৌমাছির আনাগোনা বাড়বে। আমি বিশ্বাস করি পরিবেশ সুন্দর ও প্রকৃতিতে সুন্দর নির্মল বাতাস থাকলে আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকতে পারি।’
দীপা রান্না বান্নার কাজেও খুবই পারর্দশী। সে মাঝে মাঝে চমৎকার রান্না করে যা খেয়ে সবাই অবাক হয়ে যায়। দিপার মা বলেন, ‘দিপা ছোট বেলা থেকেই ফুল খুব পছন্দ করে। ফুল দেখলেই তার দিকে তাকিয়ে থাকে; তার কাছে যায়। দিপার যখন ৫ বছর তখন থেকেই দিপা ফুল গাছ লাগায়, তাতে পানি দেয়, আগ্ছাা পরিষ্কার করে। সারাবছর সে আঙ্গিনায় নানা প্রকার ফুল গাছ রোপণ করে।তার ফুল বাগানে রয়েছে দূর্বা ফুল, গাদা ফুল, নীল কন্ঠ ফুল, জবা ফুল ইত্যাদি।